ঢাকাসোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২

‘নাইকোর কাজ পেতে মামুন-সেলিমের মধ্যে অর্থের লেনদেন হয়’

আরটিভি নিউজ

সোমবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৩ , ০২:৩৯ পিএম


loading/img
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিলেন কানাডির দুই পুলিশ সদস্য

কানাডার তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান কোম্পানি নাইকোর কাজ পেতে ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান সেলিম ভূঁইয়ার মধ্যে অর্থের লেনদেন হয় বলে আদালতকে জানিয়েছেন কানাডির দুই পুলিশ সদস্য।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (৩০ অক্টোবর) বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলায় সাক্ষ্য দিতে এসে এসব কথা বলেন কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশের সদস্য কেভিন ডুজ্ঞান ও লিয়ড স্কুইপ্প।

লিয়ড স্কুইপ্প বলেন, কানাডার তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান কোম্পানি নাইকোতে তৎকালীন সরকারের কিছু কর্মকর্তা দুর্নীতি করতে ইন্ধন জোগায়। আমরা এ দুর্নীতির বিষয়ে জানতে পারি গণমাধ্যমের নিউজ দেখে। নাইকোর কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার দায়ে নাইকো রিসোর্সেস কানাডায় দুর্নীতির দায়ে সাজপ্রাপ্তও হয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

এর আগে সোমবার বেলা ১১টার দিকে কেরানীগঞ্জ অস্থায়ী আদালতে যান কানাডিয়ান রয়েল পুলিশের দুই সদস্য কেভিন ডুজ্ঞান ও লিয়ড স্কুইপ্প। পরে সাড়ে ১১টার দিকে লয়েড শোয়েপের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান তার সাক্ষ্য নেন। এরপরে জেরা করেন আসামি পক্ষের আইনজীবীরা।

গত ২৮ অক্টোবর রাতে আলোচিত এ মামলায় সাক্ষ্য দিতে ঢাকায় আসেন তারা। রোববার অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও দুদকের প্রধান আইনজীবী খুরশীদ আলম খানের সঙ্গে বৈঠক করেন কানাডিয়ান রয়েল পুলিশের ওই দুই সদস্য।

এর আগে বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অবস্থিত ঢাকার ৯ নম্বর (অস্থায়ী) বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান আগামী ৩০ অক্টোবর তাদের আদালতে এসে তাদের সাক্ষ্য দিতে এ সময় জারি করেন। এদিন মামলার বাদী দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তৎকালীন সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলমকে জেরা করার দিন ধার্য ছিল। খালেদা জিয়ার পক্ষে তার আইনজীবী হাজিরা দাখিল করেন।

বিজ্ঞাপন

এরপর খালেদা জিয়াসহ অপর আসামির পক্ষে বাদীকে জেরা করেন তাদের আইনজীবীরা। জেরা শেষ হওয়ায় পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ৩০ অক্টোবর দিন ধার্য করেন আদালত।

বিজ্ঞাপন

গত ১৭ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়াসহ আটজনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) একজন এবং কানাডিয়ান রয়েল মাউন্টেড পুলিশের দুজনকে অনুমতি দেন আদালত। তারা হলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যরো অব ইনভেস্টিগেশনের অবসরপ্রাপ্ত সুপারভাইসরি স্পেশাল এজেন্ট ডেবরা লাপরিবট্ট গ্রিফিথ, কানাডা অ্যান্ড রয়েল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশের সদস্য মিস্টার কেভিন ডুজ্ঞান ও লিয়ড স্কুইপ্প।

খালেদা জিয়ার আইনজীবী জিয়া উদ্দিন জিয়া ও হান্নান ভুইয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বাকি আসামিরা হলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান সেলিম ভূঁইয়া ও নাইকোর দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।

এর মধ্যে এ কে এম মোশাররফ হোসেন ও ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান মারা যাওয়ায় মামলার দায় থেকে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর দুদকের তৎকালীন সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম তেজগাঁও থানায় খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠান নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে এ মামলা করা হয়।

এরপর ২০১৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এতে তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতিসাধনের অভিযোগ আনা হয়। ২০২৩ সালে ১৯ মার্চ কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অবস্থিত ঢাকার ৯ নম্বর (অস্থায়ী) বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান আসামিদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ গঠন করেন।

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন
Advertisement
Advertisement

Loading...


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |