ফেসবুকে ছড়িয়েছে সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের মূলহোতার নাম, যা জানা গেল

আরটিভি নিউজ

বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫ , ০৬:৪০ পিএম


ফেসবুকে ছড়িয়েছে সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের হোতার নাম, যা জানা গেল
ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি, নিহত আলোচিত সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের মূলহোতার নাম প্রকাশ- দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের মূলহোতার নাম প্রকাশের দাবিটি সঠিক নয়, বরং কোনো তথ্য-প্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে। 

বিজ্ঞাপন

অনুসন্ধানের শুরুতে উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্টগুলোর মন্তব্যঘরে দাবির সূত্র হিসেবে একটি ব্লগপোস্টের লিংক খুঁজে পাওয়া যায়। লিংকটিতে প্রবেশ করে ‘ব্রেকিং নিউজ: দীর্ঘ ১৩ বছর পর সাগর-রুনি হ’ত্যা’কা’ণ্ডের মূল হোতার নাম প্রকাশ’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন দেখা যায়। 

রিউমর স্ক্যানারের বিশ্লেষণে কথিত প্রতিবেদন প্রকাশ করা ‘liveenewsbd’ নামের ব্লগস্পটের বিনামূল্যের ডোমেইনের এই সাইটটি একটি ভূঁইফোড় সাইট বলে প্রতীয়মান হয়। 

বিজ্ঞাপন

কথিত প্রতিবেদনটিতে জাতীয় দৈনিকের সূত্র উল্লেখ করে দাবি করা হয়, “২০১২ সালে রাজধানীর পশ্চিম রাজা বাজারেে ভাড়া বাসায় নৃশংসভাবে খুন হন সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি। এই ঘটনায় শেরে-বাংলা নগর থানায় মামলা করেছিলেন রুনির ভাই নওশেল আলম। মাছরাঙা টিভির বার্তা সম্পাদক সাগর সারোয়ার ও তার স্ত্রী এটিএন বাংলার জৈষ্ঠ্য প্রতিবেদক মেহেরুন রুনিকে হত্যার পর পেরিয়ে গেছে দীর্ঘ ১৩ টি বছর। এতগুলো বছরে বাবা-মা হত্যার বিচার পেল না মেঘ। ৫ ই আগস্টের পর সেই হত্যার রহস্য উদঘাটনে গঠন করা হয় টাস্কফোর্স। তদন্তের অংশ হিসেবে সম্প্রতি ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানকে।

১৫ জানুয়ারি ঢাকার অদূরে কেরানিগঞ্জের রাজেন্দ্রপুরে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের পরদিন টাস্ক ফোর্সের চেয়ারম্যান ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) প্রধান মোস্তফা কামাল গণমাধ্যমকে জানান, হত্যাকাণ্ডের পর তৎকালীন র‍্যাবের গোয়েন্দা শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিয়াউল আহসান সাগর-রুনির বাসায় গিয়েছিলেন। জিজ্ঞাসাবাদের সময় তিনি জানান, সেদিন সকাল ৮টার দিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন তিনি। তখন সামাজিক মাধ্যমে জিয়াউল আহসানকে নিয়ে অনেক আলোচনা হয়। হত্যাকাণ্ড নিয়ে তিনি কিছু জানেন কিনা সে বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এছাড়া হত্যা মামলার তদন্ত নিয়ে তার কোনো বক্তব্য আছে কিনা তাও জানতে চাওয়া হয়।

পিবিআই সূত্র জানায়, সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্তে গঠিত টাস্ক ফোর্সের সদস্যরা শুক্রবার সকালে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে যান এবং প্রায় ২ ঘন্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

বিজ্ঞাপন

এর আগে, গত সোমবার বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন(বিএফইউজে) এর সাবেক সভাপতি ইকবাল সোবহান চৌধুরীকে রাজধানীর পিবিআই কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন টাস্ক ফোর্সের সদস্যরা। গতবছরের ৩০ ডিসেম্বর এটিএন বাংলার চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

বিজ্ঞাপন

উক্ত ব্লগপোস্টের কোথাও সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের মূল হোতার নাম উল্লেখ নেই। পরবর্তীতে ওই জাতীয় দৈনিকের ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণ করে আলোচিত দাবির সপক্ষে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এমনকি গণমাধ্যমটির ফেসবুক পেজ এবং ইউটিউব চ্যানেলেও এসংক্রান্ত কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি। 

পাশাপাশি, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ অন্য কোনো গণমাধ্যমেও আলোচিত দাবির সপক্ষে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

উল্লেখ্য, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড নিয়ে টাস্কফোর্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী দম্পতিকে হত্যা করা হয়েছে। আর চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডে অংশ নেন দুই জন। তবে ডিএনএ অস্পষ্টতায় হত্যাকারীদের শনাক্ত করা যাচ্ছে না। সুতরাং, দীর্ঘ ১৩ বছর পর সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের মূল হোতার নাম প্রকাশ শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

আরটিভি/এএ 

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন
Advertisement
Advertisement

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission