ইট-পাথর-বালুর চেয়ে প্লাস্টিক বর্জ্যে তৈরি রাস্তা বেশি টেকসই!
শুধু ইট-পাথর আর বালু নয়, দেশের রাস্তা নির্মাণে এখন থেকে শুরু হয়েছে প্লাস্টিক বর্জ্যের গবেষণাভিত্তিক ব্যবহার। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক টেক্সাস ইউনিভার্সিটির বাংলাদেশি প্রফেসর ড. শাহাদাতের হাত ধরে এটি প্রথম শুরু হয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। তার সেই গবেষণা বাংলদেশি প্রকৌশলী বন্ধুদের মাধ্যমে কাজে লাগালো বাংলাদেশ সড়ক গবেষণাগার।
সাধারণ ইট-পাথর-বালুতে তৈরি রাস্তা যে সময়কাল টিকবে, প্লাস্টিক বর্জ্যে তৈরি রাস্তা তারচেয়েও কমপক্ষে ৫ বছর বেশি টিকবে বলে দাবি গবেষকদের।
সড়ক গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, ঢাকাতেই ২০০৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত জনপ্রতি তিন কেজি থেকে নয় কেজিতে বৃদ্ধি পেয়েছে প্লাস্টিকে ব্যবহার। এতে করে এ রাজধানীতেই প্রতিদিন ১০ হাজার টন বর্জ্য উৎপাদন হচ্ছে। যার ৪০ থেকে সর্বোচ্চ ৬০ শতাংশ নিষ্কাশন হলেও বাকি বর্জ্য থেকে যায় রাস্তায় কিংবা নদীনালা ও জলাধারে। প্লাস্টিক পণ্য কিছু অংশ রিসাইকেল হলেও, থেকে যায় পলিথিন। এতে করে সামান্য বৃষ্টিতেই রাজধানীর বড় একটি অংশে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা।
এ সমস্যা সমাধানে কিছুটা আশা জোগাচ্ছে সড়কে প্লাস্টিক বর্জ্যের ব্যবহার। যা উদ্ভাবন করেন যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস ইউনিভার্সিটির এ প্রফেসর। তিনি বাংলাদেশ সড়ক গবেষণাগারের সঙ্গে যৌথভাবে উদ্যোগ নেন। পরে দেশের সড়ক বিভাগ পাইলট প্রকল্প হিসেবে ঢাকা ও কুমিল্লায় দুটি রাস্তা নির্মাণে প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবহার করে।
এজন্য প্রথমে দেশের বিভিন্ন জেলার ১৭টি ডাম্পিং থেকে প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ করে। গবেষণা শেষে এসব বর্জ্য গাবতলি-সোয়ারীঘাট সড়কের ৩০০ মিটার অংশে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার হয়। প্লাস্টিক বর্জ্য যে অংশে ব্যবহার হয়েছিল সে অংশের উপরিভাগে নীল রং দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে। গেলো বছর থেকেই এ সড়কে সব ধরনের যানচলাল করছে।
এদিকে একই গবেষণা ও প্রকল্পের আওতায় কুমিল্লার টাউন রোড সড়ক নির্মাণেও ৩০০ মিটার অংশে পলিথিন ব্যবহার করে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। চলতি বছর জুন থেকে ওই সড়কেই শুরু হয়েছে যান চলাচল। ঢাকার রাস্তাটি রিসাইকেল প্লাস্টিক বর্জ্যে দিয়ে নির্মাণ হলেও কুমিল্লার এ রাস্তায় ব্যবহার হয়েছে পলিথিন। এর ফলে ওয়ানটাইম প্লাস্টিকের যেমন চাহিদা তৈরি হবে তেমনি অন্যান্য তুলনায় রক্ষণাবেক্ষণ খরচ কমে আসবে।
পাইলট প্রকল্পে প্লাস্টিকের বর্জ্যে নির্মিত এসব সড়ক টেকসই হলে দেশের বিভিন্ন জেলা সড়কেও ব্যবহার হবে প্লাস্টিক বর্জ্যের। এতে দূষণ থেকে রক্ষা পাবে পরিবেশ বাড়বে সড়কের স্থায়িত্ব।
মন্তব্য করুন