• ঢাকা শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১
logo

বেসিসের নেতৃত্ব থেকে জুলাই বিপ্লবের বিরোধিতাকারীদের অপসারণের দাবি

আরটিভি নিউজ

  ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ২১:৪৯

জুলাই বিপ্লবের প্রত্যক্ষ বিরোধিতাকারী ও গুম, খুন, দুর্নীতি ও লুটপাটে জড়িত সজীব ওয়াজেদ জয়, সালমান এফ রহমান ও জুনায়েদ আহমেদ পলকসহ সকল অপরাধীকে অবিলম্বে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসের (বেসিস) নেতৃত্ব থেকে অপসারণের দাবি জানানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বেসিস সংস্কার পরিষদ।

এ সময় বেসিস সংস্কার পরিষদের সদস্য ফৌজিয়া নিগার সুলতানা বলেন, বিগত বছরগুলোতে বিতর্কিত বেসিস নির্বাচনে সব কটি প্যানেলই সজীব ওয়াজেদ জয়, সালমান এফ রহমান ও জুনায়েদ আহমেদ পলকের ইচ্ছানুসারে স্বেচ্ছাচারী পন্থায় চাপানো ছিল। এমনকি অনৈতিকভাবে নির্বাচনে জিততে তারা নির্বাচনের আগে প্রক্সি ভোটার তৈরি করার পাশাপাশি বৈধ সদস্যদের ভোটার হতে বাধা দিয়েছে। ফলে ২ হাজার ৬০০ সদস্যের বেসিসে সর্বোচ্চ ৯০০ জন ভোটার হতে পেরেছিল। ভিন্নমতের সদস্যদের ভোট থেকে বিরত রাখতেই ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করা হয়।

এছাড়াও অভিযোগ আছে, এসব নির্বাচনে প্রায় সব প্যানেলই সরকারের মদদপুষ্ট ছিল, যারা বিভিন্ন পার্টি ও ইভেন্টের জন্য প্রচুর অর্থ ব্যয় করে, যা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। দুর্নীতি ঢাকতে নির্বাচনের আগে অবৈধ পন্থায় অডিটর বদল করা হয়েছে। এমনকি বেসিসের অফিসিয়াল ফেইসবুক পেজ থেকে অভিযোগ মুছে দেওয়া, ক্লোজড গ্রুপে পোস্ট অ্যাপ্রুভাল সিস্টেম চালু করা এবং সমালোচনামূলক পোস্ট অ্যাপ্রুভ না করা/দেরি করার অভিযোগ আছে। নির্বাহী কমিটির বাইরে বেসিস স্টাফদেরকে দিয়ে এসব অপকর্ম করানোর অভিযোগও আছে, যা সদস্যদের জন্য অসম্মানজনক।

তিনি বলেন, এই পরিপ্রেক্ষিতে বেসিসের সদস্যদের বড় একটি অংশ মনে করছে নতুন বাংলাদেশে আমাদের সামনে যে সুযোগ এসেছে এবং দেশের সবক্ষেত্রে তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে, সে অনুসারে তথ্যপ্রযুক্তির শীর্ষ এই ট্রেড বডিতেও পরিবর্তন আসুক। সে পরিবর্তন সম্ভব বর্তমান ইসির সম্পূর্ণ পদত্যাগ ও একটি নিরপেক্ষ সংস্কার কমিটি গঠনের মাধ্যমে।

বেসিস সংস্কারে প্রস্তাব সমূহ

১। বিগত ১৬টি বছর ধরে সজীব ওয়াজেদ জয়, সালমান এফ রহমান, জুনায়েদ আহমেদ পলক ও আনিসুল হক গং তথাকথিত ডিজিটাল বাংলাদেশ ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের নামে লাখ লাখ কোটি টাকার দুর্নীতি ও অপচয় সংঘটিত করেছে যার সঙ্গে এই সময়কালের বেসিস বোর্ডের নেতারা ও তাদের প্রক্সি কোম্পানিগুলো সরাসরি জড়িত।

২। ৩ আগস্ট সালে যখন দেশব্যাপী রাজপথে হত্যাযজ্ঞ চলছে তখনো এসবে কর্ণপাত না করে বর্তমান বোর্ড কথিত ফ্রিল্যান্সারদের নিয়ে সভা আয়োজন করেছিল। যা তাদেরকে পরিস্কারভাবে জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের বিপরীতের শক্তি হিসেবে সরাসরি প্রমাণ করে। হত্যাযজ্ঞের সেই জাতীয় দুর্যোগের সময়েও তারা ব্যানার টানিয়ে জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠান করে বিশ্বকে দেখাতে চেয়েছিল বাংলাদেশে কিছুই হয়নি।

৩। বেসিস বা বেসিসের সদস্যদের উন্নয়নে এই ইসি কোনো ভূমিকা রাখেনি। উল্টো বেসিসে আসা বিভিন্ন অর্থ বরাদ্দ তারা নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিয়েছে। দীর্ঘদিন এভাবে চলার ফলে বেসিসে যে দুর্নীতিপ্রবণ সংস্কৃতি চালু হয়েছে তা এই ইসির পদত্যাগ ছাড়া সম্ভব না।

প্রধান দাবিসমূহ হলো

১। বর্তমান নির্বাহী কমিটির সকলকে পদত্যাগ করতে হবে।

২। নিরপেক্ষভাবে বর্তমান সদস্যদের প্রকৃত যোগ্যতা পরীক্ষা-নিরীক্ষা পূর্বক ভুয়া/প্রক্সি সদস্যদের সদস্যপদ বাতিল করতে হবে।

৩। বিগত বছরগুলোতে যে সকল সদস্য ব্যবসায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে সদস্যপদ নবায়ন করতে পারেননি তাদের ব্যবসায় ফিরে আসতে সার্বিক সহায়তা করতে হবে।

৪। প্রেসিডেন্টস ফোরাম নামক স্বেচ্ছাচারী প্ল্যাটফর্মের অবসান করতে হবে।

৫। বেসিস গঠনতন্ত্র পুনর্গঠন করে এতে বিদ্যমান সুস্পষ্ট বৈষম্য দূর করতে হবে।

৬। একটি নিরপেক্ষ সংস্কার কমিটির মাধ্যমে প্রকৃত সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে বেসিসের বিদ্যমান সমস্যাগুলোর অভিজ্ঞতার আলোকে নতুন গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করতে হবে।

৭। ছাত্রদের আত্মত্যাগের মাধ্যমে পাওয়া নতুন বাংলাদেশে ছাত্র-তরুণদের গুরুত্ব দিতে বেসিসের বর্তমান স্টুডেন্ট বডিকে প্রকৃত অর্থে সক্রিয় করতে হবে, যেন তারা উদ্যোক্তা হিসাবে আত্মপ্রকাশ করতে পারে বা প্রযুক্তিবিদ হিসেবে এই শিল্পে নেতৃত্ব দিতে পারে।

৮। ইসি সদস্যদের একমাত্র কাজ সদস্যদের স্বার্থ দেখা, ব্যক্তিগত সুবিধার জন্য কারো পক্ষে কাজ করা নয়। সংশোধিত গঠনতন্ত্রে এটি নিশ্চিত করতে হবে।

আরটিভি/এআর

মন্তব্য করুন

Radhuni
  • অন্যান্য এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
রাবি শিক্ষক ড. সুজন সেনের অপসারণের দাবি
শ্রীমঙ্গলে ময়লার ভাগাড় অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন