হিজরির প্রথম মাস মহররম। এটি একটি বরকতময় মাস। আরবি বারো মাসের মধ্যে আল্লাহ চারটি মাসকে পবিত্র বলে ঘোষণা করেছেন। তার মধ্যে অন্যতম মাস মহররম। বাকিগুলো হলো- জিলকদ, জিলহজ ও সফর। এ মাসের রোজায় রয়েছে বিশেষ দুটি পুরস্কার।
আশুরার রোজায় বিশেষ ২ পুরস্কার
একবার এক ব্যক্তি আলীকে (রা.) প্রশ্ন করেছিলেন, রমজানের পর আর কোন মাস আছে; যাতে আপনি আমাকে রোজা রাখার নির্দেশ করেন? তখন আলী (রা.) বললেন, এই প্রশ্ন আল্লাহর রাসুলের (সা.) নিকট জনৈক সাহাবি করেছিলেন, তখন আমি তার খেদমতে উপস্থিত ছিলাম। উত্তরে রাসুল (সা.) বললেন, রমজানের পর যদি তুমি রোজা রাখতে চাও, তবে মহররম মাসে রাখ। কারণ, এটি আল্লাহর মাস। এ মাসে এমন একটি দিন আছে, যে দিনে আল্লাহ একটি জাতির তওবা কবুল করেছেন এবং ভবিষ্যতেও অন্যান্য জাতির তওবা কবুল করবেন। (জামে তিরমিজি, হাদিস : ১/১৫৭)
অন্য হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, আমি আশাবাদী যে, আশুরার রোজার কারণে আল্লাহ তাআলা অতীতের এক বছরের (সগিরা) গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১/৩৬৭; জামে তিরমিজি, হাদিস : ১/১৫৮)
যে কারণে আশুরায় দুই রোজা
রাসুল (সা.) মক্কায় থাকতে আশুরার রোজা পালন করতেন। তিনি যখন হিজরত করে মদিনায় যান তখন তিনি দেখতে পেলেন, ইহুদিরাও এদিনে রোজা রাখছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) জানতে পারলেন, এদিনে মুসা (আ.) সিনাই পর্বতে আল্লাহর পক্ষ থেকে তাওরাত লাভ করেন। এদিনেই তিনি বনি ইসরাইলকে ফেরাউনের কয়েদখানা থেকে উদ্ধার করেন এবং এদিনেই তিনি বনি ইসরাইলদের নিয়ে লোহিত সাগর অতিক্রম করেন। আর ফেরাউন সেই সাগরে ডুবে মারা যায়। তাই কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য ইহুদিরা এদিন রোজা রাখে।
তখন রাসুল (সা.) মহররমের ৯-১০ অথবা ১০-১১ মিলিয়ে দুটি রোজা রাখতে বললেন, যাতে ইহুদিদের সঙ্গে সাদৃশ্য না হয়।
হাদিসে আছে, তোমরা আশুরার রোজা রাখ এবং ইহুদিদের সাদৃশ্য পরিত্যাগ করে আশুরার আগে বা পরে আরও একদিন রোজা রাখ। (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ১/২৪১)