বছরের পর বছর বিভিন্নজনের কাছে ধরনা দিয়েও সেতু না পাওয়ায় অবশেষে নিজেদের উদ্যোগেই কাঠ-বাঁশের ২১০ ফুট দীর্ঘসেতু নির্মাণ করল এলাকাবাসী।
ঢাকার দোহার উপজেলার বটিয়া গ্রামে পদ্মা নদীর শাখা নদীতে নির্মিত এ সেতু বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়।
নদী পারাপারে ভোগান্তি লাঘব হওয়ায় উৎফুল্ল সুবিধাভোগী পাঁচ গ্রামের কয়েকহাজার মানুষ।
স্থানীয়রা জানান, বিগত ৩০ বছর ধরে এখানে ওখানে একটি স্থায়ী পাকা সেতুর দাবি করে আসছিল বটিয়া ও রাধারনগর গ্রাম সহ পাঁচ গ্রামের মানুষ। সেতু না থাকায় বাধ্য হয়ে নৌকায় পারাপারই ছিল একমাত্র ভরসা। সবচেয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হতো শিক্ষার্থীদের। বিভিন্ন পণ্য নিয়ে উপজেলা সদরের বাজারে আসতে যন্ত্রণা ছিল নৈমিত্তিক ঘটনা। রাতে অসুস্থ রোগী নিয়ে উপজেলা সদরের হাসপাতালে আসতে কষ্টের কোনও সীমা ছিল না। যে কারণে দীর্ঘসময় ধরে এখানে একটি সেতুর দাবি ছিল মানুষের মুখে মুখে।
সরকারিভাবে সেতু না পেয়ে বাধ্য হয়ে নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে টাকা সংগ্রহ করে স্বেচ্ছাশ্রমে তৈরি করে কাঠ-বাঁশের সেতু। তবে সরকারিভাবে এখানে একটি পাকা সেতু নির্মাণের দাবি এলাকাবাসীর।
কৃষ্ণদেবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সালমা ইয়াসমিন বলেন, আমি ১৯৯৭ সাল থেকে এই পথ দিয়ে যাতায়াত করি। নৌকা পার হয়ে হেঁটে স্কুলে যেতে কষ্ট হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষাক্ষেত্রে অনেক উন্নয়ন করে যাচ্ছেন। তিনি আমাদের এখানে একটি সেতু নির্মাণ করে দিলে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি সবাই উপকৃত হবে। অস্থায়ীভাবে একটু সেতু হওয়ায় আমাদের কষ্ট কিছুটা লাঘব হয়েছে তবে আমাদের দাবি স্থায়ী সেতু। যাতে যানবাহনে যাতায়াত করতে পারে সবাই।
বটিয়া গ্রামের বাসিন্দা মো. মানিক জানান, আমাদের উত্তর বটিয়া গ্রামের কেউ মারা গেলে একটি মরদেহ দাফনের জন্য এই খাল পাড় হতে যে কষ্ট করতে হতো তা ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়। একটি সেতুর অভাবে আমাদের আজ এত ভোগান্তি। বারবার জনপ্রতিনিধিদের বলেও কোন লাভ হয়নি তাই এলাকাবাসী উদ্যোগ নিয়ে এই কাঠ-বাঁশের সেতু নির্মাণ করেছি।
বটিয়া এলাকার বাসিন্দা দোহার পৌরসভা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি মো. সালাউদ্দিন ও ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর সভাপতি মো. আওলাদ হোসেন বলেন, বটিয়া-রাধানগর খালে একটি সেতুর দাবি এলাকার মানুষের প্রাণের দাবি। কিন্তু বিভিন্নজনের কাছে এ দাবি নিয়ে ধরনা দিয়ে যখন কোনও কাজ হয়নি। বাধ্য হয়েই আমরা নিজেরা উদ্যোগ নিয়ে এলাকাবাসীর সার্বিক সহযোগিতায় স্বেচ্ছাশ্রমে সেতুটি নির্মাণ করেছি। এতে অন্তত কিছুটা কষ্ট লাঘব হবে পাঁচ গ্রামের মানুষের।
আরও পড়ুন :
এসএস