ঢাকাশুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

হ্যান্ড স্যানিটাইজার কখন ব্যবহার করবেন, কখন করবেন না

লাইফস্টাইল ডেস্ক, আরটিভি অনলাইন

বৃহস্পতিবার, ২৮ মে ২০২০ , ০৯:০৬ এএম


loading/img
হ্যান্ড স্যানিটাইজার

কোভিড-19 করোনাভাইরাস সংক্রমণের ভয়ে প্রায় সবাই ঘন ঘন হাত ধোয়া এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজারে অভ্যস্ত। যদিও হাতের জীবাণু দূর করতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বেশ কার্যকরী, তবে এর অতিরিক্ত ব্যবহার ক্ষতির কারণ হতে পারে।

বিজ্ঞাপন

অতিরিক্ত হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করলে তা ভালো ব্যাকটেরিয়াগুলোকে মেরে ফেলতে পারে যা আমাদের ত্বক এবং শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

আমাদের সুস্থ রাখতে ভালো মাইক্রোবায়োমগুলো প্রধান ভূমিকা পালন করে। হ্যান্ড স্যানিটাইজার প্রচুর মাইক্রোবায়োমকে মেরে ফেলে। যদিও হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ক্ষেত্রে কতখানি হলে তাকে অতিরিক্ত বলা যাবে তা নির্ধারণ করা কঠিন, এটি হিসাব করা যাবে যখন আপনি হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার এড়াতে পারবেন।

বিজ্ঞাপন

ভালো করতে গিয়ে যেন খারাপ না হয় সেজন্য হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারের আগে জেনে নিন কখন হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করবেন, কখন করবেন না।  
 
যদি পর্যাপ্ত সাবান ও পানির ব্যবস্থা থাকে, তাহলে জীবাণুমুক্ত হওয়ার জন্য হ্যান্ড স্যানিটাইজারের প্রয়োজন নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ছাড়াও আমেরিকার সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে জীবাণু বা করোনার মতো ভাইরাসমুক্ত হতে ভালোভাবে হাত ধোয়াই যথেষ্ট।  

হাতে যদি দৃশ্যমান ময়লা থাকে তাহলে হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধোয়া বোকামি। কারণ তাতে ময়লা দূর হয় না। হাতে ময়লা থাকলে সাবান পানি দিয়ে হাত ধুতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

সিডিসি (সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন) জানিয়েছে, হাতে যদি কীটনাশক অথবা ভারী কোনও ধাতু লেগে থাকে, তাহলে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারে কোনও লাভ নেই।

বিজ্ঞাপন

কেউ যদি আপনার পাশে হাঁচি দেয়, তাহলে জীবাণুমুক্ত হতে স্যানিটাইজার ব্যবহারের প্রয়োজন নেই। কারণ হাঁচির সাথে ভাইরাসসহ ড্রপলেট নাক দিয়ে শরীরে প্রবেশ করতে পারে।

হয়তো কোনও কিছুই স্পর্শ করেননি। এরপরও স্যানিটাইজার ব্যবহার করছেন। এটা অনেকের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। গবেষকরা বলছেন, এতে করে উল্টো কিছু ব্যাকটেরিয়া স্যানিটাইজার সহনীয় হয়ে ক্ষতির কারণ হতে পারে।
অনেকেই রাস্তায় হাঁটা অবস্থায় বা কোথাও বসে থাকা অবস্থায় স্যানিটাইজার ব্যবহার করেন। গবেষকরা বলছেন, যখন কোনও কিছু খেতে হবে বাইরে, সে সময় পানি না থাকলে স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন।

হয়তো পাঁচ মিনিট আগেই হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করেছেন। এরপরও অতি সতর্কতার কারণে ঘন ঘন ব্যবহার করলে আপনার ত্বকে শুষ্ক হয়ে ওঠার আশংকা আছে বলে জানিয়েছেন ডাক্তাররা। সিডিসি সুপারিশ করেছে বারবার স্যানিটাইজার ব্যবহার না করে কোনও কিছু ধরার পর একবারই ২০ সেকেন্ড সময় নিয়ে দুই হাত ভালোভাবে স্যানিটাইজার দিয়ে ঘষে নিতে।

রান্না করার আগে ও পরে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া উচিৎ, এক্ষেত্রে স্যানিটাইজার দরকার নেই। কাঁচা মাংস ও মাছ ধরলে হাত তৈলাক্ত হয়ে পড়ে, তখন স্যানিটাইজার ব্যবহার কোনও কাজে দেয় না, এমনটা জানিয়েছে  সিডিসি।

বাসায় যদি কারোর বমি-ডায়রিয়া হয় বা কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন, তখন হ্যান্ড স্যানিটাইজারের চেয়ে সাবান পানি দিয়ে হাত ধোয়াই নিরাপদ থাকার সবচেয়ে ভালো উপায়, বলছেন ডাক্তাররা।

শিশুদের ক্ষেত্রে স্যানিটাইজার খুব একটা ক্ষতিকর না। তবে অতিরিক্ত ব্যবহার করা শিশুর জন্য ক্ষতির কারণ জানিয়েছে সিডিসি। ইউ এস পয়জন কন্ট্রোল সেন্টারসের তথ্য মতে, ২০১১ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত তাদের কাছে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের কারণে শিশুর দেহে বিষক্রিয়ার ৮৫ হাজার কল এসেছিলো। তাই শিশুর নাগালের বাইরে রাখা উচিত হ্যান্ড স্যানিটাইজার।

হয়তো ঠাণ্ডা বা অন্য কোনও সাধারণ অসুখে ভুগছেন আপনি। এরপরও বাইরে বের হওয়ার সময় হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করলেই নিজে নিরাপদ থাকবেন সে ধারণা ঠিক না। একই সাথে আপনার জন্য অন্যরাও যাতে ফ্লুতে আক্রান্ত হতে না পারে, সে চিন্তা করে ঘরেই থাকা উচিৎ সবার।

জীবাণুযুক্ত কোনও এলাকা থেকে এসে সাবান পানি দিয়ে হাত ধোয়াই নিরাপদ থাকার সবচেয়ে ভালো উপায়। আর যদি মাত্রই হাত ধুয়ে বের হন, তাহলে এরপর আর স্যানিটাইজার ব্যবহার করার প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছে সিডিসি।

সূত্র: হেলদি ডট কম

এস

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |