ঢাকা

আফগানরা হোয়াইটওয়াশ, হ্যাটট্রিক সিরিজ জয় টাইগারদের

স্পোর্টস ডেস্ক, আরটিভি নিউজ

রোববার, ১৬ জুলাই ২০২৩ , ১০:৫০ পিএম


loading/img
ছবি- সংগৃহীত

আফগানিস্তানের দেওয়া সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা পেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু মুহূর্তের মধ্যেই ৩ উইকেট হারিয়ে বেশ চাপে পড়ে গিয়েছিল টাইগাররা। তবে সাকিব ও তাওহিদ হৃদয়ের সাবলীল ব্যাটিংয়ে ৬ উইকেটে সহজ জয় পেয়েছে স্বাগতিকরা। এই জয়ে আফগানদের হোয়াইটওয়াশ করার সঙ্গে টি-টোয়েন্টিতে টানা তিনটি সিরিজ জিতল লাল সবুজের দল। 

বিজ্ঞাপন

প্রথমে ব্যাট করতে নেমে তাসকিন, মোস্তাফিজ ও সাকিবের বোলিং তোপে ১৭ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে মাত্র ১১৬ রানেই আটকে যায় আফগানিস্তান। এরপর বৃষ্টি আইনে আফগানদের বিপক্ষে প্রথমবার সিরিজ জয়ের লক্ষ্যে মাত্র ১১৯ রানের সহজ লক্ষ্য পায় টাইগাররা। জয়ের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৬.১ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় সাকিব বাহিনী। 

এবছর ঘরের মাঠে শক্তিশালী ইংল্যান্ডকে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করে টি-টোয়েন্টিতে সিরিজ শুরু করেছিল বাংলাদেশ। তারপর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে জয় পায় টাইগাররা। এবার আফগানদের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজও ২-০ ব্যবধানে নিজেদের করে নিলো চণ্ডিকা হাথুরুসিংহের দল।

বিজ্ঞাপন

রোববার (১৬ জুলাই) সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বৃষ্টিবিঘ্নিত সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে আফগানদের দেওয়া ১১৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন টাইগার দুই ওপেনার লিটন দাস ও আফিফ হোসেন। তারা দুজনে ৯ ওভারে ৬৭ রান তুলে নিলে সহজ জয়ের পথেই ছিল স্বাগতিকরা। 

কিন্তু দশম ওভারে মাত্র ৩ বলের ব্যবধানে জোড়া উইকেট তুলে ম্যাচ ঘুরিয়ে দেন মুজিব-উর-রহমান। তার অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের বলে ব্যাট চালিয়ে এক্সট্রা কাভারে থাকা রশিদ খান ডানদিকে ডাইভ দিয়ে দারুণ ক্যাচ নিলে বিদায় নেন লিটন। বিদায়ের আগে ৩৫ বলে ৬ বাউন্ডারিতে ৩৫ রানে করেন উইকেটকিপার এই ব্যাটার।

এক বল পর আফিফ হোসেন করতে গেলেন স্লগ সুইপ। তবে মিডউইকেটে করিম জানাতের হাতে ধরা পড়েন তিনি। প্রথমবার ওপেন করতে এসে আফিফ করেছেন ২০ বলে ২৪ রান। ফলে ৯.১ ওভার উইকেটশূন্য থাকার পর ৩ বলে ২ উইকেট হারিয়ে ফেলে স্বাগতিকরা।

বিজ্ঞাপন

দলকে চাপ থেকে বের করার চেষ্টা করছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে পরের ওভারে আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের বলে ক্লিন বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। আউট হওয়ার আগে ৬ বলে ৪ রান করেন এই ব্যাটার। ফলে ৬৭ রানে উইকেটশূন্য থাকা বাংলাদেশ দল, ৭৬ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে কিছুটা ব্যাকফুটে চলে গিয়েছিল। 

বিজ্ঞাপন

তবে তাওহিদ হৃদয় ও অধিনায়ক সাকিব আল হাসান আগ্রাসী মেজাজে ব্যাট করে দলকে জয়ের পথে এগিয়ে নিয়ে যান। মাঝে দলীয় ১০৭ রানের মাথায় আজমতউল্লাহর দ্বিতীয় শিকার হয়ে হৃদয় বিদায় নেন। আউট হওয়ার আগে ১৭ বলে সমান ১টি করে চার-ছক্কায় ১৯ রান করেন। 

এরপর বাকি কাজটুকু শামিম পাটওয়ারীকে নিয়ে সারেন টাইগার কাপ্তান সাকিব। ফলে  সাকিবের ১৮ ও শামিমের ৭ রানে অপরাজিত ইনিংসে ৫ বল ও ৬ উইকেট হাতে রেখে জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। এই জয়ে দ্বিতীয়বারের মতো টানা তিন ম্যাচের সিরিজ জিতল স্বাগতিকরা। এর আগে ২০২১ সালে ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ে, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এই কৃতিত্ব অর্জন করেছিল টাইগাররা।

এর আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই তাসকিনের বোলিং তোপের মুখে পড়েন আফগানিস্তান। ফলে দলীয় ১৬ রানের মধ্যেই দুই ওপেনারের উইকেট হারায় তারা। ইনিংসের চতুর্থ বলেই ডাউন দ্য উইকেট এগিয়ে এসে তাসকিনকে ছক্কা হাঁকান গুরবাজ। তবে পরের বলেই নিজের বলে নিজেই ক্যাচ ধরেন তাসকিন। ফলে ৮ রানে গুরবাজকে ফিরিয়ে প্রথম ওভারেই ব্রেক থ্রু এনে দেন দেশসেরা এই পেসার।

এরপর তৃতীয় ওভারে তাসকিনের চতুর্থ বলটি অফ স্টাম্পের বাইরের গুডলেংথের লাফিয়ে ওঠা বলে হজরতউল্লাহ জাজাই খেলবেন কিনা তা ভাবতে ভাবতেই খোঁচা দিয়ে বসেন। যার সুবাদে উইকেটের পেছনে বাকি কাজটি সহজেই করেন লিটন দাস। জাজাইকে ৫ বলে ৪ রানে বিদায় করে নিজের টানা দুই ওভারে দুই ওপেনারকে ফেরান তাসকিন। ফলে পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে মাত্র ৩৪ রানেই থামতে হয় আফগানদের।

তবে অষ্টম ওভারের সময় বৃষ্টি শুরু হলে ঘণ্টাখানেক খেলা বন্ধ থাকে। এরপর বৃষ্টি থামলে খেলার দৈর্ঘ্য কমে ১৭ ওভারে নেমে আসে। তৃতীয় উইকেট জুটিতে ইব্রাহিম জাদরান ও মোহাম্মদ নবী চাপ সামলে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। তবে আগের ম্যাচে ফিফটি হাঁকানো নবিকে উইকেটের পিছনে লিটন দাসের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরান মুস্তাফিজ। বিদায়ের আগে ২২ বলে ১৬ রান করেন ডানহাতি এই ব্যাটার।

ফিজের শিকারের পরের ওভারে জোড়া উইকেট তুলে নেন সাকিব।১১তম ওভারের প্রথম বলে ইব্রাহিম জাদরানকে ২২ রানে আফিফের ক্যাচে ফেরানোর পর শেষ বলে নাজিবুল্লাহ জাদরানকে (৫) বোল্ড করে দেন টাইগার বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। এরপর ষষ্ঠ উইকেটে দারুণ এক জুটি গড়েন আজমতউল্লাহ ওমরজাই ও করিম জানাত। তাদের ২৯ বলে ৪২ রানের জুটিতে দলের সংগ্রহ এক শ’ ছাড়িয়ে যায়।

তবে শামিমের ক্যাচ বানিয়ে আজমতউল্লাহকে প্যাভিলিয়নের পথ ধরান ফিজ। বিদায়ের আগে ২১ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় ২৫ রান করেন এই অলরাউন্ডার। তাসকিনের করা ইনিংসের শেষ ওভারে দ্রুত রান তোলার তাড়ায় করিম জানাত উড়িয়ে মারলেও বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ দিয়ে বসেন। ফলে ১৫ সমান ১টি করে চার-ছক্কায় ২০ রান করেন এই ব্যাটার। ফলে শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ১৭ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১১৬ রান সংগ্রহ করে আফগানরা।

বোলিংয়ে চার ওভারে ৩৩ রানের বিনিময়ে ৩ উইকেট শিকার করেন তাসকিন। এ ছাড়া ২টি করে উইকেট পান মুস্তাফিজুর রহমান ও সাকিব আল হাসান। অলরাউন্ড পারফর্ম করা সাকিব ম্যাচ ও সিরিজ সেরা নির্বাচিত হয়েছেন। 

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন
Advertisement
Advertisement

Loading...


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |