বর্তমান সরকারের নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের উদীয়মান অর্থনীতির দেশের তালিকায় অনন্য এক নাম এখন বাংলাদেশ। এক সময়ের তলাবিহীন ঝুড়ির অপবাদ ঘুচিয়ে এখন উন্নয়নের রোল মডেলও বলা হচ্ছে এই বাংলাদেশকেই। স্বাধীনতার ৪৬ বছরে অর্জনের খাতে অনেক কিছুই যোগ হয়েছে। উন্নয়নের এই ধারাকে এখন টেকসই করতে চায় এ সরকার।
অর্থনীতির সব সূচক যখন ইতিবাচক, যখন রাজনীতিতে নেই কোনো অস্থিরতা, সামনে নির্বাচন, ঠিক তখনই এ ভোটকে সামনে রেখে নিজেদের পরিকল্পনা নতুন করে সাজাতে চায় সরকার। নিজেদের ক্ষমতায় দেখতে চায় আবারও।
সেই লক্ষ্যে আগামী ২০১৮-১৯ অর্থবছরের ‘জনগণের জন্য সুখবরের’ বাজেট নিয়ে আসছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে নিজের রেকর্ড ভেঙ্গে টানা দশমবার ও নিজের ১২তম বাজেট উপস্থাপন করবেন তিনি। এর মাধ্যমে ভোটারদের জন্য, জনগণের জন্য সুখবর দেবেন তিনি। তার এ বাজেট হবে দেশের ইতিহাসে ৪৭তম বাজেট ও রেকর্ড বাজেট।
--------------------------------------------------------
আরও পড়ুন : বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ তৈরির কাজ শুরু হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
--------------------------------------------------------
অর্থমন্ত্রী এমএ মুহিত বলছেন, আগামী বাজেটে নতুন করারোপ করা হবে না। ফলে জিনিসপত্রের দাম বাড়ানোর আশঙ্কা নেই। আমার দেয়া বাজেটের পরপরই গত ১০ বছরে কখনও জিনিসপত্রের দাম বাড়েনি। এবারও বাড়বে না। দেশবাসীর জন্যে এটি এবারের সুসংবাদ।
তিনি বলেন, বরং করমুক্ত আয়ের সীমা আড়াই লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে তিন লাখ টাকা করার প্রস্তাব আসতে পারে। বর্তমানে আয় অনুযায়ী শূন্য, ১০, ১৫, ২০, ২৫ ও ৩০ শতাংশ হারে আয়কর দিতে হয়। এবার ৫ কিংবা সাড়ে ৭ শতাংশ হারের আরেকটি নতুন কর স্তর রাখা হতে পারে।
এবারের বাজেটে ভ্যাটকে ৯ স্তর থেকে পাঁচ স্তরে নামিয়ে আনা হবে। সর্বোচ্চ হার হবে ১৫ শতাংশ। বর্তমানে ভ্যাটের হার নির্ধারণ করা আছে ১.৫, ২.৫, ৩, ৪, ৪.৫, ৫, ৬, ১০ ও ১৫ শতাংশ স্থরে।
আগামী বছর পাঁচ স্তর থেকে তিন স্তরে নামিয়ে আনা হবে। সিগারেট ও মোবাইল কোম্পানির জন্য করপোরেট ট্যাক্স ৪৫ শতাংশ অপরিবর্তিত থাকবে। এছাড়া ব্যাংকসহ লিস্টেড-আনলিস্টেড সব কোম্পানির ক্ষেত্রে করপোরেট ট্যাক্সের সর্বোচ্চ হার হবে ৩৭.৫ শতাংশ।
কর না বাড়লে রাজস্ব বাড়বে কীভাবে- এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের রাজস্ব আহরণকারী সংস্থা এনবিআরের লোকজনের মন মানসিকতায় পরিবর্তন হয়েছে। একইসঙ্গে আইনেও জটিলতা কমানো হয়েছে। তাই বেশি সংখ্যক মানুষ আয়কর দিচ্ছে। এ খাত থেকেই রাজস্ব বাড়বে। আমরা লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিলাম আয়কর রিটার্ন দাখিলকারীর সংখ্যা হবে ১৫-১৫ লাখ। কিন্তু সেটা ইতোমধ্যে ৩৩ লাখ ছাড়িয়েছে। এটা আগামীর জন্য খুব আশা জাগানিয়া বিষয়। আরও ভালো দিক হচ্ছে যে, নতুন করদাতাদের অধিকাংশই ইয়াং পিপল।
এমএ মুহিত বলেন, এবারের বাজেটের আকার চার লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকার কম বেশি হবে। প্রকৃত ফিগার আমি এই মুহূর্তে বলতে পারছি না। এত বড় অংকের এই বাজেট মোট দেশজ উৎপাদন-জিডিপির ২০ শতাংশের কিছু বেশি।
বাজেটে ১ লাখ ৭৩ হাজার কোটি টাকার মূল এডিপিসহ মোট উন্নয়ন খরচ ধরা হয়েছে ১ লাখ ৮০ হাজার ৮৬৯ কোটি টাকা। বাকি ২ লাখ ৮৭ হাজার ১৩১ কোটি যাবে বেতন ভাতা সুদ পরিশোধ সহ অন্যান্য অনুন্নয়ন খাতে।
অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, প্রতিবারের ন্যায় এবারও ডিজিটাল পদ্ধতিতে অর্থাৎ পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে বাজেট উপস্থাপন করা হবে।
বাজেট বক্তৃতা, বাজেটের সংক্ষিপ্তসার, বার্ষিক আর্থিক বিবৃতি, সম্পূরক আর্থিক বিবৃতি, মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি, বিকশিত শিশু : সমৃদ্ধ বাংলাদেশ, শিশু বাজেট ২০১৮-১৯, ডিজিটাল বাংলাদেশের পথে অগ্রযাত্রা : হালচিত্র ২০১৮, জলবায়ু সুরক্ষা ও উন্নয়নের লক্ষ্যে বাজেট প্রতিবেদন ২০১৮-১৯, জেন্ডার বাজেট প্রতিবেদন, সংযুক্ত তহবিলপ্রাপ্তি, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা-২০১৮, মঞ্জুরি ও বরাদ্দের দাবিসমূহ (পরিচালন ও উন্নয়ন), বিস্তারিত বাজেট (উন্নয়ন), মধ্যমেয়াদি বাজেট কাঠামো এবং রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানসমূহের ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেট সংক্ষিপ্তসার ওয়েবসাইটে প্রকাশসহ জাতীয় সংসদ থেকে সরবরাহ করা হবে।
আরও পড়ুন :
এসআর/জেএইচ