আঁশযুক্ত খাবার কেন খাবেন?
সুস্থতার জন্য ফাইবার বা আঁশ খুবই জরুরি। এটি যেমন কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে, তেমনি হজমের সমস্যা থেকেও দূরে রাখে। কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে খাদ্য তালিকায় নিয়মিত আঁশ সমৃদ্ধ খাবার রাখার বিকল্প নেই।
জেনে নিন কোন কোন খাবার খাদ্য তালিকায় রাখলে মিটবে ফাইবারের ঘাটতি।
.আঁশসমৃদ্ধ খাবারের তালিকা শাক- কচুশাক, মিষ্টি আলুর শাক, কলমি শাক, পুদিনা পাতা, পুঁইশাক, মুলা শাক, ডাঁটা শাক, লাউ ও মিষ্টি কুমড়ার আগা-ডোগা শাকে প্রচুর আঁশ রয়েছে। সবজি- অপেক্ষাকৃত বেশি আঁশযুক্ত সবজির মধ্যে রয়েছে সাজনা, কলার মোচা, ঢেঁড়স, ডাঁটা, বাঁধাকপি, ফুলকপি, ওলকপি, গাজর, শিম, পটল, কচু, বেগুন, বরবটি ও মটরশুঁটি।
.আঁশজাতীয় ফলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আঁশ অংশ থাকে বেল, পেয়ারা, কদবেল, আমড়া, আতাফল, নারকেল, কালোজামের মধ্যে। এছাড়াও গাব, কামরাঙ্গা, পাকা টমেটো, পাকা আম, পাকা কাঁঠাল, আপেল ও আমলকীর মধ্যে মাঝারি পরিমাণে আঁশ থাকে।
.মটর, মুগ, ছোলা ও খেসারি ডালের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আঁশ পাওয়া যায়। যব, ভুট্টা, আটা, তিল, কাঁচামরিচ ও সরিষাতেও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে আঁশ বিদ্যমান।
আঁশজাতীয় খাবার কেন খাবেন?
. খাবারের আঁশ পরিপাকনালী থেকে আমাদের খাবারের কোলেস্টেরল শোষণে বাধা দেয়, এর ফলে রক্তে কোলেস্টেরলসহ চর্বির মাত্রা স্বাভাবিক থাকে। ফলে হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তনালীর রোগ বা অ্যাথেরোসক্লেরোসিস হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়। খাদ্য গ্রহণের পর আমাদের রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা যাতে হঠাৎ করে বেড়ে যেতে না পারে সে ব্যাপারে আঁশজাতীয় অংশ গুরুত্ব বহন করে। এতে ডায়াবেটিস রোগের ঝুঁকি কমে। ডায়াবেটিস রোগীদের অনেক সময় রক্তে চর্বির পরিমাণ বেশি থাকে, সেক্ষেত্রে আঁশজাতীয় খাবার সেটির নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। যারা বেশি আঁশজাতীয় খাবার খেয়ে থাকেন তাদের পিত্তথলির রোগ ও লিভারের রোগও কম হয়।
. অনেক দিন ধরে কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগলে এর প্রভাব মনের ওপর পড়তে পারে। এতে কাজে-কর্মে মনোসংযোগ সুষ্ঠু হয় না, অশান্তি, উদ্বিগ্নতা, কোনো কঠিন রোগ হয়েছে এমন ধারণা মনে চেপে বসে।
. অশান্তি, উদ্বিগ্নতাকে দূর করতে বাদাম খেতে পারেন প্রতিদিন। ৯৫ গ্রাম বাদামে থাকে ১১.৬ গ্রাম ফাইবার। আঁশ ছাড়াও ম্যাগনেসিয়াম ও ভিটামিন ই পাওয়া যায় বাদাম থেকে।
. ২৮ গ্রাম শুকনা নারকেলে থাকে ৪.৬ গ্রাম আঁশ। এছাড়া ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের উৎস এটি।
. খেজুর খেতে পারেন প্রতিদিন। প্রতি ২৪ গ্রাম খেজুরে থাকে ১.৬ গ্রাম ফাইবার বা আঁশ। ওটস খেতে পারেন প্রতিদিন সকালের নাস্তায়। এতেও প্রচুর পরিমাণে আঁশ থাকে।
কিভাবে বাড়াবেন আঁশ খাওয়া
. ফলের রস পান না করে গোটা ফল খেয়ে নিন।
. সাদা চাল, ময়দার রুটির পরিবর্তে আটা, লালচাল, গোটা খাদ্যশস্য গ্রহণ করুন।
. চিপস, ক্যাকারস, চকোলেট বার দিয়ে নাস্তা না করে কাচা সবজি খান।
. মাংসের বদলে মাছ, সোয়াবিন খাবেন মরিচ সুপ করে সপ্তাহে ৩-৪ দিন।
. ঘরে রান্না দেশি খাবার ভালো, বাইরের খাবেন যত কম পারেন।
সূত্র: স্টাইল ক্রেজ
মন্তব্য করুন