• ঢাকা রোববার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১
logo

‌‘দেশের ৭৩ শতাংশ মানুষ পুষ্টিকর খাবার পায় না’

আরটিভি নিউজ

  ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৩০
‌‘দেশের ৭৩ শতাংশ মানুষ পুষ্টিকর খাবার পায় না’
ছবি : সংগৃহীত

দেশের ৭৩ শতাংশ মানুষ পুষ্টিকর খাবার পায় না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. নাসিরুজ্জামান।

সোমবার (২৯ এপ্রিল) বরিশালের একটি হোটেলে আয়োজিত পুষ্টিখাতে অর্থায়ন শীর্ষক সংলাপে এ কথা জানান তিনি।

নাসিরুজ্জামান আরও বলেন, জরিপ বলছে দেশের ৩৬ শতাংশ মানুষ খর্বাকার। ৭৩ শতাংশ মানুষ পুষ্টিকর খাবার পায় না। পুষ্টি বলতে সাধারণত মানুষ বুঝে থাকে মাছ, মাংস, দুধ ও ডিমকে। কিন্তু শাকসবজিতেও যে পুষ্টি রয়েছে তার ধারণা নেই।

তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের আয় কমে যাচ্ছে। এতে অনেকেরই ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে। আমরা যদি নিজেদের পুষ্টির উৎপাদন ব্যবস্থা করতে পারি তাহলে বেশি মূল্যে বাজার থেকে পুষ্টিকর খাবার কিনতে হবে না। বিকল্প হিসেবে পারিবারিক পুষ্টি কৃষির মডেল তৈরি করতে হবে। পুষ্টিকর খাবার উৎপাদনে নিজেদের পতিত জমিতে পুষ্টিকর সবজি চাষ করা গুরুত্বপূর্ণ। নয়তো ভবিষ্যতে আমাদের জন্য দুঃসংবাদ অপেক্ষা করছে।

কৃষি ব্যাংকের চেয়ারম্যান বলেন, দেশের মোট কৃষকের ৪৮ শতাংশ বর্গা চাষি। তারা সাধারণত জমিতে কৃষি বলতে ধান চাষ আর কলাগাছ রোপনকে বোঝেন। এর পাশাপাশি পুষ্টিকর সবজি উৎপাদনে জোর দিতে হবে।

পুষ্টি কৃষিতে সরকারের চেয়ে বেসরকারি বিনিয়োগ কার্যকর উল্লেখ করে এরপর তিনি বলেন, খাদ্যাভাব পূরণে মানুষ সবচেয়ে বেশি ঋণ গ্রহণ করেন উন্নয়ন সংস্থা থেকে। এটা সরকারি ব্যাংকের ব্যর্থতা। সরকারি ব্যাংকে কৃষক ঋণ নিতে গেলে তার জামানত আছে কি না, কি কি কাগজপত্র আছে তা চায়। এতে কৃষক নিরুৎসাহিত হন। এসব বিবেচনা করে জামানতবিহীন সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা ঋণ প্রদান করছে কৃষি ব্যাংক। ১০ টাকার কৃষক অ্যাকাউন্ট চালু করে একজন কৃষক তার বাড়ির আঙিনায় সবজি চাষের জন্য এই ঋণ গ্রহণ করতে পারবেন। ১২ মাসে তিনি ঋণ পরিশোধ করবেন। ঋণ নিতে শুধু জাতীয় পরিচয়পত্রই যথেষ্ট।

পুষ্টিখাতের অগ্রগতির জন্য হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) বাংলাদেশ প্রতিনিধি ড. জিয়াকুন শি। তিনি বলেন, পুষ্টি নিরাপত্তায় ১৯৭৬ সাল থেকে আমরা কাজ করছি। পুষ্টি উন্নয়নে ইতোমধ্যে ২৫০টিরও বেশি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। জাতিসংঘ পুষ্টির বিষয়ে সবসময়ে সচেতন ও সহায়ক মানসিকতার। জাতিসংঘের খাদ্যসংস্থা বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুর মতো কাজ করছে। শুধু সরকার নয়, আমরা সবাই যদি পুষ্টি নিশ্চিতে এগিয়ে আসি তাহলে বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যাবে।

সংলাপে মূল প্রবন্ধ উত্থাপন করেন জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার কারিগরি সহায়তা সমন্বয়কারী ইমানুন নবী খান। তার বক্তব্যে তিনি পরিসংখ্যান ব্যুরোর ২০২৪ সালের মার্চ মাসের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বলেন, দেশের ২২ শতাংশ মানুষ মাঝারি থেকে শুরু করে চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার সম্মুখীন। আর যাদের মূল পেশা কৃষি তাদের মধ্যে ২৬ দশমিক ১৩ শতাংশ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় আছে। এ ছাড়া শতকরা ২৫ দশমিক ৫ ভাগ পরিবারকে দৈনন্দিন খাবার কিনতে ঋণ করতে হচ্ছে।

খাদ্যের অনিশ্চয়তার ভয়াবহ চিত্র ফুটে ওঠে নাগরিকদের রক্ত স্বল্পতার প্রতিবেদনেও। ২০১২ সালে রক্তস্বল্পতায় ভুগতো ৩৫ দশমিক ৭০ ভাগ মানুষ। ২০১৯ সালে তা ১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৬ দশমিক ৭০ শতাংশে।

বাংলাদেশ কৃষি মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা উইংয়ের অতিরিক্ত সচিব মাহবুবুল হক পাটওয়ারীর সঞ্চালনায় সংলাপে আলোচক হিসেবে আরও ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. দেবাশীষ সরকার, ডাচ বাংলা ব্যাংকের সিএসআর রিসার্চ প্রোগ্রাম কমিটির চেয়ারম্যান ড. মো. মঞ্জুরুল আলম, বাংলাদেশ ব্যাংকের অতিরিক্ত পরিচালক মো. শহীদ রেজা, সারাবাংলা কৃষক সোসাইটির সভাপতি রিতা ব্রাহ্ম প্রমুখ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার প্রোগ্রাম প্রতিনিধি নূর আহমেদ খন্দকার।

সংলাপ শেষে বরিশাল ও খুলনা বিভাগের ৩০টি উৎপাদরকারী সংগঠনের নারী কৃষকদের হাতে জামানতমুক্ত ১০ হাজার টাকার ঋণ চেক এবং পুষ্টিকর সবজি উৎপাদনের জন্য বীজ তুলে দেন অতিথিরা।

মন্তব্য করুন

Bangal
rtv Drama
Radhuni
  • বাংলাদেশ এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
ডায়েট-জিম বাদেও ওজন কমানোর ৫টি উপায়
অপুষ্টিতে ভুগছে বাংলাদেশের ১১.৯ শতাংশ মানুষ
রাশমিকার সৌন্দর্যের সিক্রেট 
পুষ্টিগুণে ভরপুর আতা ফলে রয়েছে দারুণ কিছু উপকারিতা