• ঢাকা শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
logo
বর্ণাঢ্য আয়োজনে কবি রেজাউদ্দিন স্টালিনের জন্মদিন উদযাপন
চট্টগ্রামে তারুণ্যের উচ্ছ্বাসের দিনব্যাপী কবিতা উৎসব ২২ নভেম্বর
‘চট্টগ্রাম কবিতার শহর’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বাচিক শিল্প চর্চা কেন্দ্র ‘তারুণ্যের উচ্ছ্বাস’-এর উদ্যোগে অষ্টমবারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘কবিতা উৎসব-২০২৪।’ চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে ইস্পাহানী টি লিমিটেড নিবেদিত দিনব্যাপী এ আয়োজন উৎসর্গ করা হয়েছে দেশবরেণ্য শিক্ষাবিদ ও ভাষাবিজ্ঞানী ড. মাহবুবুল হকের স্মৃতির প্রতি। সংগঠনটির এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা গেছে,  শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টায় কবিতা উৎসব উদ্বোধন করবেন একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক, দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক। উদ্বোধনী আয়োজনে তারুণ্যের উচ্ছ্বাস সভাপতি ভাগ্যধন বড়ুয়ার সভাপতিত্বে অতিথি থাকবেন চিটাগাং জুট ম্যানুফ্যাকচার কোম্পানি লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার সাহাবুদ্দীন আহমেদ, দেশের বরেণ্য আবৃত্তিকার অঞ্চল চৌধুরী, নাট্যজন ও সংগঠক স্বপন মজুমদার, সংস্কৃতিজন ডা. আলী আসগর চৌধুরী, সংস্কৃতিজন ও সংগঠক ডা. এস এম সারওয়ার আলম, সাংস্কৃতিক সংগঠক সজল চৌধুরী প্রমুখ।  সকালের আয়োজনে আবৃত্তি, কবিতা ও ছড়াপাঠ পরিবেশন করবেন দেশের বরণ্যে আবৃত্তিশিল্পী, কবি ও ছড়াকাররা। এদিন বেলা সাড়ে ১১টায় শতাধিক শিশুশিল্পীর অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হবে ‘শিশু প্রহর’। এতে শিশুদের কণ্ঠে থাকবে একক ও বৃন্দ পরিবেশনা। বৈকালিক আয়োজনের শুরুতে বিকেল ৩টায় রয়েছে কবিতার গান। বিকেল সাড়ে ৪টায় থাকবে ‘চট্টগ্রাম কবিতার শহর’ শিরোনামের কথামালা পর্ব। এ পর্বে অতিথি থাকবেন কবি ও সাংবাদিক বিশ্বজিৎ চৌধুরী, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব আবদুল মালেক (কবি মালেক মুস্তাকিম) এবং সম্মিলিত আবৃত্তি জোট চট্টগ্রাম-এর সভাপতি ফারুক তাহের। উৎসবে সন্ধ্যায় আবৃত্তি করবেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আমন্ত্রিত শিল্পীরা এবং কবিতা ও ছড়াপাঠে থাকবেন চট্টগ্রামে বসবাসরত দেশের নন্দিত কবি ও ছড়াকাররা।
কবি রেজাউদ্দিন স্টালিনের জন্মদিন উপলক্ষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুক্রবার 
গবেষণা-প্রবন্ধ রচনায় মাসে ৩০ হাজার টাকা বৃত্তি দেবে বাংলা একাডেমি
পুনর্গঠিত হলো কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের ট্রাস্টি বোর্ড
বিবিসি কালচারের জরিপে বছরের সেরা ১০ বই
Gen-z জীবন জয়ের গল্প ‘সব সম্ভব’
সাম্প্রতিক বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে দেশের তরুণ প্রজন্ম আবারও দেখিয়েছে, তারা কী করতে পারে। তরুণ বয়সটা সকল বৃত্ত ভাঙার। অসম্ভব জেনেও সেই কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ার। কোনো ব্যর্থতাকে ব্যর্থতা মনে না করার। বড় চিন্তা করার। ভালো চিন্তা করার। কারণ, সে বিশ্বাস করে, সম্ভবের নির্দিষ্ট কোনো সীমানা নেই। বাংলাদেশের Gen-Z প্রজন্ম বিশ্বাস করে— সব সম্ভব। এমনই শত তরুণের জীবন জয়ের গল্প নিয়ে সংকলন ‘সব সম্ভব’। প্রায় শতাধিক তরুণের জীবন জয়ের গল্প নিয়ে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন প্রকাশ করেছে বইটি।  বইটির নাম ভূমিকা পড়ে প্রশ্ন হতে পারে, কীভাবে বদলে গেল তাদের জীবন? একটি শিক্ষালয়—কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজ বদলে দিয়েছে তাদের জীবন। বান্দরবানে লামায় স্কুলটির অবস্থান। মেধার কোনো জাত নেই পাত নেই। সুযোগ পেলে যে কেউ নিজ গুণে বিকশিত হতে পারে—এই বিশ্বাস নিয়ে ২০০১ সালে বান্দরবানের প্রত্যন্ত এলাকায় কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ আল বোখারী মহাজাতক গড়ে তোলেন এ বিদ্যাপীঠ। মাত্র সাতজন  শিশুকে নিয়ে যাত্রা শুরু। বর্তমানে বাঙালিসহ ২২ জাতির আড়াই হাজারের বেশি শিক্ষার্থী ধ্যানে জ্ঞানে প্রযুক্তিতে আলোকিত মানুষ হয়ে গড়ে উঠছে এখানে। কারো হয়তো বাবা নেই, কারো মা নেই, কারো দুজনই নেই, আবার কারো বাবা-মা থেকেও আর্থিকভাবে অসহায়, কারো লেখাপড়ার পরিবেশ ছিল না—এমন অবস্থায় এই স্কুলে শিশুরা এসেছে চার কিংবা পাঁচ বছর বয়সে, নয়তো স্কুল জীবনের কোনো না কোনো ধাপে। আবার কেউ কেউ ভর্তি হয়েছে কলেজে। সেই শিশু বয়সেই তারা পেয়েছে নিয়মিত মেডিটেশন, ইয়োগা, লেখাপড়া, খেলাধুলা, শুদ্ধাচার চর্চার পাশাপাশি ‘জীবনে প্রথম’ হওয়ার ভাবনা বা মনছবি। এই স্কুলের ছোট্ট কোনো শিশুকে ‘বড় হয়ে তুমি কী হবে’ জিজ্ঞেস করলে, নিজের নামটা ঠিকমতো বলতে না পারলেও সে বলতে পারে—‘পথম’ (প্রথম) হবো। এই প্রথম হওয়ার মনছবির শক্তিতেই তারা আজ অধিকাংশ পড়ছে দেশের স্বনামধন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে। জাতীয় শিশু-কিশোর কুচকাওয়াজ প্রতিযোগিতায় প্যারেড ও ব্যান্ড বাদনে (২০১৫-২০১৯) টানা পাঁচ বার প্রথম হয়ে সারাদেশে নজর কেড়েছে। এছাড়াও ক্রীড়ানৈপুণ্যে দেশসেরা স্কুল হয়েছে পর পর চার বার (২০১৭-২০২০)। কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদের বলা হয় কোয়ান্টা। অর্থাৎ প্রত্যেকে একটা করে আলোকগুচ্ছ। এই বই পড়তে গিয়ে একজন পাঠক যেমন জীবন বদলে দেয়ার শতাধিক ঘটনা জানবেন, তেমনি পাবেন আমাদের দেশের প্রান্তিক মানুষের দৈনন্দিন সংগ্রামের বাস্তব চিত্র, তাদের আশা-নিরাশার গল্প। আর ঋণ, তামাক চাষ, মাদক, অবিদ্যা, কুসংস্কার, ডিজিটাল আসক্তির মতো সমাজের নানা অসঙ্গতির খন্ড খন্ড চিত্র। তাদের এই গল্পগুলোর নেপথ্যে উঠে আসবে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজের ২৩ বছরের ইতিহাস। কোয়ান্টামমের ইতিহাস। শূন্য থেকে শুরু করার ইতিহাস। অসম্ভবকে সম্ভব করার ইতিহাস। আসলে তিন দশক আগে সাধারণ মানুষের ভাবনারাজ্যে কোয়ান্টাম যে মানবিক মহাসমাজের বীজ বুনেছিল, তারই ক্রমবিকশিত রূপ এই কোয়ান্টামম এবং এই শিক্ষাঙ্গন। প্রিয় পাঠক, আপনি যে বয়সের হোন না কেন, তারুণ্যশক্তিকে অনুভব করবেন। আপনি অনুপ্রাণিত হবেন। নতুন শুরুর একটা তাগিদ পাবেন। এই তরুণদের প্রত্যেকের মতো আপনিও বলে উঠবেন—সব সম্ভব! এই বই দেশের বিভিন্ন স্থানে জন্ম নেয়া অবহেলিত অবস্থা থেকে সাফল্যের শীর্ষে যাওয়ার পথচলার গল্প উঠে এসেছে। প্রায় চারশো পৃষ্ঠার বইটি দাম রাখা হয়েছে পাঁচশ টাকা। অনলাইনে ও পাওয়া যাচ্ছে। এখন দেশে জনশক্তির বোনাসকাল অতিক্রম করছে। অর্থাৎ দেশে জনসংখ্যায় যুবশক্তি বেশি।  কিন্তু এখানে বলে রাখা প্রয়োজন অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে দেশে যদি সৎ, মানবিক ও ইতিবাচক উদার দৃষ্টিসম্পন্ন ভালো মানুষ না হয় তাহলে সত্যিকারের ভালো দেশ হয়ে ওঠা যাবে না। শারীরিক সুস্থতা, মানসিক সুস্থতা, আত্মিক সুস্থতা, সামাজিক সুস্থতা না থাকলে ভালো মানুষ হওয়া যায় না। ভালো মানুষ তৈরির জন্য এখন রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে উদ্যোগ নিতে হবে যুব সমাজকে দিয়ে। তাদেরকে সম্পূর্ণ সুস্থ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। তাই প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত টোটাল ফিটনেস বা সম্পূর্ণ সুস্থতা কারিকুলামে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।   অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির এ সময়ে আমাদের দেশের মানুষের মধ্যে দ্রুত বদলে যাওয়ার উত্তাপ লেগেছে। প্রযুক্তির প্রসার ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বদৌলতে অনেক মন্দ বা ক্ষতিকর কিছুতে সহজে মানুষ অভ্যস্ত হয়ে উঠছে। জীবন যাত্রার মান বাড়ার ফলে আমরা নিজেদের অনেক ঐতিহ্য আভিজাত্যও হারিয়ে ফেলছি। পারিবারিক শিক্ষা-দীক্ষায় শুদ্ধাচার, শিষ্টাচার নীতি নৈতিকতা হারিয়ে ফেলছি। প্রতিষ্ঠানে নীতি নৈতিকতা ও সৎ মানুষ বানানোর পরিবর্তে শুধু সনদ অর্জনই অন্যতম বিষয় হয়ে উঠেছে।  যতদিন এ দেশের দুঃখী মানুষ পেট ভরে খেতে না পারে, যতদিন অত্যাচার ও অবিচারের হাত থেকে তারা না বাঁচবে, যতদিন না শোষণমুক্ত সমাজ হবে, ততদিন সত্যিকারের মানবিক বাংলাদেশ হবে না।আআগেও বলেছি আমাদের দেশে এখন জনশক্তির বোনাসকাল (ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট) চলছে। অর্থাৎ এসময়ে মোট জনশক্তির মধ্যে তরুণ জনশক্তি বেশি। আমার বিশ্বাস, এই তরুণরাই বাংলাদেশ কে বদলাতে পারে , নিয়ে যেতে পারে সমৃদ্ধির শিখরে। এজন্য একসঙ্গে কাজ করতে হবে সবাইকে নিয়ে। বাংলাদেশের ঐতিহ্য, পারিবারিক-সামাজিক বন্ধন সবকিছুই তুলে ধরে। অর্থাৎ আমরা এক মহান জাতি ছিলাম, আমাদের এক মহান ইতিহাস ছিল। ফলে সমৃদ্ধ অর্থনীতির সাথে সাথে আমরা উন্নত মানবিক সম্পন্ন সুস্থ মানুষ হিসেবে পরিচয় অর্জন করবো। ভালো মানুষের সংজ্ঞা এখানে কয়েকটি লাইন তুলে ধরছি- ‘নীতি নৈতিকতাবান শুদ্ধাচারী মানুষই ভালো মানুষ। যা কিছু ভালো, যা কিছু কল্যাণকর তা-ই শুদ্ধ। যা কিছু মন্দ, যা কিছু অকল্যাণকর তাই অশুদ্ধ। যা কিছু সত্য, সুন্দর ও শুভ তা-ই শুদ্ধ। যা কিছু অসত্য, পঙ্কিল ও অশুভ তা-ই অশুদ্ধ। যা কিছু ন্যায় ও মানবিক তা-ই শুদ্ধ। যা কিছু অন্যায়, জুলুম ও অমানবিক তা-ই অশুদ্ধ। যা শুদ্ধ ও কল্যাণকর তা-ই ধর্ম আর অশুদ্ধ ও অকল্যাণকর তা-ই অধর্ম। কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের পক্ষে বইটি প্রকাশ করেছেন মায়িশা তাবাসসুম। প্রচ্ছদ শিল্পী শান্ত খিয়াং। মূল্য পাঁচশত টাকা। ছাড়কৃত মূল্য ২৫০ টাকা।সম্পাদনা করেছেন শরিফুল ইসলাম, উক্য এ মার্মা। প্রকাশকাল ২০২৪ সেপ্টেম্বর।
কিংবদন্তি কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন আজ
আজ ১৩ নভেম্বর। কিংবদন্তি ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, নাট্যকার, গীতিকার ও চলচ্চিত্র নির্মাতা কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ৭৬তম জন্মবার্ষিকী আজ। ১৯৪৮ সালের আজকের এই দিনে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে তার জন্ম।  ২০১২ সালের ১৯ জুলাই ক্যানসারের কাছে হার মানা হুমায়ূন পুলিশ কর্মকর্তা বাবা ফয়জুর রহমান আহমেদ ও মা আয়েশা ফয়েজের প্রথম সন্তান তিনি। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়।   হুমায়ূন আহমেদ বিংশ শতাব্দীর অন্যতম জনপ্রিয় বাঙালি কথাসাহিত্যিক। তাকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী অন্যতম শ্রেষ্ঠ ও জনপ্রিয় লেখক বলে গণ্য করা হয়। বাংলা কথাসাহিত্যে তিনি সংলাপপ্রধান নতুন শৈলীর জনক। অন্যদিকে তিনি আধুনিক বাংলা বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনির পথিকৃৎ। এক যুগ পরেও বাংলা সাহিত্যে তার সৃষ্ট কয়েকটি চরিত্র সাহিত্যপ্রেমী মানুষ এখনও স্মরণে রেখেছেন। মোহময় গদ্যে মধ্যবিত্ত শ্রেণির জীবন আখ্যানকে অসামান্য দক্ষতায় চিত্রিত করেছেন তিনি। বাংলা একাডেমির অমর একুশে বইমেলায় একক লেখক হিসেবে মৃত্যুর এখনও তার বই সর্বাধিক বিক্রি হয়। ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করার পর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ন এবং নর্থ ডাকোটা স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পলিমার রসায়ন শাস্ত্র অধ্যয়ন করেন। বিদেশে পড়াশোনা শেষে দেশে ফিরে এসে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে দীর্ঘকাল কর্মরত ছিলেন। পরবর্তীকালে লেখালেখি এবং চলচ্চিত্র নির্মাণের স্বার্থে অধ্যাপনা ছেড়ে দেন। ১৯৭২ সালে প্রকাশিত হয় হুমায়ূন আহমেদের প্রথম উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’। ১৯৭৪ সালে প্রকাশিত হয় দ্বিতীয় উপন্যাস ‘শঙ্খনীল কারাগার’। এই উপন্যাস দুটির কারণে তখনকার সাহিত্যবোদ্ধা মহলে বেশ প্রশংসিত হন তিনি। এরপর দীর্ঘ প্রায় ৫০ বছরের লেখকজীবনে নিজেকে বাংলা সাহিত্যের জনপ্রিয়তায় শীর্ষে নিয়ে যান। গল্প বলার অসামান্য ভঙ্গির কারণে ‘গল্পের জাদুকর’ হিসেবে তাকে গণ্য করা হয়। তার লেখা গল্প-উপন্যাসে মধ্যবিত্ত শ্রেণির জীবনধারার নিঃসংকোচ বর্ণনা পাওয়া যায়।  দুই শতাধিক উপন্যাস লিছেন হুমায়ূন আহমেদ। এর মধ্যে রয়েছে ‘জোছনা ও জননীর গল্প’, ‘দেয়াল’, ‘বাদশাহ নামদার’, ‘কবি’, ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’, ‘লীলাবতী’, ‘গৌরীপুর জংশন’, ‘নৃপতি’, ‘বহুব্রীহি’, ‘মধ্যাহ্ন’, ‘এইসব দিনরাত্রি’, ‘দারুচিনি দ্বীপ’, ‘নক্ষত্রের রাত’ ইত্যাদি। তাঁর সৃষ্ট চরিত্র ‘হিমু’ ও ‘মিসির আলী’ ব্যাপক আলোড়ন তোলে। সায়েন্স ফিকশন এবং কিশোর গল্প লিখেও তিনি দারুণ খ্যাতি অর্জন করেন। গল্প ও উপন্যাসের মতো হুমায়ূন নির্মিত নাটক ও চলচ্চিত্রও আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা পায়। ‘আজ রবিবার’, ‘এইসব দিনরাত্রি’, ‘বহুব্রীহি’, ‘অয়োময়’, ‘কোথাও কেউ নেই’, ‘নক্ষত্রের রাত’, ‘আগুনের পরশমণি’, ‘শঙ্খনীল কারাগার’, ‘শ্যামল ছায়া’, ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’, ‘দারুচিনি দ্বীপ’, ‘ঘেটুপুত্র কমলা’ তাঁর জনপ্রিয় নাটক ও চলচ্চিত্র। সাহিত্যে অবদানের জন্য হুমায়ূন আহমেদ একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, লেখক শিবির পুরস্কার, মাইকেল মধুসূদন পদকসহ অগণন পুরস্কার লাভ করেন। একাধিকবার পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও। হুমায়ূন আহমেদের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলা একাডেমি  কবি শামসুর রাহমান সেমিনারকক্ষে আজ বিকেল ৪টায় সেমিনারের আয়োজন করেছে। এতে স্বাগত বক্তব্য দেবেন সংস্কৃতি, পত্রিকা ও মিলনায়তন বিভাগের পরিচালক ড. সরকার আমিন। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন কথাসাহিত্যিক সালাহ উদ্দিন শুভ্র। আলোচনায় অংশ নেবেন অধ্যাপক আহমেদ মাওলা ও অধ্যাপক সুমন রহমান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম। আরটিভি/টিআই
