চলমান পরিস্থিতি নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেছেন জনপ্রিয় ইসলামি বক্তা মাওলানা ড. মিজানুর রহমান আজহারী।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে তিনি লিখেছেন, জাতীয় ঐক্য টিকিয়ে রাখতে সেক্রিফাইসিং মেন্টালিটি জরুরি। বিভাজনে কেবল অপশক্তির চক্রান্তই সফল হবে। ভুলে গেলে চলবে না- স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে রক্ষা করা কঠিন। শান্ত হোন, ঐক্যবদ্ধ থাকুন।
এর আগে, একইদিন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ফেসবুকে লিখেছেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, নর্থ ও দিল্লি জোটভুক্ত হয়ে যে কুমির ডেকে আনছেন, তা আপনাদেরই খাবে। আপনারা তাদের একজন নন। আপনাদের শুধু সাময়িকভাবে কাজে লাগানো হয়েছে।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ লিখেছেন, জুলাইয়ের ফ্যাসিবাদ বিরোধী সকল শক্তির প্রতি আহ্বান- যে বিভাজনটা অপ্রত্যাশিতভাবে আমাদের মধ্যে এসেছিল, সেই বিভাজনকে দেশ ও জাতির স্বার্থে মিটিয়ে ফেলতে হবে। এ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য এবং পতিত ফ্যাসিবাদের নগ্ন দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র থেকে মুক্তির জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। মনে রাখবেন, আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পতনে দেশে-বিদেশে অনেকে নাখোশ হয়ে আছে। এই নাখোশ বান্দারা আমাদের বিভাজনের সুযোগ নিতে নিতে আজকের এই অস্থিতিশীল দিন এনেছে।
‘আমরা সবাই এক হয়েছিলাম বলে দীর্ঘ দেড় যুগের শক্তিশালী ফ্যাসিবাদকে তছনছ করতে পেরেছিলাম। আমরা খণ্ড-বিখণ্ড হলে পতিত ফ্যাসিবাদ ও তার দেশি-বিদেশি দোসরেরা আমাদের তছনছ করার হীন পায়তারা করবে। দেশ ও জাতির প্রতি দায় এবং দরদ আছে বলেই আমরা এক হয়ে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়েছিলাম। দেশ ও জাতির জন্যই এবার আমাদেরকে এক হয়ে আমাদের স্বদেশকে বিনির্মান করতে হবে। কোন ব্যাক্তি বা গোষ্ঠীর স্বার্থের জন্য এই ঐক্য নয়, বরং আমাদের দেশের জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকার কোন বিকল্প নেই।
তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ফেসবুক দেওয়া তার পোস্টে বলেন, ব্যক্তির আদর্শ, সম্মান ও আবেগের চেয়ে দেশ বড়। দেশপ্রেমিক শক্তির ঐক্য অনিবার্য। আগেকার যেকোনো বক্তব্য ও শব্দচয়ন, যা বিভাজনমূলক ছিল, সেগুলোর জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। সরকারে আর একদিনও থাকলে অভ্যুত্থানের সব শক্তির প্রতি সম্মান ও সংবেদনশীলতা রেখে কাজ করতে চাই। পুরাতন বন্দোবস্তের বিভেদকামী স্লোগান ও তকমাবাজি, যা বৃহত্তর জনগোষ্টীকে হত্যাযোগ্য করে তোলে, সেগুলো পরিহার করলেই আশা করি ভবিষ্যত রাষ্ট্র গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে।
‘বাংলাদেশের শত্রুরা ঐক্যবদ্ধ ও আগ্রাসী। সার্বভৌমত্ব ও গণতান্ত্রিক সকল প্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে। দেশপ্রেমিক জনগণ যারা জুলাই অভ্যুত্থানে ঐক্যবদ্ধ ছিলেন, তাদের সামনে দীর্ঘ পরীক্ষা। এ পরীক্ষা ঐক্যের এবং ধৈর্যের। এ পরীক্ষা উতরে যেতেই হবে।’
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সভাপতি জাহিদুল ইসলাম লিখেছেন, ৩৬ জুলাই বৃহৎ শক্তি ও স্পিরিটের নাম। কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর শিশুসুলভ অপরিপক্ব আচরণের কারণে জুলাই হারিয়ে যেতে পারে না। শহীদ-গাজীদের প্রতি আমাদের দায় আছে। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং ফ্যাসিবাদ প্রশ্নে আমরা এক ও অভিন্ন। সকলের মনে রাখা দরকার- প্রকৃতি তার নিজস্ব গতির আলোকেই চলে। যারাই বাড়াবাড়ি করবে, প্রকৃতি প্রতিশোধ নিতে কখনো ভুল করে না। মহান আল্লাহ আমাদের সহায়। হাসবুনাল্লাহ।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ লিখেছেন, নিজ স্বার্থে আপনারাই জুলাইকে ধ্বংস করেছেন। বহুবার বলেছি ঐক্য বিনষ্ট করবেন না, উপরন্তু শুধু দেখেছি স্বেচ্ছাচারিতা আর অহংকার। বারবার অপ্রিয় কথাগুলো বলায় সবক্ষেত্রেই হয়েছি কোণঠাসা। প্রত্যেককেই হিসাব দিতে হবে, জুলাইয়ের হিসাব।
আরটিভি/আরএ/এস