১৯ সন্তানের গর্বিত জননীর পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন
একজন সফল নারীই তো হতে পারেন অনুপ্রেরণা। আজ আপনাদের সামনে তুলে ধরব এমন এক মায়ের গল্প, যিনি একে একে ১৯ সন্তানের জননী হয়েও নিজেকে ঘরের কোনে সীমাবদ্ধ রাখেননি। এগিয়ে গেছেন নিজের স্বপ্নের পথে, অর্জন করেছেন পিএইচডি ডিগ্রি। তার এই অসাধারণ যাত্রা প্রতিটি নারীর জন্য এক দৃষ্টান্ত।
বিয়ে এবং সন্তান জন্মানোর পর অনেক নারীই স্বপ্নকে ভুলে গিয়ে আজীবন হাসি মুখে সংসার আর সন্তানদের যত্নে নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখেন। বিশেষ করে মুসলিম প্রধান সমাজে নারীদের দায়িত্ব কেবল ঘরের কাজেই সীমাবদ্ধ রাখার চাপ বেশি।
আমি নারী আমি সব পারি—এ কথাটা যেন শুধুমাত্র সৌদি নারী হামদা আল রুয়াইলির জন্যই। তিনি সমাজের চেনা ধারণাকে ভেঙে দিয়ে ১০ ছেলে ও ৯ মেয়ের মা হয়েও সংসার সামলানোর পাশাপাশি পড়াশোনা চালিয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন । এ ছাড়া তিনি একজন ব্যবসায়ী, ও মানসিক স্বাস্থ্য খাতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা। এ যেন একের ভিতর সব।
সকালের আলো ফোটার আগেই দিন শুরু করেন তিনি। এমন একটি পরিবারে মা হওয়া বিশাল দায়িত্বের বিষয়। তবুও তিনি ব্যস্ত দিনগুলোতে সন্তানদের যত্ন নেন, কর্মক্ষেত্রে কাজ করেন, আর রাতের নির্জনে নিজের ব্যবসা ও পড়াশোনায় মন দেন।
তার জীবনের প্রতিটি দিনই যেন একটি পরিকল্পিত যুদ্ধ। হামদা বলেছেন, প্রতিদিনের কাজের জন্য তিনি অত্যন্ত সাবধানে পরিকল্পনা করেন। দিনের আলোয় সন্তানদের প্রয়োজন ও কাজ সামলান, আর রাতের অন্ধকারে স্বপ্নের পথে কাজ করেন।
তবে শিক্ষার যাত্রা সহজ ছিল না। ৪৩ বছর বয়স হওয়ার আগেই তিনি ব্যাচেলর, মাস্টার্স, এবং পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি জানিয়েছেন, ১৯ জন সন্তানকে সামলানো নিঃসন্দেহে একটি চ্যালেঞ্জ ছিল। তবে শিক্ষকদের এবং সামরিক কর্মকর্তাদের অনুপ্রেরণা তাকে এই কঠিন যাত্রায় সাহস যুগিয়েছে। তার মতে, সন্তান বড় করা আর একটি সেনাদল পরিচালনা করা প্রায় একই রকম চ্যালেঞ্জের।
হামদার সন্তানেরাও মেধাবী। তার এক মেয়ে কিং আব্দুল আজিজ সেন্টার থেকে শিক্ষাবৃত্তি পেয়েছে। এত বড় পরিবার সামলানোর পরেও তিনি তাদের শিক্ষার প্রতি যত্নশীল থেকেছেন। তিনি বলেছেন, সন্তানদের প্রয়োজন বুঝে তাদের লক্ষ্য অর্জনে সাহায্য করা তার জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
হামদা—তিনি যেন সকল নারীদের জন্য এক অনুপ্রেরণার নাম। তার এই অর্জন সত্যিই প্রশংসনীয়। একজন মা যে কতশত গুণের অধিকারী! একজন নারী সন্তানের, পরিবারের যত্ন নিয়ে নিজের জন্যও কিছু করতে পারে তার প্রকৃত দৃষ্টান্ত এই মা।
আরটিভি/জেএম
মন্তব্য করুন