বাংলা একাডেমির সভাপতি হলেন আবুল কাসেম ফজলুল হক
বাংলা একাডেমির সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন প্রাবন্ধিক, গবেষক, সাহিত্য সমালোচক ও সমাজ বিশ্লেষক আবুল কাসেম ফজলুল হক। আগামী তিন বছরের জন্য তাকে এ দায়িত্ব দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। আবুল কাসেম ফজলুল হক একাডেমিতে সেলিনা হোসেনের স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন। রোববার (২৭ অক্টোবর) সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপন থেকে এ তথ্য জানা যায়। এতে বলা হয়েছে, বাংলা একাডেমি আইন-২০১৩ অনুযায়ী কার্যভার গ্রহণের তারিখ থেকে তিন বছরের জন্য তাকে এই দায়িত্ব দেওয়া হলো। জীবনের চার দশক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে অধ্যাপনা করেছেন ৮৪ বছর বয়সী আবুল কাসেম ফজলুল হক। সর্বস্তরে বাংলা ভাষার ব্যবহার নিশ্চিতে সোচ্চার ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা রক্ষা কমিটি’র আহ্বায়ক তিনি।  সালের ৩ ফেব্রুয়ারি একাডেমির সভাপতি পদে দায়িত্ব পাওয়া কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ১৭ অক্টোবর পদত্যাগ করেন।   তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, ‘আমি এখনো চিঠি হাতে পাইনি। হয়তো আমার দপ্তরে পাঠিয়ে থাকতে পারে। তবে যারা আমাকে এই পদে মনোনীত করেছেন, তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। একই সাথে এটাও বলব, বাংলা একাডেমি আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক মননের জাতীয় প্রতিষ্ঠান।  কিছু সংকীর্ণ লোকজন এটি পরিচালনা করার কারণে ধীরে ধীরে দলীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছিল। আমাদের সবাইকে চেষ্টা করতে হবে। এটি যেন জাতীয় প্রতিষ্ঠান হয়ে থাকতে পারে এবং বাংলা একাডেমির যে কাজ, তা যেন করতে পারে।’ আবুল কাসেম ফজলুল হকের দুই সন্তান অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিন ও ফয়সল আরেফিন দীপন। শুচিতা শরমিন বর্তমানে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। ফয়সল আরেফিন দীপন জাগৃতি প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ছিলেন। ২০১৫ সালের ৩১ অক্টোবর দীপনকে হত্যা করে জঙ্গিরা। আরটিভি/এআর
বিশ্ব সাহিত্যকেন্দ্রে আজ মাহফুজামঙ্গল উৎসব 
৩৬ বছর পূর্তিতে কবি মজিদ মাহমুদ রচিত ‘মাহফুজামঙ্গল’ কাব্যগ্রন্থ নিয়ে সমধারা আয়োজন করছে ‘মাহফুজামঙ্গল উৎসব-২০২৪’। শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) বিকেলে বিশ্ব সাহিত্যকেন্দ্র ভবনের প্রধান মিলনায়তনে উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আজম। কবি, প্রাবন্ধিক ও গবেষক মজিদ মাহমুদকে নিয়ে এটি সমধারার দ্বিতীয় প্রয়াস। ২০১৭ সালে ‘মজিদমঙ্গল’ শিরোনামে একটি আলেখ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সমধারা। ২০২৪ সালে তিনি কবিতায় সমধারা সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।  