ঢাকাশনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২

আবারো জাবি ভিসির বাসভবন ঘেরাও

শাহিনুর রহমান শাহিন, জাবি সংবাদদাতা

বুধবার, ০৬ নভেম্বর ২০১৯ , ০৫:২৩ পিএম


loading/img
আবারো জাবি ভিসির বাসভবন ঘেরাও

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফারজানা ইসলামের অপসারণের দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাসের সার্বিক পরিবেশ। ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে ও উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে এবং হল ত্যাগের নির্দেশ অমান্য করে বিক্ষোভ মিছিল করে ফের ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছে আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। 

বিজ্ঞাপন

এর আগে বেলা ১১টার দিকে একটি বিক্ষোভ মিছিল করে আন্দোলনকারীরা। এতে বিভিন্ন বিভাগের ২৫-৩০ জন শিক্ষক সংহতি প্রকাশ করে অংশ নেন। বিক্ষোভ মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের সামনে সমাবেশ করে। পরে বিকেল ৫ টায় ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন তারা। 

সমাবেশে আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেছেন, আমরা পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমাদের আন্দোলনকে ধাপে ধাপে এগিয়ে নিয়ে যাবো। 

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, গতকাল দুপুরে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর যে হামলা চালানো হয়েছে এবং চলমান আন্দোলন দমাতে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ও হল খালির ঘোষণাকে আমরা প্রত্যাখ্যান করছি। একই সঙ্গে আবারও বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করব।

সমাবেশ সংহতি জানিয়ে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব এবং অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ বলেন, সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন না হলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বাঁচানো যাবে না।  বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজেদের একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তারের চিন্তা বাদ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় গুলোকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বিকাশিত হতে দিন।

তিনি উপাচার্যকে অনুরোধ করে বলেন, যেটুকু সম্মান আছে তা নিয়ে দয়া করে দায়িত্ব ছেড়ে দেন। বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেন।

বিজ্ঞাপন

দর্শন বিভাগের অধ্যাপক কামরুল আহসান বলেন, আমরা যে কর্মযজ্ঞে আছি তা আমরা বাস্তবায়ন করবো। আমরা দীর্ঘ তিন মাস অপেক্ষা করেছি, আন্দোলন করেছি। কিন্তু উপাচার্য তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হতে চান না। 

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, জামায়াত-শিবির ষড়যন্ত্র করছে। অথচ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ বলে তারা ফেয়ার শেয়ার পায়নি, শাখা ছাত্রলীগ ১ কোটি ৬০ লাখ পেয়েছে। ছাত্রলীগ যেখানে নিজেই স্বীকার করছে যে, তারা টাকা পেয়েছে সেখানে উপাচার্যের বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যাচার। 

তিনি আরও বলেন, একজন উপাচার্য যদি মিথ্যাচার করে তবে সেই পদে বহাল থাকার অধিকার থাকে না। 

সমাবেশে কলা ও মানবিকী অনুষদের ডিন মোজাম্মেল হক বলেন, এই আন্দোলন কোনও উপাচার্য কিংবা শিক্ষকের বিরুদ্ধে নয়। দুর্নীতির বিরুদ্ধে। এই উপাচার্য যদি থাকে তবে ছাত্র শিক্ষক এবং শিক্ষক শিক্ষকের মধ্যে বিশৃঙ্খলা হতেই থাকবে। আমরা তাকে আর চাই না। 

এদিকে দুপুর ১২টায় এক জরুরি মিটিং ডেকে বিকেল সাড়ে ৩টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। প্রতিবাদে হল না ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছে আন্দোলনকারীরা ফলে ক্রমেই উত্তপ্ত হচ্ছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি। 

হল ত্যাগের বিষয়ে প্রভোস্ট কমিটির সভাপতি অধ্যাপক বশির আহমেদ বলেন, এই সময়ের পর আন্দোলনকারী, সাধারণ শিক্ষার্থী, ছাত্রলীগ কেউই হলে থাকতে পারবে না। প্রয়োজন হলে প্রশাসন আবাসিক হলে পুলিশ তল্লাশি চালাবে।

তবে সাধারণ শিক্ষার্থীরাও 'হল ভ্যাকেন্ট' এর তীব্র বিরোধিতা করেছেন। অন্যদিকে আন্দোলনকারীরা বলছেন উপাচার্য অপসারিত না হওয়া পর্যন্ত তারা তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবে।

এদিকে ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। উপাচার্যের বাসভবনের সামনে মোতায়েন করা হয়েছে শতাধিক পুলিশ।

এছাড়া ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। ভিসির বাসভবনের ভেতরে অবস্থান করছেন উপাচার্যপন্থি শিক্ষকরা।

এসএস

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন
Advertisement
Advertisement


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |