বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের কারণে দেশে বিচ্ছেদ বাড়ছে
দেশে বিয়ের হারের সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে বিবাহবিচ্ছেদের হার। আর এর পেছেনে সবচেয়ে বড় কারণ হিসেবে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক উঠে এসেছে।
এ বিষয়ে গত ৩১ জানুয়ারি ‘বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস–২০২২’ নামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস)।
জানা গেছে, সংস্থাটি এ জরিপে নমুনা হিসেবে তিন লাখের বেশি পরিবারের তথ্য নিয়েছে। জরিপ অনুযায়ী, ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে সাধারণ বিয়ের হার বেড়েছে। ২০২১ সালে হার ছিল ১৮ দশমিক ৫ শতাংশ আর ২০২২ সালে ২৫ শতাংশের কিছু বেশি। সাধারণ বিয়ের হার হিসেবে ১৫ বছর বা তার বেশি বয়সী প্রতি এক হাজার মানুষের মধ্যে ওই বছর যত জনের বিয়ে হয়েছে সেটাকে ধরা হয়েছে।
বিবাহ বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে বিবিএসের হিসাবে, ২০২১ সালে স্থূল বিচ্ছেদের হার ০ দশমিক ৬ থেকে ১ দশমিক ১ ছিল। ২০২২ সালে তা বেড়ে ১ দশমিক ৪ এ দাঁড়িয়েছে।
বিবিএস তালাক হওয়া মানুষের সাক্ষাৎকার নিয়ে জরিপ করেছে। এতে বলা হয়েছে, প্রায় ২৩ শতাংশ উত্তরদাতা তালাকের বড় কারণ বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ককে দায়ী করেছেন। এরপর রয়েছে ২২ শতাংশ দাম্পত্যজীবন পালনে অক্ষমতা। ভরণপোষণের ব্যয় বহন করতে অসামর্থ্য অথবা অস্বীকৃতি, পারিবারিক চাপ, শারীরিক নির্যাতন, যৌন অক্ষমতা বা অনীহা ইত্যাদিও রয়েছে তালাকের কারণের তালিকায়।
ঢাকা বিভাগে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের কারণে সবচেয়ে বেশি তালাক হয়েছে, আর কম হয়েছে ময়মনসিংহ বিভাগে। দাম্পত্যজীবন পালনে অক্ষমতায় তালাক বেশি বরিশালে, কম সিলেটে। ভরণপোষণ দিতে অসামর্থ্যতার কারণে তালাক বেশি রাজশাহীতে, কম চট্টগ্রামে। পারিবারিক চাপে তালাক বেশি ময়মনসিংহে, কম ঢাকায়। নির্যাতনের কারণেও তালাক বেশি হয়েছে ময়মনসিংহে, কম রাজশাহীতে। যৌন অক্ষমতা অথবা অনীহার কারণে রংপুরে তালাক বেশি হয়েছে। বরিশালে এ ক্ষেত্রে হার শূন্য। দীর্ঘদিন বিদেশে থাকায় তালাকের ঘটনা বেশি ঘটছে সিলেটে।
সংস্থাটি জানিয়েছে, বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন সাধারণত বেশি করেন নারীরা। ২০২২ সালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে মোট তালাক হয়েছে ৭ হাজার ৬৯৮টি। এর মধ্যে স্ত্রীরা আবেদন করেছিলেন ৫ হাজার ৩৮৩টি, যা মোট আবেদনের ৭০ শতাংশ। ঢাকা উত্তরের চিত্রও প্রায় একই। সেখানে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদনের ৬৫ শতাংশই নারী।
মন্তব্য করুন