ধর্ষক লীগ বনাম ধর্ষক অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ: আরাফাত
ছাত্রলীগের ‘বিপথগামী’ যে ছেলেগুলো সিলেটে এবং নোয়াখালীতে ধর্ষণের মত জঘন্য অপরাধ করেছে, আওয়ামী লীগ তাদের নিন্দা করেছে, গ্রেপ্তার চেয়েছে, বিচার ও সাজা চেয়েছে। কিন্তু ‘ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিপীড়িত ছাত্রীর পাশে না দাঁড়িয়ে, বিভিন্ন কু-যুক্তি হাজির করে ধর্ষক এবং তার সহযোগীদের পাশে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী আরাফাত। সম্প্রতি তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার একাউন্টে এ সংক্রান্ত একটি পোস্ট দিয়েছেন।
গত শনিবার (১০ অক্টোবর) বিকেল ৩ টা ২৮ মিনিটে তিনি যে পোস্টটি ফেসবুকে দিয়েছেন তা হুবহু তুলে ধরা হলো-
‘ধর্ষক লীগ’ বনাম ‘ধর্ষক অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’
আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ সংগঠনের সকল নেতা এবং মাঠের কর্মী ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কর্মীরা, ছাত্রলীগের বিপথগামী যে ছেলেগুলো সিলেটে এবং নোয়াখালীতে ধর্ষণের মত জঘন্য অপরাধ করেছে, তাদের নিন্দা করেছে, তাদের গ্রেফতার চেয়েছে, বিচার চেয়েছে এবং সাজা চেয়েছে। আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ সংগঠনের সকলেই ধর্ষিত, নিপীড়িত নারীদের পাশে দাঁড়িয়েছে, কেউ ধর্ষকদের পাশে দাঁড়ায়নি বরং ধর্ষক পশুগুলোকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে। সিলেটের ঘটনায় ধর্ষক পশুগুলোকে আওয়ামী লীগেরই সত্যিকারের আদর্শ কর্মী বাবলা চৌধুরী প্রতিহত করেছে এবং ধরিয়ে দিয়েছে। ছাত্রলীগও নিজ সংগঠনের বিপথগামী সদস্যদের বিরুদ্ধে ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে, ধর্ষকের শাস্তি চেয়েছে।
আরও পড়ুনঃ
পাশের রুমের শিক্ষার্থীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কের অভিযোগ তুলে এনজিওকর্মীকে দলবেঁধে ধর্ষণ
ফখরুলের বাসায় ডিম-পাথর নিক্ষেপের ঘটনায় ১৩ নেতাকর্মী বহিষ্কার
মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত হলে ধর্ষকদের মধ্যে ভীতি থাকবে: কাদের
অন্যদিকে, ‘ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিপীড়িত নারীটির পাশে না দাঁড়িয়ে, বিভিন্ন কু-যুক্তি হাজির করে ধর্ষক এবং তার সহযোগীদের পাশে দাঁড়িয়েছে। ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কর্মীরা (আসলে বিএনপি-শিবির কর্মী) নিপীড়িত নারীটিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পাতায় পাতায় অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করেছে। নিপীড়িত নারীটির প্রতি সহানুভূতি তো দূরের কথা তাঁকে ‘বেশ্যা’, ‘পতিতা’ বিভিন্ন অশ্লীল ভাষায় গালি দিয়েছে -সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ঘাটলে এর ভুরি ভুরি প্রমাণ এখনও পাওয়া যাবে। আমি তো মনে করি নিপীড়িত একজন নারীকে বা যে কোন নারীকে যারা এরকম অশ্লীল ভাষায় গালি দিতে পারে ওরা নিজেরাও একেকজন বাদল- দেলোয়ার, একেকজন ধর্ষক।
তাহলে কী আওয়ামী লীগকে ‘ধর্ষক লীগ’ বলা যায়? না, ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদকে ‘ধর্ষক অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ বলা উচিৎ?
উল্লেখ্য, গত ২০ অক্টোবর রাজধানীর লালবাগ থানায় ও পরের দিন ২১ অক্টোবর রাজধানীর কোতয়ালী থানায় পৃথক দুইটি ধর্ষণ ও ডিজিটাল অ্যাক্টে মামলা দায়ের করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী। যে মামলায় ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন, যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল হাসান ও মো. সাইফুল ইসলাম, একই সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-সভাপতি নাজমুল হুদা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ হিল বাকির বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়। এরমধ্যে সাইফুল ইসলাম এবং নাজমুল হুদাকের গ্রেপ্তার দেখানোর পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আজ সোমবার ২ দিনের রিমান্ডে পেয়েছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) লালবাগ বিভাগ।
এদিকে দুই মামলার এজহারে নাম থাকা আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে ঢাবির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন ভুক্তভোগী সেই ছাত্রী।
কেএফ/ এমকে
মন্তব্য করুন