ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে নিয়োজিত শিক্ষার্থীদের যে স্বাস্থ্যপরামর্শ মেনে চলতে হবে
কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। দেশকে নতুনভাবে সাজিয়ে তোলার জন্য দেশের জনগণ এখন একসঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। রাস্তায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করছেন শিক্ষার্থীরা। শুরুর দিকে তো শিশুরাও শামিল হয়েছিল এই কাজে। সোমবার (১২ আগস্ট) থেকে ট্রাফিক পুলিশ বহাল হলেও রাস্তায় কিশোর-তরুণরা দায়িত্ব ছাড়েননি।
ঢাকার মতো ব্যস্ত, জনবহুল এবং বিপুল যানবাহনের শহরে এ দায়িত্ব পালনকে শুধু ‘কঠিন’ শব্দটি দিয়ে বোঝানো দায়। এর পাশাপাশি বড় চ্যালেঞ্জ বর্ষার শেষ দিকের ভ্যাপসা গরম, অঝোর বৃষ্টি কিংবা প্রখর রোদে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে কাজ করা। এ ছাড়া শব্দদূষণ ও বায়ুদুষণের ঝুঁকিতে পড়ার আশঙ্কা তো আছেই। এসবের মধ্যেও নিজেকে কীভাবে ভালো রাখবেন শিক্ষার্থীরা?
১. ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পালনের সময় ছাতা ব্যবহার করা জরুরি। বৃষ্টি, রোদের উত্তাপ ও ত্বক পোড়া থেকে বাঁচাবে ছাতা। তবে এক হাত দিয়ে ছাতা ধরে অনেকক্ষণ কাজ করা কষ্টকর বটে। তাই সে ক্ষেত্রে ‘হেড আমব্রেলা’ ব্যবহার করা যেতে পারে, যা মাথায় রাবার দিয়ে লাগানো থাকে। এতে দুই হাত মুক্ত থাকায় কাজ করাও সহজ হয়।
২. ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা এবং শরীরে লবণ ও পানির তারতম্য থেকে বাঁচতে নিয়মিত বিরতিতে পানি পানের ব্যবস্থা থাকতে হবে। পাশাপাশি খাওয়ার স্যালাইন, ফলের জুস, লেবুর শরবত প্রভৃতিও কাছে রাখা যেতে পারে। তবে খেয়াল রাখতে হবে, তা যেন বিশুদ্ধভাবে প্রস্তুত করা হয়। তা না হলে ডায়রিয়া, কলেরা, জন্ডিস, টাইফয়েডের মতো পানিবাহিত রোগের জীবাণু ছড়ানোর আশঙ্কা থাকে।
৩. প্রতিটি ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমে হাত-মুখ ধোয়ার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।
৪. ধুলাবালু ও বাতাসের অন্যান্য দূষণ থেকে বাঁচতে মাস্ক ব্যবহার করা উচিত।
৫. অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার ফলে শরীরের নিচের দিকের অংশ থেকে রক্ত হৃৎপিণ্ডে যেতে বাধাগ্রস্ত হতে পারে। এ জন্য মাঝেমধ্যে বিরতি নিয়ে পায়ের পাতা উঁচু করে বসা যেতে পারে এবং একনাগাড়ে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকতে হলে কিছুক্ষণ পরপর পায়ের পাতা বারবার নাড়ানো ভালো।
৬. ঢিলেঢালা, সুতি ও হালকা রঙের পোশাক পরতে হবে। সম্ভব হলে গাঢ় রঙিন পোশাক এড়িয়ে চলা ভালো।
৭. যদি ঘাম বন্ধ হয়ে যায়, বমি বমি ভাব দেখা দেয়, তীব্র মাথাব্যথা হয়, শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়, প্রস্রাব কমে যায়, প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া হয়, খিঁচুনি ও অজ্ঞান হওয়ার মতো কোনো লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে অবিলম্বে হাসপাতালে যেতে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
৮. সর্বোপরি শিক্ষার্থীদের নিজেদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রাখতে হবে। কারণ, ঢাকার যানবাহনের চাপ অসম্ভব। যানবাহনের গতিরও কোনো ঠিক থাকে না। এ ছাড়া ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের সময় মুঠোফোন ব্যবহার, ভুল জায়গায় দাঁড়িয়ে যেন তাঁরা কোনো দুর্ঘটনায় আক্রান্ত না হন, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে
মন্তব্য করুন