প্রীতি উরাংয়ের মৃত্যুর ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চেয়ে বিবৃতি
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে গত ৬ ফেব্রুয়ারি একটি বহুতল ভবনের নয় তলা থেকে প্রীতি উরাং নামের ১৫ বছরের এক শিশু গৃহকর্মীর মৃত্যু হয়। নিহত শিশু ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হকের বাসায় গৃহশ্রমিক হিসেবে কর্মরত ছিল। প্রীতি উরাংয়ের মৃত্যুর ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত ও ন্যায়বিচার চেয়ে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ২৫ বিশিষ্ট নাগরিক।
বুধবার (৬ মার্চ) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা এই দাবি জানান। এতে বলা হয়, প্রীতি উরাং নিহত হওয়ার পর স্থানীয়রা প্রীতিকে হত্যা করা হয় অভিযোগ করে এলাকায় বিক্ষোভ করে। ৭ ফেব্রুয়ারি প্রীতি উরাং এর বাবা লোকেশ উরাং মোহাম্মদপুর থানায় সৈয়দ আশফাকুল হক ও তার স্ত্রীকে আসামি করে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় সৈয়দ আশফাকুল হক ও তার স্ত্রী বর্তমানে কারাগারে আছেন।
২০২৩ সালের ৬ আগস্ট সৈয়দ আশফাকুল হকের বাসার ৭ বছর বয়সী অপর এক শিশু গৃহশ্রমিক ফেরদৌসী একইভাবে একই ভবনের ৯ তলা থেকে পড়ে প্রাণে বাঁচলেও তাকে পঙ্গুত্ব বরণ করতে হয়েছে। এই ঘটনায় মামলা হলেও আসামি সৈয়দ আশফাকুল হক এবং তার স্ত্রী মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, একই বাসায় স্বল্প সময়ের ব্যবধানে পরপর দু’শিশুশ্রমিকের হতাহতের ঘটনা উদ্বেগজনক। হত দরিদ্র প্রান্তিক চা শ্রমিকের পরিবারের পক্ষে সমাজের প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে মামলা পরিচালনা করা অতি দূরূহ ব্যাপার। এই ঘটনায় সঠিক ও প্রভাবমুক্ত তদন্ত ও ন্যায়বিচারের লক্ষ্যে রাষ্ট্র ও নাগরিক সমাজের দৃষ্টি থাকা প্রয়োজন। আমরা প্রীতি উরাংয়ের মত্যুর ঘটনায় সুষ্টু তদন্ত ও ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন- মানবাধিকার কর্মী ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে. চৌধুরী, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সভাপতিমণ্ডলির সদস্য রামেন্দু মজুমদার, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলী, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত।
এছাড়াও বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম, বাংলাদেশ কৃষক সমিতির সভাপতি এস.এম.এ সবুর, মানবাধিকার কর্মী খুশী কবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম. এম. আকাশ, অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী পারভেজ হাসেম, জাতীয় শ্রমিক জোটের কার্যকরী সভাপতি আবদুল ওয়াহেদ, সংস্কৃতি কর্মী এ কে আজাদ, গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক অ্যাডভোকেট জীবনানন্দ জয়ন্ত, বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. নুর মোহাম্মদ তালুকদার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ফারহা তানজীম তিতিল, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের কোষাধ্যক্ষ মেইনথিন প্রমীলা, কেন্দ্রীয় সদস্য দীপায়ন খীসা, ইমারত নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়ন বাংলাদেশের (ইনসাব) সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, খেলাঘরের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল কবির, লেখক ও গবেষক প্রিসিলা রাজ এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগের (বিসিএল) সভাপতি গৌতম শীল।
মন্তব্য করুন