ঢাকাবুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২

ভালো ও খারাপ কাজের ফল নিজেকেই ভোগ করতে হবে

আরটিভি অনলাইন ডেস্ক

বুধবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ , ০৩:১৬ পিএম


loading/img

পবিত্র কোরআনের সুরা জাসিয়ার ১৫ নাম্বার আয়াতে বলা হয়েছে, যে মানুষ নিজেই নিজের ক্ষতি করে এবং আর যদি ভালো কোনো কাজ করে তাহলে তা নিজের জন্যই কল্যাণকর। মহান আল্লাহ এ প্রসঙ্গে বলছেন:

বিজ্ঞাপন

‘যে সৎকাজ করছে, সে নিজের কল্যাণেই তা করছে, আর যে অসৎকাজ করছে, তা তার উপরই বর্তাবে। এরপর তোমাদেরকে নিজ পালনকর্তার দিকেই ফিরে আসতে হবে।’

পবিত্র কোরআনের নানা অংশে এই একই অর্থবোধক আয়াত দেখা যায়। এখানে আসলে সেইসব ব্যক্তির প্রশ্নের জবাব দেয়া হয়েছে যারা বলে যে আমাদের ইবাদতে আল্লাহর কি প্রয়োজন? এই আয়াতের বক্তব্য অনুযায়ী আমাদের কোনো ধরনের কোনো ভালো কাজেরই মুখাপেক্ষী নন মহান আল্লাহ। বরং সৎকাজ আমাদের উন্নয়ন ও পূর্ণতার জন্য জরুরি। আর মানুষ যখন পাপ ও অন্যায়-অনাচারে জড়িয়ে পড়ে তখন সে বিভ্রান্তির দিকে এগিয়ে যেতে থাকে এবং এভাবে সে নিজের জন্য নানা ধরনের মন্দ পরিণতি বয়ে আনে।

বিজ্ঞাপন

এই আয়াতে এটাও তুলে ধরা হয়েছে যে খোদায়ী আইনের দৃষ্টিতে সবাই সমান। আল্লাহর পক্ষ থেকে পুরস্কার ও শাস্তির যে ব্যবস্থা দেখা যায় তা পুরোপুরি ন্যায়-বিচারপূর্ণ। কারণ, মানুষের শাস্তি ও পুরস্কার তাদেরই কৃতকর্মের প্রতিফল।

সুরা জাসিয়ার ২৭ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ বলেছেন: ‘নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডলের রাজত্ব আল্লাহরই। যেদিন কিয়ামত সংঘটিত হবে, সেদিন মিথ্যাচারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’

মহান আল্লাহ বিশ্ব-জগতের সবকিছুরই মালিক ও শাসক। তিনি এই বিশ্ব-জগতকে করেছেন বিচার-দিবস আর পরকালের জন্য কৃষিক্ষেত্র-তুল্য। তাই ইহজগৎ মৃত্যু-পরবর্তী জগতের জন্য অত্যন্ত লাভজনক এক ব্যবসার ক্ষেত্র।  কিয়ামত তথা পুনরুত্থান দিবসে পুরোপুরি দেউলিয়া হবে মিথ্যার অনুসারীরা। কারণ তারা জীবন বা পার্থিব হায়াত নামক পুঁজি বৃথাই নষ্ট করেছে এবং কোনো ধরনের লাভ বা ফায়দা হাসিল করা তো দূরের কথা বরং কেবলই ক্ষতি ও দুঃখ অর্জন করেছে।

বিজ্ঞাপন

মানুষের আয়ু ও বুদ্ধিমত্তাসহ জীবনের জন্য আল্লাহর দেয়া নানা উপকরণ- ইহকালে মানব জীবনেরই কিছু পুঁজি। যারা সত্যকে তথা মহান আল্লাহ ও তাঁর মহান ধর্ম ইসলামকে স্বীকৃতি দেয়নি তারা পুনরুত্থান বা বিচার-দিবসে নিজেদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে প্রত্যক্ষ করবে। তারা সেদিন এটা বুঝেই মনে হয়তো বলবে যে হায়! কিভাবে নিজের সর্বনাশ নিজেই করেছি। কিন্তু তখন আর বুঝে কোনো লাভ হবে না।

বিজ্ঞাপন

সুরা জাসিয়ার ২৮ নাম্বার আয়াতে কিয়ামত বা পুনরুত্থান দিবসের এক জীবন্ত চিত্র তুলে ধরে মহান আল্লাহ বলছেন,

‘হে রাসুল! সেদিন তথা কিয়ামতের দিন আপনি প্রত্যেক উম্মতকে দেখবেন নতজানু অবস্থায়। প্রত্যেক উম্মতকে তাদের আমলনামা দেখতে বলা হবে। তারা যা করতো তা তাদের কাছে বলা হবে বা তুলে ধরা হবে, আর বলা হবে যে, আজ তোমারদেরকে সেইসব কাজেরই প্রতিফল দেয়া হবে।’

কিয়ামতের দিন হাশরের ময়দানে সমবেত হবে সব মানুষ। তারা সেদিন মহান আল্লাহর ন্যায়বিচারের কোর্টে উপস্থিত হবে যাতে তাদের কর্ম-তৎপরতা বিচার-বিশ্লেষণ করা যায়। সেদিন মানুষেরা মহাআতঙ্কের কারণে বা ত্রাসগ্রস্ত অবস্থায়  কিংবা আত্ম-সমর্পণের কারণে নতজানু হয়ে থাকবে এবং হতভম্ব হয়ে পড়বে। যে আমলনামা তাদের দেয়া হবে তাতে তারা দেখবে যে তাদের ভালো ও মন্দ সব কাজ তথা নোংরা ও অশালীন কাজসহ ছোট-বড় সব কাজই রেকর্ড করা হয়েছে।

মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে তাদের বলা হবে যে, ‘আমাদের কাছে রক্ষিত এই আমলনামা তোমাদের সম্পর্কে সত্য কথা বলবে তথা তোমাদের কাজগুলোর বিস্তারিত ও পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ তুলে ধরবে। তোমরা যা করতে আমরা তা লিপিবদ্ধ করতাম।’

এমকে

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন
Advertisement
Advertisement


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |