বিবিএস কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ নিষ্পত্তির নির্দেশ
দরিদ্র জনগোষ্ঠীর তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশে ন্যাশনাল হাউজ হোল্ড ডাটাবেজ (এনএইচডি) প্রকল্পের নামে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) কর্মকর্তাদের অনিয়ম, দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) করা এ আবেদন নিষ্পত্তিতে ছয় মাস সময় বেঁধে দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (২০ মে) এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে এ আদেশ দেন বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ।
আদালতে আজ রিটকারীদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আবু জাফর শেখ মানিক। দুদকের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
আইনজীবী খুরশীদ আলম খান জানান, অনিয়মের অভিযোগের সত্যতা পেলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি অনিয়মের অভিযোগের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করা হয়েছে।
আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে দুদক চেয়ারম্যান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, পরিসংখ্যান ব্যুরোর সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
রিট আবেদন থেকে জানা যায়, এনএইচডি বাস্তবায়নের জন্য ২০১৬ সালে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো একটি প্রকল্প চালু করে। এই প্রকল্পের জন্য ৫৪৫ জন ডাটা এন্ট্রি অপারেটর নিয়োগ দেওয়া হয়। নিয়োগকৃত জনবলকে দাপ্তরিক বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পাদন করতে উপজেলা ও জেলা পরিসংখ্যান অফিসগুলোতে সংযুক্ত করা হয়।
২০২২ সালের জুন মাসে জেরক্স ইন্ডিয়া কোম্পানি লিমিটেডের অধীনে নিয়োগ দেওয়া হয় তাদের। কিন্তু ওই প্রতিষ্ঠান ১৪টি জেলার তথ্য আংশিক সংশোধন ও ৫০টি জেলার ডাটা অসমাপ্ত রেখে প্রকল্পের ১১২ কোটি ৪৪ লাখ ২৫ হাজার ৬২২ টাকা উত্তোলন করে নেয়।
এ প্রকল্পের জন্য মোট বরাদ্দ ছিল ৭২৭ কোটি টাকা, যার মধ্যে বিশ্ব ব্যাংকের ঋণ বাবদ ছিল ৬৮৬ কোটি ৮০ লাখ ৯৮ হাজার টাকা। আর সরকারের পক্ষ থেকে ছিল ৪০ কোটি ৫২ লাখ ৫২ হাজার টাকা।
প্রকল্পে নিয়োগ পাওয়া ৫৪৫ জন ডাটা এন্ট্রি অপারেটরকে মাসিক বেতন-ভাতাদি উপরোক্ত কর্মকর্তারা প্রদান না করে এবং প্রজেক্টের টিপিপির সুপারিশ অনুযায়ী তাদের রেভিনিউ খাতে নিয়োগ না দিয়ে সরকারি টাকা দুর্নীতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদও প্রকাশ হয়। পরে ভুক্তভোগী ৭৩ জন প্রতিকার চেয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করেন। এ ছাড়া অনিয়মের অভিযোগ বিষয়ে ব্যবস্থা চেয়ে দুদকের কাছেও আবেদন করা হয়।
ওই আবেদনে দুদকের সাড়া না পেয়ে ১৩ মে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন ৭৩ জন। সেই রিটের শুনানি নিয়ে আজ এ আদেশ দেন আদালত।
মন্তব্য করুন