আনান কেমিকেলের পরিচালক প্রিতিশ কুমার হালদারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্রিতিশ প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় ভারতের কারাগারে আটক প্রশান্ত কুমার হালদারের (পিকে হালদার) আত্মীয় ও ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত।
কমিশনের উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) বিকেলে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ মামলাটি করেন। দুদক সংশ্লিষ্ট এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার বর্ণনায় জানা যায়, জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ চার কোটি ৮৪ লাখ ১৭ হাজার টাকার সম্পদ অর্জন করেন এবং অবৈধ সম্পদ নিজ ভোগ দখলে রাখেন। এছাড়া নির্ধারিত সময়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে তার নামে জারি করা সম্পদ বিবরণী দাখিল করেননি।
বর্ণনায় আরো জানা যায়, তিনি দুদক আইনের ২০০৪ এর ২৬ (২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। অসৎ উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হওয়ার পরেও নির্দিষ্ট ছকে সম্পদ বিবরণী দুর্নীতি দমন কমিশনে জমা না দেওয়ায় তাকে অপরাধী হিসেব চিহ্নিত করা হয়। এছাড়া তার অর্জিত সম্পদ যা জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসামঞ্জস্য যা রেকর্ডপত্রে প্রমাণিত হয়েছে।
গত ১৪ মে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার অশোক নগরের একটি বাড়ি থেকে ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) এর একটি দল পি কে হালদার ও তার পাঁচ সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে। ইতোমধ্যে সংস্থাটি পিকে হালদার ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে মোট ৪৪টি মামলা করেছে। এছাড়া পিকে হালদার সংশ্লিষ্ট অন্তত ১৫ জনকে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বিভিন্ন হিসাবে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের কথা বলা হলেও দুদকের কাছে দেওয়া বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের তথ্য থেকে জানা যায়, চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশান্ত কুমার হালদার সরিয়েছেন ১০ হাজার ২০০ কোটি টাকা।
বিএফইইউর তথ্যমতে, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড থেকে ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড থেকে ৩ হাজার কোটি টাকা, ফাস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড (এফএএস) থেকে ২ হাজার ২০০ কোটি টাকা এবং রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেড থেকে ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা সরান পি কে হালদার চক্র।