• ঢাকা শনিবার, ০৬ জুলাই ২০২৪, ২২ আষাঢ় ১৪৩১
logo

তৃতীয় দিনের মতো সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে জাবি শিক্ষকরা

জাবি প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯:৪৫
তৃতীয় দিনের মতো সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে জাবি শিক্ষকরা
ছবি : আরটিভি

অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত পেনশন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনকে ‘বৈষম্যমূলক’ আখ্যা দিয়ে তা প্রত্যাহার, প্রতিশ্রুত সুপার গ্রেডে শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তনের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের আহবানে তৃতীয় দিনের মতো সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।

বুধবার (৩ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের নিচে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা।

এ সময় জাবি শিক্ষক সমিতির সম্পাদক অধ্যাপক শাহেদ রানার সঞ্চালনায় ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক গোলাম রববানী বলেন, আমরা একটা চক্রান্তের শিকার হয়েছি। সরকারের বোঝা উচিত যে, আমলারা এই ধরনের স্কিম এর মাধ্যমে শিক্ষকদের অপমাণিত করেছেন। আমি বলতে চাই, শিক্ষকদের এই আন্দোলন যৌক্তিক আন্দোলন। কেননা এই বাংলাদেশে ৫২ থেকে শুরু করে যত আন্দোলন হয়েছে তা করেছে ছাত্ররা এবং এর পেছনে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন করে যাব।’

সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক শামসুল আলম অর্থমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করে বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী যে ভাষায় কথা বলেছেন, এমন অর্থমন্ত্রীকে আমরা চাই না, অর্থমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করছি। তিনি যেভাবে শিক্ষকদের আন্দোলনকে অযৌক্তিক বলে দিলেন এটা কোনভাবেই কাম্য নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কখনোই অযৌক্তিক আন্দোলন করেন নাই, দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধেও আমরা প্রাণ দিয়েছি, আমরা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছি। কিন্তু যারা সর্বোচ্চ প্রশাসনের সঙ্গে রয়েছেন তাদেরকে ভুল বুঝিয়ে আমাদেরকে বঞ্চিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। আমরা এই স্কিম প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।’

প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, ‘আমরা যখন দেখেছি, আমাদের সরকার পেনশন স্কিমের ধারণা দিচ্ছে, তখন কত চমৎকার ছিল যে সবধরনের পেশার লোকজন এর আওতায় আসবে। কিন্তু যখন প্রত্যয় স্কিম সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন এলো সেটি শিক্ষকদের ওপর বৈষম্যমূলকভাবে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা অর্থমন্ত্রীর কাছে দায়িত্বশীল আচরণ আশা করেছিলাম। কিন্তু আমরা তার বক্তব্যে আহত হয়েছি। আমরা বুঝতে পারছি, একটি স্বার্থান্বেষী মহল আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। অথচ ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কায় আপনারা ঠিক উল্টো চিত্র দেখতে পাবেন। কিন্তু শিক্ষকদের অপমান কেবল এই দেশেই করে যাচ্ছে। আমরা অনুরোধ করছি, আপনারা এটি তুলে নিয়ে আমাদেরকে ক্লসে ফেরার সুযোগ করে দিন।’

সমাপনী বক্তব্যে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মোতাহার হোসেন বলেন, ‘আমরা যেভাবে ভাষার জন্য জীবন দিয়েছি, তেমনি আমাদের দাবি আদায়ের জন্য সর্বাত্মক কর্মবিরতি দিয়েছি, তবে আমরা ক্লাসে ফিরতে চাই। প্রধানমন্ত্রীকে বলতে চাই, আপনাকে ভুল বোঝানো হয়েছে। আজকে ছাত্ররা আন্দোলন করছে, অথচ আপনিই বলেছিলেন, যে কোটা থাকবে না, কিন্তু আবার কেন কোটা দেওয়া হলো? আপনিই বলেছেন, পেনশন সংক্রান্ত কোনো ঝামেলা হবে না, কিন্তু তারপরেও কেন শিক্ষকদেরকে এই ধরনের বৈষম্যমূলক পেনশন স্কিমের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। আমরা বলতে চাই, একটা কুচক্রী মহল শিক্ষকদেরকে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে উঠেপড়ে লেগেছে। আপনি শিক্ষকদেরকে লাঞ্চিত করে এই ধরনের স্কিম জারি রাখবেন না, এইটা আপনার কাছে অনুরোধ রইলো। শিক্ষকদের দাবিগুলো মেনে নিয়ে আমাদেরকে দ্রুত ক্লাসে ফেরার সুযোগ করে দিন।’

এ সময় তিনি শিক্ষকদেরকে ধন্যবাদ জানিয়ে রোববারও সর্বাত্মক কর্মবিরতি চলাকালীন সমাজবিজ্ঞান অনুষদের নিচে বেলা ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দেন।

এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক বশির আহমেদ, ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক সোহেল রানা, অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার, লুৎফর রহমান, শফিক উর রহমান, শফিকুল ইসলাম, সুব্রত বণিকসহ আরও অনেকে।

মন্তব্য করুন

  • শিক্ষা এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
চতুর্থ দিনেও সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা
৩৫ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের সর্বাত্মক কর্মবিরতি
সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা
সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা