রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশকে সমর্থন দিয়ে যাবে তুরস্ক
রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশকে অব্যাহতভাবে সমর্থন দিয়ে যাওয়ার আশ্বাস দিয়েছে তুরস্ক। একই সঙ্গে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক অন্যান্য ইস্যুতেও বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার আশ্বাস দিয়েছে দেশটি।
রোববার (৩ মার্চ) তুরস্কের আনতালিয়ায় দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদানের সঙ্গে বৈঠক করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। বৈঠকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্ব ইউরোপ শাখার মহাপরিচালক শাহ আহমদ শফী এবং তুরস্কে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম আমানুল হক উপস্থিত ছিলেন। সেখানেই নিজ দেশের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যুতে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন ফিদান।
বৈঠকে আনতালিয়া ফোরামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ফিরতি চিঠি হাকান ফিদানকে হস্তান্তর করেন হাছান মাহমুদ। একইসঙ্গে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে উপযুক্ত সময়ে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণও জানান তিনি।
এ সময় ড. হাছান মাহমুদ দুই দেশের মধ্যে চুক্তিভিত্তিক চাষাবাদের প্রস্তাব করেন। যেখানে বাংলাদেশি কৃষক ও বিশেষজ্ঞরা তুরস্কে মৌসুমি চাষ করবেন এবং ফলনের পর বাংলাদেশে ফিরে যাবেন।
তার এ প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান জানান, তুরস্ক বিষয়টি পরীক্ষা করবে এবং আগামী জুলাই মাসে ঢাকায় পররাষ্ট্র দপ্তরের পরবর্তী পরামর্শের সময় এটি নিয়ে আলোচনার সুযোগ রয়েছে।
এ সময় তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানকে দেওয়া প্রশংসাপত্রের জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে এবং ফোরামে উপস্থিতির জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান ফিদান। পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করা ও রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে তার দেশের অব্যাহত সমর্থনেরও আশ্বাস দেন।
এ ছাড়া ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি নৃশংসতা বন্ধ করতে এবং আরব দেশগুলোর সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে তুরস্কের আরও বৃহত্তর ভূমিকা কামনা করেন ড. হাছান মাহমুদ। বৈঠকে উভয় নেতা আশা প্রকাশ করেন যে, ইউক্রেনের যুদ্ধ শিগগিরই শেষ হবে এবং জ্বালানি, এলএনজি ও ফসলের দাম কমবে, যা এখন উভয় দেশের পাশাপাশি উন্নয়নশীল বিশ্বের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
বৈঠকে তুরস্কের স্বাধীনতার শতবর্ষ এবং বাংলাদেশ ও তুরস্কের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উপলক্ষ্যে হাকান ফিদানকে অভিনন্দন জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তুরস্কের জাতির পিতা কামাল আতাতুর্কের সংগ্রাম থেকে শক্তিশালী অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন এবং দুই ভ্রাতৃপ্রতিম জাতির বন্ধুত্বের উষ্ণ বন্ধন প্রতিনিয়ত দৃঢ়তর হচ্ছে।
মন্তব্য করুন