উৎসব সূচিতে থাকছে- ‘মাহফুজামঙ্গল’ ৩৬ বছরের পাঠ প্রবন্ধ নিয়ে ‘মজিদ মাহমুদের বোধ ও মাহফুজামঙ্গল উদযাপন’ শিরোনামে সমধারার বিশেষ সংখ্যার পাঠ উন্মোচন ও মুক্ত আলোচনা। এ ছাড়া ‘মাহফুজামঙ্গল’ থেকে নির্বাচিত কবিতা নিয়ে আবৃত্তি প্রযোজনা ‘মাহফুজামঙ্গলনামা’ উপস্থাপন। প্রযোজনায় কবি মজিদ মাহমুদের সাহিত্যজীবন কর্মের পাশাপাশি মাহফুজামঙ্গল কাব্যগ্রন্থ থেকে ২৫টি কবিতা ও রবীন্দ্রসংগীত স্থান পেয়েছে। প্রযোজনায় বিশেষ শিল্পী হিসেবে অংশগ্রহণ করবেন কবি মজিদ মাহমুদ। গ্রন্থনা ও নির্দেশনায় রয়েছেন সমধারা সম্পাদক সালেক নাছির উদ্দিন। মজিদ মাহমুদ কবি, ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক ও অনুবাদক। তিনি সমকালীন বাংলা ভাষার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কবি ও চিন্তাশীল প্রাবন্ধিক হিসেবে বিবেচিত। মাহফুজামঙ্গল, বল উপাখ্যান, আপেল কাহিনিসহ বেশকিছু জনপ্রিয় কাব্যগ্রন্থের রচয়িতা তিনি। ‘মাহফুজামঙ্গল’ যেন সম্মোহিত অবস্থায় লেখা একটি কাব্যগ্রন্থ। বারবার পাঠের পর শিহরিত হতে হয়। পৃথিবী সৃষ্টির আদিলগ্ন থেকে এ মহাবিস্তারের সামনে দাঁড়িয়ে কবি এমন সব কথা উচ্চারণ করেছেন যা এক শাশ্বত প্রেম ও প্রার্থনার অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিন যুগ ধরে কাব্যগ্রন্থটি মনোযোগের কেন্দ্রে অবস্থান করছে। মজিদ মাহমুদের রচনা কমনওয়েলথ ফাউন্ডেশন, ইন্ডিয়ান রিভিউ, সিঙ্গাপুর আনবাউন্ডসহ দেশি-বিদেশি স্বনামখ্যাত জার্নাল ও পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়ে থাকে। ইংরেজি ছাড়াও ফরাসি, চায়না ও হিন্দি ভাষায় তার বই অনূদিত হয়েছে। তিনি ২০০৭ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত এশিয়ার নোবেলখ্যাত ম্যাগসাইসাই পুরস্কারের জুরি ছিলেন। তার আটটি গ্রন্থ লাইব্রেরি অব কংগ্রেসের মাধ্যমে বিশ্বের ২৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে সংরক্ষিত আছে। ইতোমধ্যে তার ২৩টি কাব্যগ্রন্থ, ২২টি প্রবন্ধ গ্রন্থসহ ৬০টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। মজিদ মাহমুদ সময়ের সন্তান। তিনি এই সময়ের, এই সমাজের, এই দেশের। ৩৬ বছর আগে রচিত তার অমর সৃষ্টি ‘মাহফুজামঙ্গল’ কাব্য। কাব্যরসিক বিদগ্ধজনরা ‘গত শতাব্দীর সর্বশেষ মঙ্গল কাব্য’ অভিধায় শনাক্ত করেছেন এ কাব্যকে।
‘বাংলা আমার’-এর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ‘প্রিয় পঙক্তিমালা’
সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘বাংলা আমার’-এর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘প্রিয় পঙ্ক্তিমালা’ অনুষ্ঠান।    শনিবার (১৯ অক্টোবর) বাংলাদেশ মহিলা সমিতির ড. নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে ‘প্রিয় পঙ্ক্তিমালা’ শিরোনামে অনুষ্ঠান আয়োজন করে সংগঠনটি।  অনুষ্ঠানে বাংলা আমার-এর আবৃত্তি, সঙ্গীত ও নৃত্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন এবং আমন্ত্রিত আবৃত্তিশিল্পীরা আবৃত্তি পরিবেশন করেন।  আলোচনা পর্বে সভাপতিত্ব করেন বাংলা আমার-এর উপদেষ্টা আবৃত্তিশিল্পী মজুমদার বিপ্লব, অতিথি হিসেবে ছিলেন আবৃত্তিশিল্পী রফিকুল ইসলাম, মাসুম আজিজুল বাসার এবং জনাব আলি আকবর। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠের সদস্য রঞ্জু নাহার মনি। বাংলা আমার-এর সভাপতি মেহেদী হাসান আকাশ বলেন, সুস্থ মানসিক বিকাশে সংস্কৃতি চর্চার কোনো বিপল্প নেই। নিয়মিত সংস্কৃতি চর্চার মানুষের মানবিক মূল্যবোধ তৈরি হয়। ‘বংলা আমার’ শিশু-কিশোর এবং বড়দের নিয়ে প্রায় ৭ বছর ধরে নিয়মিত সংস্কৃতি চর্চা করে চলেছে। দীর্ঘদিন ধরে আবৃত্তি অঙ্গনে একটা গুমট ভাব তৈরি হয়ে আছে। আজকের এই আয়োজন শুধু আবৃত্তি বা গান-নৃত্য পরিবেশনের জন্য না, এটি শিল্পীদের একটি মিলনমেলাও।    