যেভাবে ‘ঢালী সিন্ডিকেট’ গড়ে তোলেন সহজের পিয়ন মিজান
ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি চক্রের অন্যতম হোতা সহজ ডটকমের পিয়ন মো. মিজান ঢালীসহ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। মিজানের নেতৃত্বে ‘ঢালী সিন্ডিকেট’ নামে এই চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি করে আসছিল।
শুক্রবার (২২ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) রাতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর কমলাপুর ও সবুজবাগ এলাকা থেকে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি চক্রের ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, ‘ঢালী সিন্ডিকেট’-এর মূলহোতা মো. মিজান ঢালী (৪৮), মো. সোহেল ঢালী (৩০), মো. সুমন (৩৯), মো. জাহাঙ্গীর আলম (৪৯), মো. শাহজালাল হোসেন (৪২), মো. রাসেল (২৪), মো. জয়নাল আবেদীন (৪৬), মো. সবুর হাওলাদার (৪০) ও নিউটন বিশ্বাস (৪০)। তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টিকিট, আটটি মোবাইল ফোন, একটি এনআইডি, একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স, কালোবাজারির বিভিন্ন আলামত এবং টিকিট বিক্রির নগদ ১১ হাজার ৪২২ টাকা জব্দ করা হয়েছে।
খন্দকার আল মঈন বলেন, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি করে আসছিল। ঢালী সিন্ডিকেটের মূলহোতা হলো সহজ ডটকমের পিয়ন মো. মিজান ঢালী। তিনি দীর্ঘদিন ধরে রেলওয়ের টিকিট বুকিংয়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। সবশেষ ২০২০ সালে রেলওয়ে টিকিটের চুক্তি সহজ ডট কমকে দেওয়া হলে সেখানেও পিয়ন হিসেবে মিজানের চাকরি বহাল থাকে। চাকরির সুবাদে দেশব্যাপী বিভিন্ন স্টেশনের সহজ ডটকমের অফিসে এবং বড় বড় রেলওয়ে স্টেশনের কর্মচারীদের সঙ্গে মিজানের পরিচিতি বৃদ্ধি পায়। যার সূত্র ধরে তিনি বিভিন্ন স্টেশনে থাকা সহজ ডটকমের সদস্য, টিকিট কাউন্টার ও অন্যান্য কালোবাজারি চক্রের সদস্যদের সমন্বয়ে কারসাজির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ টিকিট বিক্রি করতেন।
তিনি বলেন, সহজ ডটকমের কমলাপুর রেলস্টেশন সার্ভার রুমের সার্ভার অপারেটর নিউটন বিশ্বাস, স্টেশন রিপ্রেজেন্টেটিভ সবুর হাওলাদার এবং পলাতক আব্দুল মোত্তালিব, আশিকুর রহমানসহ আরও কয়েকজন টিকিট কালোবাজারির সঙ্গে জড়িত। ঈদ, পূজা ও সাপ্তাহিক ছুটিসহ বিশেষ ছুটির দিনকে উপলক্ষ্য করে মিজান ও সোহেল কারসাজির মাধ্যমে বেশি টিকিট সংগ্রহ করতেন। প্রতি বছর ঈদ মৌসুমে তারা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে প্রায় ২-৩ হাজার টিকিট কালোবাজারির মাধ্যমে বিক্রি করতেন। এবারও তারা ঈদের আগে বেশি টিকিট সংগ্রহের পরিকল্পনা করছিলেন।
র্যাবের মুখপাত্র বলেন, টিকিট বিক্রির অর্থ দুইভাগ করে ৫০ শতাংশ সহজ ডটকম ও রেলস্টেশনের টিকিট কাউন্টার ম্যানরা পেতেন এবং বাকিটা সিন্ডিকেটের মূলহোতা মিজান, সোহেলসহ তাদের সহযোগীদের মাঝে ভাগাভাগি হতো। এভাবেই পরস্পরের যোগসাজশে তারা দীর্ঘদিন ধরে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি করে আসছিলেন।
মন্তব্য করুন