তরুণীকে শিকলে বেঁধে ২৫ দিন সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ৪
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের একটি বাসায় তরুণীকে শিকলে বেঁধে ২৫ দিন সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণের অপরাধে নারীসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সোমবার (১ এপ্রিল) সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন ডিসি এইচএম আজিমুল হক।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- সান (২৬), হিমেল (২৭) ও রকি (২৯) ও সালমা ওরফে ঝুমুর (২৮)।
ডিসি এইচএম আজিমুল হক বলেন, ৯৯৯ এর কল পেয়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের নবীনগর হাউজিংয়ের একটি বাসা থেকে শিকলবন্দি অবস্থায় তরুণীকে উদ্ধার করে পুলিশ।
ভুক্তভোগী তরুণীর বরাত দিয়ে তিনি বলেন, পারিবারিক সমস্যার কারণে ওই তরুণী তার বড় বোনের বাড়িতে থাকতো। ওই সময় তার বোনের স্বামী মাসুদ নামের এক ব্যারিস্টারের সঙ্গে পরিচয় করান। এরপর ব্যারিস্টার মাসুদের সঙ্গে লিভ টুগেদার করতেন তিনি। মাসুদ বিদেশ থাকতো, মাঝে মাঝে দেশে এসে তার সঙ্গে থাকতো। পরে প্রবাসীর স্ত্রী সালমা ওরফে ঝুমুরের সঙ্গে পরিচয় করান মাসুদ। এরপর ভুক্তভোগী তরুণী ঝুমুরের নবীনগরের ভাড়া ফ্ল্যাটে ওঠেন। ভুক্তভোগী তরুণী ও সালমা রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াতো। সে সময় আসামি সানের সঙ্গে ওই তরুণীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ফলে হিমেল ও সান ভিকটিমের বাসায় নিয়মিত আসা-যাওয়া করত। বিষয়টি মাসুদ জানার পর সে তরুণীকে শিক্ষা দিতে হবে বলে সালমাকে জানায়। এরপর মাসুদ সালমাকে ওই তরুণীকে আটক করে তার পর্ন ভিডিও ধারণ করতে বলে। আর সালমা এই ভিডিও হিমেল, সান ও রকির সঙ্গে শেয়ার করতো। এরপর গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ওই তরুণীর বাসায় আসামি সান তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে গোপন ক্যামেরা স্থাপন করে ভিডিও ধারণ করে।
গত ৫ মার্চ আসামিরা ভুক্তভোগীর বাসায় এসে তার হাত-পা বেঁধে মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে দেয়। কিছুক্ষণ পর হিমেল ওই নারীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। আসামিরা ভুক্তভোগী নারীর হাতে ও পায়ে শিকল লাগিয়ে রুমের দরজা ও বাথরুমের দরজার সঙ্গে আটকে রাখে। এরপর গত ৭ মার্চ রাতে আসামি রকি ওই নারীকে ধর্ষণ করে। এরপর গত ৮ মার্চ আসামিরা ভুক্তভোগী নারীকে বিভিন্ন পর্ন ভিডিও দেখায়। সে অনুযায়ী ওই নারীকে একই কাজ করতে বাধ্য করে। আসামিরা ওই নারীকে প্রতিদিন ধর্ষণ করে সেই ভিডিও আসামি সালমা ব্যারিস্টার মাসুদের নিকট পাঠাতো।
গত ২৯ মার্চ বাসায় কেউ নেই বুঝতে পেরে ওই তরুণী জানালা দিয়ে চিৎকার দেয়। এতে এক পথচারী জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল দিয়ে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশকে সংবাদ দেয়। পরে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ তাকে শিকল বাঁধা অবস্থায় ওই ভবনের চারতলার একটি ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করে ও আলামত সংগ্রহ করে। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে(ওসিসি) চিকিৎসাধীন আছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মৃত্যুঞ্জয় দে সজল, সহকারী পুলিশ কমিশনার আজিমুল হক।
মন্তব্য করুন