ঢাকামঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫, ৩ আষাঢ় ১৪৩২

তরুণদের অভাবনীয় অংশগ্রহণে দেশব্যাপী ডিজিটাল ম্যাপিং: প্রতিমন্ত্রী

আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট

মঙ্গলবার, ২৩ জুন ২০২০ , ০১:০৮ পিএম


loading/img
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি বলেছেন, করোনা মহামারির শুরুর দিকে দেশব্যাপী ডিজিটাল ম্যাপিংয়ের লক্ষ্যে পরিচালিত ‘বাংলাদেশ চ্যালেঞ্জ’নামক ক্যাম্পেইনে তরুণদের অভাবনীয় অংশগ্রহণে এক লাখ ১০ হাজার লোকেশন গুগল ম্যাপ ও ওপেন স্ট্রিট ম্যাপে যুক্ত করা হয়েছে। 

বিজ্ঞাপন

অনলাইনে আয়োজিত সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে রোববার তিনি এ কথা বলেন।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ বাস্তবায়নাধীন এবং ইউএনডিপির সহায়তায় পরিচালিত এটুআই এবং গুগল-এর সমন্বয়ে বেসরকারি টেলিকম অপারেটর কোম্পানি গ্রামীণফোন এর উদ্যোগে আয়োজিত এই ক্যাম্পেইন সম্পন্ন হয়।

বিজ্ঞাপন

প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী আমাদের উপস্থাপিত ৫টি কন্টিনিউটি পরিকল্পনা খুব দ্রুততম সময়ে অনুমোদন করে দেন। নেত্রীর এই দূরদর্শী পদক্ষেপের কারণে আমরা প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ঘরে ঘরে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহের ব্যবস্থা করতে পেরেছি। প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সকল সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগ একত্রে কাজ করার সুযোগ তৈরি হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ইন্টারনেট প্যাকেজ সুবিধা চালু এবং বাংলাদেশের মেধাবী তরুণরা যেন অগমেন্টেড রিয়েলিটি সলিউশন ডেভেলপসহ গুগল এর প্রোডাক্ট উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে সেই সুযোগ প্রদানের জন্য গুগলের প্রতি আহ্বান জানান।

গুগল ম্যাপে ইতোমধ্যেই বাংলা ভাষার সুবিধা যুক্ত করেছে গুগল কর্তৃপক্ষ উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন শহর, উপশহরের পর এবার এদেশের তরুণরাই গ্রামের স্থাপনা ও রাস্তাকে গুগল ম্যাপে সংযুক্ত করেছে। আমি গ্রামীণফোন, গুগল, স্কাউটস এবং এটুআইকে ধন্যবাদ জানাই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য। এই ডিজিটাল ম্যাপিংকে কাজে লাগিয়ে ডিজিটাল সেবা প্রদানকারী সকল প্রতিষ্ঠানকে সেবা নিয়ে নাগরিকদের পাশে থাকার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, এই ম্যাপিং কার্যক্রম ভবিষ্যতে ডিজিটাল সকল কার্যক্রমে শহর ও গ্রামের ব্যবধান কমিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ অর্জনে সহায়তা করবে। প্রতিমন্ত্রী ম্যাপিং কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী সকল তরুণ ম্যাপারদের বিশেষ করে ধন্যবাদ জানান। 

বিজ্ঞাপন

এ কার্যক্রমে প্রায় ৩১,০০০ রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে এক লাখ ১০ হাজার ম্যাপ পোস্ট পাওয়া গেছে। অন্যদিকে ফেসবুকে ৮.৫ মিলিয়নের বেশি রিচ এবং ৯৬.৭ মিলিয়নের বেশি ইমপ্রেশন পাওয়া গেছে। তরুণরা তাদের বাড়িতে অবস্থান করে সামাজিক দূরত্বের বিধি মেনেই এই পুরো ম্যাপিং প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছে। 

