ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটের মুখে দেউলিয়া হওয়ার উপক্রম শ্রীলঙ্কার। লম্বা সময় ধরে চলে আসা দেশটির এই সংকট পৌঁছেছে চরমে। বিশ্ব দেখেছে দেশটির সরকার দলীয় কর্মীদের সঙ্গে সাধারণ মানুষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ।
এতদিন যে রাজপথ ছিল উত্তাল, সেই রাজপথে এখন চলছে এশিয়া কাপ জয়ের উল্লাস। দেশটির এমন উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে এমন একটা শিরোপা জেতা যে কতটা প্রয়োজন ছিল সেটা ঠিকই বুঝেছিল দাসুন শানাকা-ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গারা। অথচ, এই রাজনৈতিক আর আর্থিক সংকটের কারণে স্বাগতিক হয়েও এশিয়া কাপ আয়োজন করতে হয় সংযুক্ত আরব আমিরাতে।
এশিয়া কাপের ফাইনালে পাকিস্তানকে ২৩ রানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে মঙ্গলবার ভোরে কলম্বো পৌঁছানোর পর বিমানবন্দরেই উষ্ণ সংবর্ধনা দেওয়া হয় দলকে। বিমানবন্দরের বাইরে অপেক্ষায় ছিল হাজারো জনতা।
বিমানবন্দর থেকে বের হয়েই ছাদ খোলা দোতলা বাসে উঠে পড়েন শানাকারা। এরপর গোটা শহর প্রদক্ষিণ করেন, সঙ্গে ছিল হাজারো মানুষ।
লঙ্কানদের সংস্কৃতি ঢোল, বাদ্য বাজিয়ে অভিনন্দন জানানো হয় দলকে। ধীরে চলা বাস থেকে দলের সদস্যরা অটোগ্রাফ দিয়েছেন, হাত মিলিয়েছেন সমর্থকদের সঙ্গে।
অথচ, এই জায়গায় এসে দাঁড়াতে কতই না কষ্ট করতে হয়েছে দলটিকে। একদিকে দেশের সংকট, অন্যদিকে আসরের প্রথম ম্যাচেই আফগানিস্তানের কাছে হার। প্রথম ম্যাচে হেরে গিয়েও ঘুরে দাঁড়িয়ে হারিয়েছে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানের মতো কঠিন প্রতিপক্ষকে।
সেসব দুর্গম পথ মারিয়ে দিয়ে শানাকারা হাসি ফুটিয়েছেন গোটা দেশের মানুষের মুখে। এই একটা ট্রফিই হয়তো বদলে দেবে দেশটির মানুষকে, সংকটকে।
ফাইনাল ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় ভানুকা রাজাপাকসা ম্যাচ শেষে জানিয়েছিলেন এই ট্রফি দেশবাসীকে উৎসর্গ করার কথা।
‘একটি জাতি হিসেবে যে সংকটের মধ্যে আমরা আছি, তার মধ্যে এমন জয় সত্যিই দারুণ বলে মনে করি আমি। শ্রীলঙ্কানদের জন্য কঠিন সময় যাচ্ছে এবং আমরা খুশি। আমরা বিশ্বাস করি, তাদের মুখে হাসি ফোটাতে পেরেছি।’