উপার্জনের উৎস হারিয়ে দিশেহারা হাফিজুলের পরিবার
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘাতে নিহতদের অনেকেই শ্রমজীবী। সহিংসতার মধ্যেও জীবিকার তাগিদে বের হয়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন অনেকে। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে নিস্ব অনেকে। তাদেরই একজন মধ্য বাড্ডার রিকশাচালক হাফিজুল। ২১ জুলাই মধ্য বাড্ডার পোস্ট অফিস গলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন এই শ্রমজীবী।
ছেলে রিকশাচালক হাফিজুলের প্যাডেলেই ঘুরত বাবা আবু বকরের সংসারের চাকা। সেই ছেলেকে হারিয়ে তাই বাকরুদ্ধ বাবা। দুই সন্তানের জননী মানসিক ভারসাম্যহীন স্ত্রী আয়শা হয়তো এখনও বুঝে উঠতে পারেননি, তিনি কী হারিয়েছেন।
নিহতের স্ত্রী আয়শা বলেন, রিকশা চালাইতে গিয়ে গুলি খাইয়া মারা গেছে।
২১ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় জীবিকার তাগিদে রিকশা নিয়ে বের হয়েছিলেন মধ্যবাড্ডার পোস্ট অফিস গলিতে। প্রধান সড়কে সংঘর্ষ দেখে যাত্রী নামিয়ে ফেরার পথে গলিতেই গুলিবিদ্ধ হন হাফিজুল।
সাথে থাকা রিকশাচালক সুমন মিয়া জানান, একাধিক হাসপাতালে নিলেও চিকিৎসা পায়নি হাফিজুল। চিকিৎসা পেলে হয় তো আজ হাফিজুল বেঁচে থাকতো।
তিনি জানান, বিজিবি ছিলো লিংক রোডে আর আমরা ছিলাম পোস্ট অফিস গলিতে। সেখান থেকে গুলি লাগার কথা না। আমার ধারণা, ছাদ থেকে গুলি করা হয়েছে।
নিরপরাধ ছেলের বুকে কেন গুলি চালানো হলো, সেই প্রশ্ন রেখে বাবা ও মা জানতে চান, হাফিজুলের ছোট্ট সন্তানদের ভাত-কাপড়ের সংস্থান কে করবে?
হাফিজুরের বাবা জানান, গুলি পেছন থেকে লেগে সামনে ডান পাশ দিয়ে বের হয়। এখন কার কাছে বিচার দিবো, কে বিচার করবে। আমি অসহায় মানুষ, ছেলে কামাই করতো আমরা খেতাম। এখন আমার ছেলে নাই, আমাদের কি উপায় হবে।
দুই সন্তান নিয়ে কিভাবে সংসার চলবে জানা নেই স্ত্রী আয়শার। স্বামীর মৃত্যুর পর আশ্রয় নিয়েছেন মায়ের বাসায়।
আয়শার মা জানান, মেয়ের পেটে একটা, ছোট ছোট দুইটা বাচ্চা রেখে জামাই চলে গেলো। চারজন লোক এখন অসহায়।
মন্তব্য করুন