‘জয়া আলোকিত নারী’ সম্মাননা পেলেন ৮ মহীয়সী
বর্ণাঢ্য আয়োজনে দশম বারের মতো অনুষ্ঠিত হলো ‘আরটিভি জয়া আলোকিত নারী সম্মাননা ২০২৪’। বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) সন্ধ্যায় রাজধানীর প্যান-প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে সমাজের বিভিন্ন শাখায় যেসব মহীয়সী নারী দীর্ঘদিন ধরে সফলতার সঙ্গে সেবা ও উন্নয়নমূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন, তাদের মধ্য থেকে ৮ জন মহীয়সী নারীর হাতে তুলে দেওয়া হয় সম্মাননা পদক।
সম্মাননা প্রাপ্তরা হলেন- নারী মুক্তিযোদ্ধা রওশন জাহান সাথী, সংগীত ব্যক্তিত্ব চন্দনা মজুমদার, শিল্প ও সাহিত্যে জান্নাতুল ফেরদৌস, নারী উদ্যোক্তা নাজমুন নাহার রীনা, অনুজীববিজ্ঞানী ড. সেঁজুতি সাহা, চ্যালেঞ্জিং পেশায়ফাতেমা-তুজ-জোহরা, সমাজসেবায় আলেয়া বেগম, ইনফ্লুয়েন্সার মুনজারিন শহীদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘নারীর জাগরণ, ক্ষমতায়ন ও কর্মপরিবেশ সৃষ্টিতে বর্তমান সরকার ব্যাপকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আরটিভির এই আয়োজন সেই ধারাবাহিকতাকে আরও বেগবান করবে। সমাজের সর্বস্তর থেকে এভাবে নারীদের অবদানের স্বীকৃতি আসতে থাকলে তার সুফল পরিবার ও সমাজই সবার আগে পাবে।’
তিনি বলেন, ‘নারী জয়ী হলে জয়ী হবে সবাই’। অনেকেই বলেন কী দরকার একটা দিন কেনো নারী দিবস হিসেবে পালন করতে হবে। আসলে প্রতিদিনই নারী-পুরুষ দিবস। কিন্তু যদি আমরা একটি বিশেষ দিনে নারীর আবদান, নারীর ত্যাগ, নারীর শক্তি, নারীর সাহস, নারীর প্রতি বৈষম্য, নারীর জন্য যে দেয়াল সামাজিক, পারিবারিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে যদি কথা বলতে পারি সে জন্য একদিন দরকার হয়। ৮ মার্চ সেই দিন।
দীপু মনি আরও বলেন, এই বিশেষ দিনে একজন নারীকে স্মরণ করতে চাই। তিনি বাংলাদেশে নারীকে এগিয়ে দিয়ে প্রতিবন্ধকতা দূর করার চেষ্টা করছেন নিরলসভাবে। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আরটিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব হুমায়ুন কবির বাবলু বলেন, অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতায় দিবসটি পালন করছে বিভিন্ন সংগঠন ও মিডিয়া। বিশেষভাবে এই দিনটিকে উদযাপন করা হয় নারীর প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা নিবেদনের গুরুত্বকে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্য। আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে যথাযথ শ্রদ্ধা ও গুরুত্বের সঙ্গে পালনে আরটিভিও পিছিয়ে নেই।
নারী দিবসে সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন আরটিভির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আশিক রহমান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এমনই একটি দেশ যেখানে প্রধানমন্ত্রী নারী, স্পিকার নারী, আমাদের প্রধান অতিথিও (দীপু মনি) একজন নারী। বাংলাদেশ এমন একটি দেশ যেখানে সব ক্ষেত্রে নারীর অবদান অতুলনীয়। শিক্ষা ক্ষেত্রে, কৃষি ক্ষেত্রে, শিল্প-কারখানা সব জায়গায় নারীরা এগিয়ে যাচ্ছে সমান তালে। তারপরেও কিছু জায়গায় নারীরা বিভিন্নভাবে হয়রানির ও সাইবারবুলিংয়ের শিকার হচ্ছেন। এসব বিষয়ে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে।
তিনি বলেন, আরটিভি মনে করে, যে সকল নারীর অবদান সমাজে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে তাদেরকে যথাযোগ্য মর্যাদায় তুলে ধরা আমাদের কর্তব্য। যাতে করে তাদের সফলতা দেখে সমাজের অন্যরা ভালো কাজের প্রতি অনুপ্রাণিত হয়। আরটিভি শ্রদ্ধা নিবেদন করছে পৃথিবীর সকল মহীয়সী নারীকে।
এ সময় তিনি জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন এসএমসি এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর কাজী আমিরুল হক, এসএমসি এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সায়েফ নাসির, এসএমসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তসলিম উদ্দিন খান, জয়া স্যানিটারি ন্যাপকিনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর চিত্রনায়িকা নুসরাত ফারিয়া, আরটিভির ভাইস চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দিন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে কবিরুল ইসলাম রতনের কোরিওগ্রাফিতে চিত্রনায়িকা তমা মীর্জা ও আসাদ খানের কোরিওগ্রাফিতে চিত্রনায়িকা প্রার্থনা ফারদিন দীঘি দলীয় নৃত্য পরিবেশন করেন। কণ্ঠশিল্পী কণা ও মেহরাবের কণ্ঠে ছিল একটি দ্বৈত সংগীত। বুলবুল টুম্পার কোরিওগ্রাফিতে ছিল ৮ জন বিশিষ্ট নারী সাহিত্যিকের ওপর ক্যারেক্টারকিউ।
অনুষ্ঠানে অতিথিরা মনোনীতদের হাতে পদক তুলে দেন।
অনুষ্ঠানটির উপস্থাপনায় ছিলেন শ্রাবণ্য তৌহিদা ও ইমতু রাতিশ।
মন্তব্য করুন