এক দফা দাবিতে জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর ফলপ্রত্যাশীদের অবস্থান
সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসির) সামনে অবস্থান নিয়েছেন জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর ফলপ্রত্যাশীরা। তারা জানান, তাদের দাবি না মানা পর্যন্ত তারা পিএসসির সামনে থেকে যাবেন না।
ফলপ্রত্যাশীদের দাবি, বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, মনোটেকনিক ও টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজগুলোর শিক্ষকসংকট নিরসনে ‘জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর (টেক)’ পদের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করতে হবে। এ দাবিতেই তাদের শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি। মানববন্ধনে বলা হয়, তাদের এক দফা দাবি, অবিলম্বে ফল প্রকাশিত না হলে বিপিএসসির সামনে তারা অনশনে বসার ও আরও কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবেন।
রোববার (১১ আগস্ট) সকাল ৯টা থেকে কর্মসূচি শুরু হয়। সেখানে দুই শতাধিক চাকরিপ্রত্যাশী অংশ নেন।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া চাকরিপ্রত্যাশীরা বলেন, সরকারি বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, মনোটেকনিক ও টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজগুলোর শিক্ষকসংকট চরম। সারা বাংলাদেশের কারিগরি শিক্ষা মাত্র ১৮ শতাংশ শিক্ষক দ্বারা খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে। দীর্ঘ এ শিক্ষকসংকট নিরসনে বিপিএসসির অধীনে ২০২১ সালে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। দ্রুত নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করতে গত বছরের মার্চে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি প্রথম ধাপের মৌখিক পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এভাবে তিনটি ধাপে গত মে মাসে সব পদের মৌখিক পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়।
জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর ফলপ্রত্যাশীদের সমন্বয়ক মো. ইমরান হোসেন বলেন, মৌখিক পরীক্ষায় মোট ৭ হাজার ৪০০ প্রার্থী ৩ হাজার ৮৭ পদের বিপরীতে অংশ নেন। মৌখিক পরীক্ষা চলাকালে পলিটেকনিক ও টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ১৩ ও ১৫তম গ্রেডভুক্ত ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টর মহামান্য আদালতে একটি অবৈধ রিট পিটিশন দায়ের করেন, যেখানে তারা নিয়মবহির্ভূতভাবে দশম গ্রেড জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে পদোন্নতি দাবি করেন, যা ২০২০ সালের প্রজ্ঞাপনের ক্যাডার নন-ক্যাডার নিয়োগ বিধিমালার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। মহামান্য হাইকোর্ট মামলায় রুল ইস্যু না করে বাদীদের দায়ের করা আবেদন (এনেক্স-আই) ৬০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তির জন্য কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে আদেশ প্রদান করেন। এর প্রেক্ষিতে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রতিষ্ঠানসমূহের ক্যাডারবহির্ভূত গেজেটেড ও নন-গেজেটেড (কর্মকর্তা-কর্মচারী) নিয়োগ বিধিমালা ২০২০ মোতাবেক ১৩ ও ১৫তম গ্রেডভুক্ত ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টর (সপ/টিআর) পদ থেকে ১০ম গ্রেডভুক্ত জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর (টেক/নন-টেক) পদে পদোন্নতির সুযোগ নেই, মর্মে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে আবেদনটি নিষ্পত্তি করেন।
তা সত্ত্বেও ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টর মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগে পুনরায় রিট পিটিশন দায়ের করলে মহামান্য হাইকোর্ট নিয়োগপ্রক্রিয়ার ওপর ছয় মাসের স্থগিত আদেশ প্রদান করেন। ফলে শিক্ষক নিয়োগের সব ধাপ সম্পন্ন হওয়া সত্ত্বেও অবৈধ মামলার কারণে চূড়ান্ত ফল প্রকাশে অনাকাঙ্ক্ষিত প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছিল। কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর এবং মন্ত্রণালয়ের সর্বাত্মক প্রচেষ্টায় রিটের বিপক্ষে আপিল করলে মহামান্য আদালত শুনানির দিন ধার্য করেন এবং স্থগিতাদেশের ওপরে আট সপ্তাহের জন্য অর্ডারটি স্থগিত করেন। যার ফলে বাংলাদেশ কর্ম কমিশনের মাধ্যমে চূড়ান্ত ফল প্রকাশে আইনি আর কোনো বাধা থাকে না। ভ্যাকেট সময়ের চার সপ্তাহ অতিবাহিত হয়ে গেলেও ফল দীর্ঘায়িত করার বিরুদ্ধে এবং অবিলম্বে ফল প্রকাশের দাবিতে ‘জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর (টেক) পদের ফলপ্রত্যাশী’রা শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন এবং অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিএসসির একজন কর্মকর্তা বলেন, ফলপ্রত্যাশীদের দাবি, পিএসসির সর্বোচ্চ পর্যায়ের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এটি নিয়ে কমিশনে দ্রুত নিষ্পত্তি হবে।
মন্তব্য করুন