বিজ্ঞাপন

ম্যাপিং কার্যক্রমে অবদানকারী শীর্ষ ১০০ জন তরুণকে গ্রামীণফোনের পক্ষ থেকে ২ মাসের জন্য ১০ জিবি (৫জিবি ৩০ দিন+৫জিবি ৩০ দিন) ইন্টারনেট প্রদান করা হয়েছে। অনলাইনে সমাপনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ক্রেস্টপ্রাপ্ত শীর্ষ ১০০ জন ম্যাপারের নাম ঘোষণা করেন। অন্যদিকে শীর্ষ ২০০ জন ম্যাপার এটুআই-এর ‘একশপ’ প্ল্যাটফর্মের সাথে কাজ করার সুযোগ পাবেন। সেইসাথে ৩১ হাজার রেজিস্টার্ড ম্যাপারের সবাইকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের পক্ষ থেকে ই-সার্টিফিকেট প্রদান করা হবে।

গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসির আজমান বলেন, শুরুতে আমরা গুগল ম্যাপ এবং ওপেন স্ট্রিট ম্যাপে হাসপাতাল, ফার্মেসি, স্কুল-কলেজ এবং মোবাইল রিচার্জ পয়েন্টসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোকে চিহ্নিত করতে পেরেছি। তবে এটি ভবিষ্যতে বিভিন্ন সেবার ক্ষেত্রে সমন্বয়ের সুযোগ তৈরি করবে। ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে শহরের সেবাগুলোকে প্রান্তিক মানুষের হাত পর্যন্ত পৌঁছে দিয়ে সমাজের বৈষম্য দূর করা সম্ভব হবে। এরকম সংকটকালীন মূহুর্তে জরুরি সেবা পৌঁছে দিতে এবং প্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে এরকম ভৌগলিক ম্যাপিং খুবই জরুরি। এই ম্যাপিং কার্যক্রমে আমাদের পাশে থাকার জন্য আমরা আমাদের সকল সহযোগী প্রতিষ্ঠানকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই।
এটুআই-এর পলিসি অ্যাডভাইজর আনীর চৌধুরী বলেন, সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারের ৩টি পিলারের মধ্যে ‘তারুণ্যের শক্তি’খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি পিলার। একাত্তরের মতো করেই এই ম্যাপিং কার্যক্রমে তরুণরাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে এগিয়ে এসেছে। তাদের এমন অভাবনীয় অংশগ্রহণ ছাড়া এতো অল্প সময়ে এই বিশাল ভৌগলিক ম্যাপের পয়েন্ট করা সম্ভব হতো না। এর মাধ্যমে ইতোমধ্যে ৫,০০০ হাসপাতাল, ১৬,০০০ ফার্মেসি এবং ২০,০০০ মুদি দোকান সন্নিবেশিত করার পাশাপাশি ৮৭০টি রাস্তা ম্যাপে যুক্ত হয়েছে। 

গ্রামীণফোনের হেড অব কমিউনিকেশনস খায়রুল বাশারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত অনলাইনে সমাপনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ স্কাউটস-এর সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, গুগলেরগভর্নমেন্ট অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড পাবলিক পলিসি লিড নিক বাওয়ের, প্রিনিয়র ল্যাবের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফ নেজামি, গুগল-এর রিজিওনাল হেড (সাউথ এশিয়া) ফারহান কুরেশী, অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া, অভিনেত্রী মারিয়া নূর, দুইজন ম্যাপার, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, এটুআই, গ্রামীণফোন-এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং গণমাধ্যমকর্মীরা। অনুষ্ঠানে ম্যাপাররা ম্যাপিং সম্পর্কিত তাদের অভিজ্ঞতার গল্পগুলো সবার সাথে শেয়ার করেন।

বাংলাদেশ স্কাউটস, এটুআই, গ্রামীণফোন, প্রিনিয়র ল্যাব, ইয়ুথ হাব এর আয়োজনে এই ক্যাম্পেইনকে সফল করতে সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে যুক্ত ছিলেন গুগল ডেভেলপার গ্রুপ, লোকাল গাইডস বাংলা, ইউএনডিপি, ওপেন স্ট্রিট ম্যাপ বাংলাদেশ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং উইমেন টেকমেকারর্স।
পি

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন
Advertisement
Advertisement

Loading...


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |