আপনাকে যদি প্রশ্ন করা হয়, সুন্দর বলতে আপনি কী বোঝেন? উত্তর হয়তো ভিন্ন ভিন্ন আসবে। কেউ বলবে, সৌজন্যতা আর আন্তরিকতা। আবার কেউ বলবে, বাহ্যিক চেহারার মাধুর্যই প্রকৃত সুন্দর। তবে এমন এক জাতি আছে যাদের কাছে সুন্দর মানে একটাই। আর তা হলো বিশাল এক ভুঁড়ি! যার যতবড় ভুঁড়ি, তিনি ততবেশি সুন্দর, তত বেশি সম্মানের। আর যার ভুঁড়ি নেই, তিনি সুন্দরের ধারে-কাছেও নেই।
মোটা মানুষরা যেখানে দম আটকে, বালিশচাপা কিংবা বেল্ট দিয়ে ভুঁড়ি লুকানোর চেষ্টা করেন, সেখানে দক্ষিণ ইথিওপিয়ার বোদি উপজাতির কাছে এই বিশাল সাইজের ভুঁড়িই সৌন্দর্যের মাপকাঠি। জানলে আরও অবাক হবেন, এই বিশাল বিশাল ভুঁড়ির সৌন্দর্যের এক বিশেষ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। যেখানে ভুঁড়ি দেখিয়ে জয় করা যায় নায়কের তকমা। আর জিতলে পুরস্কার কী? কোনো কাজ করা ছাড়া আজীবন পায়ের ওপর পা তুলে খাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ।
তবে এমন ভুঁড়ি বানানোর জন্য তারা কী খান? গামলা ভর্তি ভাত! একেবারেই না। এরা এমন ভুঁড়ি বানাতে যা খান শুনলে হয়তো গা গুলিয়ে আসবে। ইথিওপিয়ার বোদি উপজাতির জীবনে গরু শুধু জীবিকা নয়, বরং তাদের সংস্কৃতির একটি অংশ। আর এই প্রতিযোগিতায় বড় ভুঁড়ি বানানোর জন্য তারা গরুর রক্ত এবং দুধের মিশ্রণ পান করেন। তবে রক্তের জন্য তারা গরুকে জবাই করেন না। বরং বর্শা দিয়ে শিরা থেকে রক্ত সংগ্রহ করেন এবং পরে সেই ক্ষতস্থান কাদামাটি দিয়ে বন্ধ করে দেন। কী ভয়ানক!
তাদের নববর্ষের সময় কায়েল নামে এক উৎসবের আয়োজন করা হয়। ছয় মাস আগে থেকে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য কিছু তরুণকে বাছাই করা হয়। বাছাই করা তরুণরা তখন একটি আলাদা জীবানাচার পালন করেন। প্রতিদিন নিয়মিত তাদের বিশেষ খাবার ও পানীয় সরবরাহ করা হয়, যাতে দ্রুত ভুঁড়ি বাড়তে পারে।
উৎসবের দিন প্রতিযোগীরা তাদের নাদুসনুদুস শরীর নিয়ে প্যারেড করেন। গ্রামের মানুষজন তাদের দেখে সবচেয়ে বড় ভুঁড়িওয়ালাকে ভোট দেন। বিজয়ী শুধু পুরস্কার পান না, নায়কের মতো সম্মান পান ও বিনাশ্রমে আহার।
আরটিভি/এফআই/এআর