• ঢাকা শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
logo

মেননের ওয়ার্কার্স পার্টির কংগ্রেস বয়কটের ঘোষণা দিলেন ৬ শীর্ষ নেতা

আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট

  ২৮ অক্টোবর ২০১৯, ১৭:৪৬
ওয়ার্কার্স পার্টি,
রাশেদ খান মেনন

রাশেদ খান মেননের ওয়ার্কার্স পার্টির দশম কংগ্রেস প্রত্যাখ্যান করেছেন দলটির দুই পলিটব্যুরো সদস্যসহ কেন্দ্রীয় ছয় নেতা। নেতাদের অভিযোগ- পার্টির শীর্ষ নেতৃত্বের প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপে বিভিন্ন জেলায় অবিশ্বাস্য সংখ্যক পার্টি সভ্যপদ প্রদানের মাধ্যমে ভুয়া প্রতিনিধিদের দশম পার্টি কংগ্রেসে উপস্থিত করানোর সব আয়োজন ও প্রস্তুতি সম্পূর্ণ করা হয়েছে। তাই নতজানু আপোষকামী নীতি পরিহার করে আদর্শের প্রতি অবিচল থাকতে আমরা কংগ্রেসে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।

সোমবার (২৮ অক্টোবর) এক যৌথ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কেন্দ্রীয় ছয় নেতা এসব কথা জানান। কংগ্রেস প্রত্যাখ্যান করা ছয় নেতা হলেন- ওয়ার্কার্স পার্টির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম পলিটব্যুরো সদস্য নুরুল হাসান, ইকবাল কবির জাহিদ, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জাকির হোসেন হবি, মোফাজ্জেল হোসেন মঞ্জু, অনিল বিশ্বাস, তুষার কান্তি দাস।

বিবৃতিতে নেতারা বলেন, ১৯৯২ সালের ৪ মে ঐক্য কংগ্রেসে গৃহীত মতাদর্শগত, নীতি-কৌশল থেকে পার্টি ক্রমান্বয়ে দক্ষিণপন্থী, বিলোপবাদী ধারায় অধঃপতিত হয়েছে। ঐক্য কংগ্রেসের লক্ষ্য ছিল কমিউনিস্ট ঐক্যকে এগিয়ে নেওয়া এবং বাম গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করা। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামই হবে পার্টির ভিত্তিমূলক কাজ। পার্টির বর্তমান নেতৃত্ব ঐক্য কংগ্রেসের মতাদর্শগত নীতি-কৌশল ও সংগঠন সম্পর্কে গৃহীত ভিত্তি ভেঙে তছনছ করে দিয়েছে।

ইতোমধ্যে পার্টি তার সংগ্রামী ভাবমূর্তি হারিয়ে ফেলেছে উল্লেখ করে নেতারা বলেন, দল জনগণ থেকে বিছিন্ন হয়ে পড়েছে। পার্টি ও তার গণসংগঠন দুর্বল হয়ে পড়েছে। ১৪ দলের সঙ্গে কর্মসূচি ভিত্তিক ঐক্য, হাতুড়ি ছেড়ে নৌকা মার্কায় নির্বাচন এবং সরকারে মন্ত্রিত্ব গ্রহণের মাধ্যমে পার্টির নীতি আদর্শকে জলাঞ্জলি দেওয়া হয়েছে। এই ভ্রান্তনীতির অনুসরণের ফলে পার্টির অগণিত নেতা, কর্মী এবং জনগণের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

কংগ্রেস প্রত্যাখ্যানকারী ছয় নেতার দাবি, বরিশালের জেলা সম্মলনে দলের কর্মী এবং জনগণের দাবির মুখে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের প্রহসনের নির্বাচন সম্পর্কে পার্টি সভাপতি রাশেদ খান মেনন যে সত্য উচ্চারণ করেছিলেন, পরদিন তার ইউটার্ন পাটি অনুসৃত বর্তমান রাজনীতিরই অনিবার্য ফল।

ওয়ার্কার্স পার্টি বর্তমানে মার্কসবাদী-লেনিনবাদী আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়ে সুবিধাবাদী পার্টিতে পরিণত হয়েছে অভিযোগ তুলে নেতারা আরও বলেন, দলের শীর্ষ নেতৃত্ব আজ রাজনৈতিক দুর্নীতির পাশাপাশি অর্থনৈতিক দুর্নীতিতেও আক্রান্ত। বাস্তবতার নামে বুর্জোয়া লেজুড়বৃত্তির রাজনৈতিক লাইন ও জোটনীতি তথা আওয়ামী লীগের সঙ্গে স্থায়ী ঐক্যের যে নীতি-কৌশল গ্রহণ করে চলেছে তাতে ওয়ার্কার্স পার্টি দেউলিয়া পার্টিতে পরিণত হয়েছে।

আন্তঃপার্টি সংগ্রামকে গলা টিপে হত্যা করতে শীর্ষ নেতৃত্বের প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপে বিভিন্ন জেলায় অবিশ্বাস্য সংখ্যক পার্টি সভ্যপদ প্রদানের মাধ্যমে ভুয়া প্রতিনিধিদের দশম পার্টি কংগ্রেসে উপস্থিত করানোর সব আয়োজন ও প্রস্ততি সম্পূর্ণ করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তারা।

---------------------------------------------------------------
আরো পড়ুন: আসন্ন কংগ্রেসে কে হচ্ছেন যুবলীগের কাণ্ডারি?
---------------------------------------------------------------

এ ছয় নেতা আরও বলেন, স্বচ্ছ-জবাবদিহিমূলক কংগ্রেস অনুষ্ঠানে পলিটব্যুরো ও কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় পার্টি সভ্যপদ যাচাই-বাছাই করার প্রস্তাব আমরা উত্থাপন করেছিলাম। কিন্ত সভ্যপদ যাচাই-বাছাইয়ের ওই প্রস্তাব সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে অগ্রাহ্য করা হয়েছে। ফলে এ কথা এখন নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, পার্টি সভ্যপদ যাচাই না করে অবৈধ প্রতিনিধিদের নিয়ে পার্টি কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হলে ওই কংগ্রেস হবে অবৈধ কংগ্রেস। তাই নতজানু আপোষকামী চলার নীতি পরিহার করে আদর্শের প্রতি অবিচল থাকতে আমরা দশম পার্টি কংগ্রেসে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।

লাল পতাকাকে সমুন্নত রাখতে দক্ষিণপন্থী সুবিধাবাদকে পরাস্ত করে সত্যিকারের বিপ্লবী পার্টি, কমিউনিস্ট ঐক্য, বাম-গণতান্ত্রিক ঐক্য গড়ে তুলতে সব পার্টি কমরেডদের এই প্রহসনের কংগ্রেসে অংশগ্রহণ না করার আহ্বান জানান এই ছয় নেতা।

নেতারা আরও বলেন, বাংলাদেশে বর্তমান বাস্তবতায় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার বিপর্যয়, দুর্নীতি দুর্বৃত্তায়ন যেখানে এসে দাঁড়িয়েছে তাতে আর ১৪ দল ও সরকার নয়, পার্টির স্বাধীন ভূমিকা নিতে হবে। বিএনপি-জামায়াত, মৌলবাদ-সাম্প্রদায়িক শক্তির সব ধরনের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সতর্ক ও ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

এসজে

মন্তব্য করুন

Bangal
rtv Drama
Radhuni
  • রাজনীতি এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
তিন দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে মেনন
ফের রিমান্ডে মেনন
ইনুর ৭ দিন, মেননের ৬ দিনের রিমান্ড
রাশেদ খান মেনন ৫ দিনের রিমান্ডে