কর্মক্ষেত্রে কাজের চাপ কমাতে বিড়াল নিয়োগ
অফিসে কিছু কর্মী সময় মেপে ঢোকে না, তবে কাজের পরিবেশকে করে তোলে সম্পূর্ণ আরামদায়ক। কিন্তু এই বিশেষ কর্মীরা হলো বিড়াল। তারা এই অফিসে নিয়মিত কাজ করে, তবে এরা কিন্তু মানুষের মতো মিটিং বা প্রজেক্টে অংশ নেয় না। তাদের কাজ হলো কর্মীদের মন ভালো রাখা আর কাজের চাপ কমানো। ভাবুন আপনি অফিসে ব্যস্ত কাজ করছেন আর আপনার ডেস্কে গুটিসুটি মেরে শুয়ে আছে এক পোষা বিড়াল। এমনকি তার নরম গা ঘেঁষে কাজের চাপও যেন উধাও হয়ে যাচ্ছে ! আর এই চমৎকার দৃশ্য আপনার কল্পনা নয়, বাস্তব।
টোকিওর সাগিনামি ওয়ার্ডের কিউনোট ইনক. অফিসে এমনই বিড়াল ‘কর্মীদের’ নিয়ে চলছে এক অদ্ভুত কর্মজীবন।
২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠার এক বছর পর কিউনোটের চারজন প্রতিষ্ঠাতা একদিন লাঞ্চে যান একটি সুসি রেস্টুরেন্টে। সেখানেই প্রথম এই অদ্ভুত আইডিয়ার জন্ম। রেস্টুরেন্টের একটি ছোট্ট বিড়াল ছানাকে দত্তক নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হলে, তারা ভাবলেন, অফিসে একটা বিড়াল থাকলে তো মজাই হবে। তখনই ঠিক হলো, অফিসে একটা বিড়াল নেওয়া হবে।
প্রথমে ব্যাপারটা সহজ ছিল না। কিউনোটের প্রেসিডেন্ট নোবুয়ুকি সুরুতা জানান, প্রথমে বিড়ালরা কাজের পরিবেশকে বেশ বিক্ষিপ্ত করে তুলেছিল। ওরা তো সরাসরি কীবোর্ডের ওপর উঠে পড়ত। তবে এখন, ল্যাপটপ ব্যবহারের কারণে সেই সমস্যা আর নেই।
অফিসের সবাই ধীরে ধীরে বুঝতে পারল, বিড়ালদের উপস্থিতি শুধুমাত্র মজার নয়, বরং কাজের চাপ কমানোর দারুণ এক মাধ্যম। কর্মীরা জানান, বিড়ালরা কর্মক্ষেত্রে একটি সুন্দর ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। যখন খুব বেশি কাজের চাপ থাকে, তখন বিড়ালদের যত্ন নেওয়ার সময় না পেলেও, আমরা সবাই একে অপরকে সাহায্য করি এই ভারসাম্য বজায় রাখতে।
অফিসের আরেক কর্মী মিয়ামোতো জানান, বিড়ালরা যেন তাদের কাজের ফাঁকে এক ধরনের ‘রিফ্রেশ’ বাটন হিসেবে কাজ করে। কাজে ক্লান্ত হয়ে গেলে, আমি একটু বিড়ালদের সঙ্গে খেলি। এতে মনটা ফ্রেশ হয়, যেন এক নতুন উদ্যম পাই !
অফিসের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় বিড়ালদের অবাধ চলাফেরা করার জন্য বিশেষভাবে নকশা করা হয়েছে। অফিসের বর্তমান অবস্থানে যাওয়ার পর, বিড়ালদের জন্য আরামদায়ক করিডোর তৈরি করা হয়েছে, যেখানে তারা ইচ্ছেমত ঘোরাফেরা করতে পারে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিড়ালদের কার্যকলাপ কোম্পানির প্রতি মানুষের ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করেছে। আর এমন উদ্যোগ কেবল কিউনোটের কর্মীদের মন ভালো করছে না, বরং কোম্পানিকে আরও জনপ্রিয় করে তুলছে।
আরটিভি/এফআই
মন্তব্য করুন