আমন্ত্রিত আবৃত্তিশিল্পী হিসেবে আবৃত্তি করেন সাজেদুল করিম সুজন, গাজী তরিকুল ইসলাম, হুর-এ-জান্নাত, মাহিনুর মুমু, পলি পারভীন, ঋতুরাজ ফিরোজ, রশিদ কামাল, মাহমুদা সিদ্দিকা সুমি, নাজমুল আহসান তরুণ, নাসিমা খান বকুল ও কাজী রাজেশ প্রমুখ।  এ ছাড়া বাংলা আমার-এর সদস্য দুলাল মাহমুদ, আবিদুর রহমান ফাহিম, মৃন্ময় চৌধুরী, তাহমিনা আক্তার ছবি, জুবায়ের হোসেন, লুৎফুন্নাহার সোনিয়া, আরিফা বেগম, কান্তা আরিফিন, তমালিকা রায় চৌধুরী, স্বর্ণলতা ঘোষ, লিপি সরকার প্রমুখও আবৃত্তি পরিবেশন করেন।  ক্ষুদে সদস্য হিসেবে ছিল মো. আনাস কবির, আরুষি রাজশ্রী গাইন, ফারওয়াহ ইসলাম মুনাদ, তাহরিম তারেক ইহান, আয়েশা জাবীন, ফাইজা ফারাহ আরিশা, ফাইরুজ লুবাবা, রিদওয়ানা আয়াত, জুন নুরাইন খান জামিয়া, সিয়ারা নূর দাহমা, সাফওয়ানা জাহান, শেখ মানহা মাহমুদ, আরিবাহ্ সিদ্দিক, শানুম জারিন, সামাইরা হক, আওসাফ আনোয়ার, আবু বকর, মিশেল মাহবিন সৌর্হাদ্য, শাহীদ কাউসারুল আনোয়ার, ফাতেমা আক্তার, তরু, রুয়াব, মহিমা, অথিন, তাহিফা জাহান তুবা, ফাবিহা তাসফিয়া, আশফিয়া হাবীব, জাহবিয়া হাবিব, মৈত্রী সরকার, আরাধ্যা সেনগুপ্ত, আলিজা হাসান, আবেদা যারীন, আয়মান ফারজানা আরিশা, নাজিফা তাসনিম রহমান, ইব্রা বিনতে মাহমুদ, জ্যাসিনা আয়াত মালিক, তাসফিয়া রহমান মানহা, অপরাজিতা সরকার, তহুরা সাফরিন রিদা, লিয়ানা, আবৃত্তি কুন্ডু, রাইয়ান আহসান, আয়ান জামান রুবাই, তাসকিন বিন মুশফিক, সাদিয়া তাসনিম সাফা, রিশান আহসান, রওশান আসফিয়া, সুহাদা মাঈনুল মানহা, ফারিহা আমিন, জান্নাতুল ফেরদৌস মিনহা, সাদ বিন মোস্তাফা, সাবাউন, উমাইযা মাহরীন প্রমুখ।  
ভাষাসৈনিক অধ্যাপক আবদুল গফুর অন্যায়ের প্রশ্নে ছিলেন আপসহীন
কিংবদন্তি ভাষাসৈনিক অধ্যাপক আবদুল গফুর ভাষা আন্দোলন ও সার্বভৌমত্বের আন্দোলনে সবসময় সামনে থেকে দৃঢ়তার সঙ্গে নেতৃত্ব দিয়েছেন। অন্যায়ের প্রশ্নে তিনি ছিল আপসহীন। দেশের যেকোনো ক্রান্তিকালে তার মতো মানুষকে জাতি আজীবন স্মরণ করবে। তমদ্দুন মজলিসের নেতৃত্বে ভাষা আন্দোলন করায় মামলা-হামলা-জুলুমসহ বহু নির্যাতনের শিকার হয়েও কখনো স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে মাথা নত করেননি। শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) বিকেল ৩টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম মিলনায়তনে মহান ভাষা আন্দোলনের সম্মুখ সারির সৈনিক প্রবীণ সাংবাদিক প্রয়াত অধ্যাপক আবদুল গফুরের জীবন ও কর্ম শীর্ষক সভা ও দোয়া মাহফিলে আগত বক্তারা এসব মন্তব্য করেন। আলোচকরা বলেন, অধ্যাপক আবদুল গফুরের মৃত্যুতে জাতির এমন ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব নয়। তার জীবন যাপন ছিল খুবই সাদাসিধে। সদা হাস্যোজ্বল আবদুল গফুর কাউকে আঘাত দিয়ে কথা বলতেন না। রব্বানী দর্শনের আদর্শ পালন করা আবদুল গফুর সারাজীবন বাঙালি জাতির মানুষের অন্তরে থেকে যাবে যুগ যুগ ধরে। তমদ্দুন মজলিসের সভাপতি অধ্যাপক ড. মুহাম্মাদ সিদ্দিকের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন সাবেক সচিব ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাবেক ডিজি আ জ ম শামসুল আলম, সাবেক কূটনীতিক ড. মসউদ মান্নান, বিশিষ্ট কবি ও সাংবাদিক আবদুল হাই শিকদার, তমদ্দুন মজলিসের সিনিয়র সহসভাপতি ড. মুহাম্মদ ঈসা শাহেদী, সাধারণ সম্পাদক মেজর (অব) জামিল আহমেদসহ কবি-সাহিত্যিক, লেখক-সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ-রাজনীতিবিদ ও বুদ্ধিজীবীরা। ভাষাসৈনিক অধ্যাপক আবদুল গফুর ১৯২৯ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার রাজবাড়ির দাদপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ২০২৪ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর সাত মাস। ১৯৪৫ সালে স্থানীয় মইজুদ্দিন হাই মাদরাসা থেকে মাধ্যমিক ও ১৯৪৭ সালে কবি নজরুল সরকারি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে ভর্তি হন। ভাষা আন্দোলন শুরু হলে আন্দোলনের একজন সক্রিয় কর্মী হিসেবে অংশগ্রহণ তিনি। তিনি ভাষা আন্দোলনের স্থপতি সংগঠন তমদ্দুন মজলিসের প্রতিষ্ঠাকালীন সংগঠক হিসেবে কাজ করে আমৃত্যু অভিভাবক পরিষদের সভাপতি হিসেবে কাজ করে গেছেন। সৈনিক পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন তিনি। ১৯৬২ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। পেশাজীবনে এই ভাষা দৈনিক ১৯৫৯ থেকে ১৯৬০ সাল পর্যন্ত তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের দারুল উলুমের (ইসলামিক একাডেমি) সুপারিনটেনডে হিসেবে কাজ করেছেন। পরে তিনি এক বছর চট্টগ্রামে জেলা যুবকল্যাণ অফিসার হিসেবে কাজ করেন। ১৯৬৩ থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত ফরিদপুরের সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ এবং ১৯৭২ থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত আবুজর গিফারী কাজে শিক্ষকতা করেন। মরহুম আবদুল গফুর ১৯৮০ থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রকাশনা পরিচালক ছিলেন। তিনি দৈনিক ইনকিলাবের ফিচার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ভাষা আন্দোলনে অবদান রাখার জন্য ২০০৫ সালে একুশে পদক পান। গুণী এ মানুষ দৈনিক মিল্লাত, দৈনিক আজাদ, দৈনিক দেশ, দৈনিক ইনকিলাব, ইংরেজি দৈনিক শিপন, দৈনিক নাস্তা পত্রিকায় কাজ করেছেন। আরটিভি/এএইচ-টি
বাংলা একাডেমির সভাপতির পদত্যাগ
বাংলা একাডেমির সভাপতি সেলিনা হোসেন পদত্যাগ করেছেন।  বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) তিনি পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করেছেন বলে জানিয়েছেন একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, আজ সেলিনা হোসেন পদত্যাগপত্রে সই করেছেন। তবে সভাপতির পদত্যাগপত্র গৃহীত হওয়ার একটা প্রক্রিয়া আছে, সেটি সম্পন্ন না হলে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে বলতে পারছি না যে, তিনি পদত্যাগ করেছেন। এটি যেহেতু প্রক্রিয়াধীন, তাই পদত্যাগপত্র গৃহীত হলে আমরা সবাইকে জানাবো। পদত্যাগের বিষয়ে সেলিনা হোসেন জানান, বাংলা একাডেমি থেকে কর্মকর্তারা তার বাসায় গিয়েছিলেন। তিনি কর্মকর্তাদের কাছে পদত্যাগপত্র সই করে দিয়েছেন। ২০২২ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন একাডেমির সভাপতি পদে ৩ বছরের জন্য নিয়োগ পান। ওই বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এর আগে, তিনি ৩৪ বছর চাকরিজীবন কাটিয়েছেন বাংলা একাডেমিতে। সেলিনা হোসেন কথাসাহিত্যিক, ঔপন্যাসিক, গবেষক এবং প্রাবন্ধিক। পাশাপাশি একাধিক মেয়াদে বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। উপন্যাসে অবদানের জন্য ১৯৮০ সালে ‘বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার’ পান। ২০০৯ সালে ভাষা ও সাহিত্যে ‘একুশে পদক’ এবং ২০১৮ সালে সাহিত্যে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’ পান। আরটিভি/এমএ