বেনজীরকে আর সময় নয়, আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা: দুদক
অতিরিক্ত সময় দেওয়ার পরেও হাজির না হওয়ায় পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদকে নতুন করে আর সময় দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সচিব খোরশেদা ইয়াসমিন।
রোববার (২৩ জুন) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
দুদক সচিব বলেন, বেনজীরের অনুরোধে তাকে আরও ১৬ দিন অতিরিক্ত সময় দেওয়া হয়েছিল। তারপরেও তিনি আজ (রোববার) দুদকে আসেননি। তাকে নতুন করে আর সময় দেওয়া হবে না, আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, সোমবার (২৪ জুন) বেনজীরের স্ত্রী ও কন্যাদের দুদকে উপস্থিত হতে বলা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তারা উপস্থিত না হলে তাদের বিরুদ্ধেও আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
খোরশেদা ইয়াসমিন বলেন, অভিযোগের বিষয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে গত ২১ জুন দুদক চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত বক্তব্য দিয়েছেন বেনজীর আহমেদ। চিঠিতে তিনিসহ তার স্ত্রী ও দুই মেয়ের সম্পদ সম্পর্কে ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।
এর আগে, গত ২৮ মে বেনজীর ও তার স্ত্রী-সন্তানদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিশ পাঠানো হয়। এতে বেনজীরকে ৬ জুন এবং তার স্ত্রী-সন্তানদের ৯ জুন দুদকে হাজির হতে বলা হয়। পরে গত পাঁচ জুন আইনজীবীর মাধ্যমে দুদকে হাজির হতে আরও সময় চান বেনজীর। সেই হিসেবে বেনজীরকে ২৩ জুন এবং তার স্ত্রী ও দুই কন্যাকে ২৪ জুন দুদকে হাজির হতে বলা হয়।
বেনজীর আহমেদ ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আইজিপি এবং ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত র্যাবের মহাপরিচালক ছিলেন বেনজীর। তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
এদিকে বেনজীর পরিবারের সম্পদের অনুসন্ধান অব্যাহত রেখেছে দুদক। এখন পর্যন্ত যেসব সম্পদ পাওয়া গেছে, তা জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
সর্বশেষ বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে ঢাকায় আরও আটটি ফ্ল্যাটের খোঁজ পাওয়ার কথা জানায় দুদক। এর মধ্যে ছয়টি ফ্ল্যাট ঢাকার আদাবরের একটি ভবনে। দুটি বাড্ডায়। রূপায়ন লিমিটেড স্কয়ার নামের ১৪ তলা ভবনে অবস্থিত বাড্ডার ফ্ল্যাট দুটি বাণিজ্যিক বা অফিস স্পেস।
বেনজীর পরিবারের নামে ঢাকায় মোট ১২টি ফ্ল্যাটের খোঁজ পাওয়া গেছে। এর আগে গুলশানে চারটি ফ্ল্যাটের খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল।
দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন সম্প্রতি বেনজীর পরিবারের আটটি ফ্ল্যাট জব্দের আদেশ দেন। পাশাপাশি বেনজীর পরিবারের প্রায় ৭৬ বিঘা (২৫ একর) জমি জব্দ এবং বেসরকারি সিটিজেন টেলিভিশন ও টাইগার ক্রাফট অ্যাপারেলস লিমিটেডের শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
এর আগে দুই দফায় বেনজীর ও তার পরিবারের নামে গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, কক্সবাজার ও ঢাকার সাভারে থাকা ৬২১ বিঘা জমি, ১৯টি কোম্পানির শেয়ার এবং গুলশানের ৪টি ফ্ল্যাট জব্দের আদেশ দিয়েছিলেন আদালত। তখন ৩০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র, ৩৩টি ব্যাংক হিসাব ও ৩টি বিও হিসাবও (শেয়ার ব্যবসার বেনিফিশিয়ারি ওনার্স অ্যাকাউন্ট) অবরুদ্ধের আদেশ দেওয়া হয়েছিল। সব মিলিয়ে বেনজীর পরিবারের নামে ৬৯৭ বিঘা জমি পাওয়া গেছে।
মন্তব্য করুন