বাংলাদেশ থেকে কাঁচা চামড়া নিতে আগ্রহী মিশর: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী
বাংলাদেশ থেকে কাঁচা চামড়া আমদানির আগ্রহ প্রকাশ করেছে মিশর। একইসঙ্গে মিশরের পাটশিল্প উন্নয়নে এ দেশের পাটশিল্পের অতীত অভিজ্ঞতা ব্যবহার করে একসঙ্গে কাজ করতে চায়।
রোববার (২৩ জুন) সচিবালয়ে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটুর সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত মিশরের রাষ্ট্রদূত ওমর মহিম এলদিন আহমেদ ফাহমির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ কথা জানান।
আলাপকালে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা উল্লেখ করে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী জানান, বিশ্বের ২৬টি দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক চুক্তি নিয়ে কাজ করছে মন্ত্রণালয়। বিনিয়োগ হলে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, আসিয়ান দেশগুলোর বাজার সুবিধা এ দেশ থেকে ব্যবহার করা যাবে। বিনিয়োগে আগ্রহী মিশরের শীর্ষ ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা এ দেশে এলে বিনিয়োগ সুযোগ আরও বাড়বে।
মন্তব্য করুন
শিমুলের জবানবন্দিতে উঠে এলো আনার হত্যার রহস্য
ভারতের কলকাতায় ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যার ঘটনায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন শিমুল ভূঁইয়া। সেই জবানবন্দি ও ডিবি পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে উঠে এসেছে নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের তিন কারণ।
বুধবার (৫ জুন) দ্বিতীয় দফায় পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে শিমুল ভূঁইয়াকে আদালতে হাজির করে তদন্ত সংশ্লিষ্ট ডিএমপির ওয়ারী গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) তোফাজ্জল হোসেন শিমুলের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এ নিয়ে এ হত্যাকাণ্ডে বাংলাদেশে গ্রেপ্তার তিনজনই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
শিমুলের আগে মঙ্গলবার (৪ জুন) আদালতে জবানবন্দি দেন তার ভাতিজা তানভীর ভূঁইয়া। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, পেশাদার অপরাধী শিমুলের সঙ্গে তানভীরও এই হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত বলে স্বীকার করেছেন। আনারকে তিনি বালিশচাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করেন। এর আগে গত সোমবার (৩ জুন) আদালতে জবানবন্দি দেন শিলাস্তি রহমান। হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তিনি সংসদ সদস্যকে কলকাতার নিউ টাউনে সঞ্জীবা গার্ডেনসের ফ্ল্যাটে রিসিভ করেন বলে স্বীকারোক্তি দেন।
এদিকে শিমুল তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেন, আনার হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী পলাতক আখতারুজ্জামান শাহীন। তার সঙ্গে আনারের হুন্ডি কারবার নিয়ন্ত্রণ ও সীমান্তে স্বর্ণ চোরাচালান নিয়ে ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব ছিল। এ ছাড়া শিমুল ভূঁইয়ার সঙ্গে রাজনৈতিক মতাদর্শগত বিরোধ ছিল এমপি আনারের। হত্যার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন শিমুল। কলকাতায় হত্যা মিশন শেষ করে গত ১৫ মে দেশে ফিরে আসেন তিনি।
শিমুলের স্বীকারোক্তি থেকে জানা যায়, তিনি ছিলেন পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টির (লাল পতাকা) একজন শীর্ষ নেতা; খুলনা, ঝিনাইদহ ও যশোরে সংগঠনের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণকারী। তার এ কাজে বাধা ছিলেন এমপি আনার। এর মধ্যে আখতারুজ্জামান শাহীন তাকে হত্যার পরিকল্পনা করলে শিমুল তাতে রাজি হয়ে যান ও যৌথভাবে সংসদ সদস্যকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেন।
জবানবন্দিতে আরও উঠে আসে, নিষিদ্ধ ঘোষিত চরমপন্থী সংগঠন পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির (লাল পতাকা) প্রধান নেতা ছিলেন ডা. মিজানুর রহমান টুটুল। ২০০৮ সালের জুলাইতে তিনি ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন। টুটুল শিমুল ভূঁইয়ার আপন বোনের স্বামী এবং আখতারুজ্জামান শাহীনের চাচাতো ভাই।
সক্রিয় রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার আগে পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির (জনযুদ্ধ) সঙ্গে যোগাযোগ ছিল আনোয়ারুল আজীম আনারের। তারা ছিলেন টুটুলের বিরোধী পক্ষ। শিমুল ও শাহীনের ধারণা, ওই যোগাযোগের সূত্র ধরেই এমপি আনার টুটুলকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে ধরিয়ে দেন।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, শিমুলের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি থেকে উঠে এসেছে, পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী তানভীর গত ৬ মে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে কলকাতায় যান। সেখানে সল্টলেক ও নিউ টাউনের মাঝামাঝি এলাকায় ত্রিশিব হোটেলে ওঠেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী এমপি আনারকে বিভিন্নভাবে প্রলুব্ধ করে কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়।
এরও আগে ৩০ এপ্রিল কলকাতায় পৌঁছান হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে চিহ্নিত আখতারুজ্জামান শাহীন। তার সঙ্গে কলকাতায় যান বান্ধবী শিলাস্তি রহমান ও শিমুল ভূঁইয়া। সবাই ওঠেন তার ভাড়া করা ফ্ল্যাটে। শিলাস্তি নিজে হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার না করলেও ঘটনার দিন তিনি ওই ফ্ল্যাটেই ছিলেন বলে জবানবন্দিতে বলেন।
সংসদ সদস্যকে হত্যার আগে কলকাতায় নিউমার্কেট থেকে কেনা হয় পলিথিনসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, চিকিৎসার কথা বলে সংসদ সদস্য আনার কলকাতা যান ১২ মে। সেখানে বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের বাসায় ওঠেন। পরদিন তাকে প্রলুব্ধ করে নিউ টাউনের সঞ্জীবা গার্ডেনসের ওই ফ্ল্যাটে নেওয়া হয়। তখন ওই ফ্ল্যাটে উপস্থিত ছিলেন শিলাস্তি, শিমুল, তানভীর, সহযোগী জিহাদ হাওলাদার, সিয়াম হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান, ফয়সাল আলী। হত্যাকাণ্ডের আগেই আখতারুজ্জামান শাহীন ঢাকায় চলে আসেন।
সঞ্জীবা গার্ডেনসের ওই ফ্ল্যাটেই এমপি আনারকে বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করা হয়। পরে লাশ টুকরা টুকরা করে গুম করা হয়। তানভীর নিজে সংসদ সদস্যকে বালিশচাপা দেন বলে জবানবন্দিতে স্বীকার করেন।
‘খুন করে কানাডায় এসে আসলেই কি বেঁচে আছি?’
‘খুন করে কানাডায় চলে এসেছি। তাই অনেকে ভাবতে পারে, বেঁচে গেছি। আসলেই কি আমি বেঁচে আছি?’ ঠিক এভাবেই একটি গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপচারিতায় জাপানপ্রবাসী আরিফুল ইসলামকে খুনের পর নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করছিলেন এই মুহূর্তে কানাডায় অবস্থান করা পারভীন আক্তার।
সেই পারভীন আক্তার, যিনি সম্প্রতি কানাডা থেকে দেশে এসে রাজধানীর ভাটারায় বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে আরিফুল ইসলাম নামে এক জাপানপ্রবাসীর সঙ্গে ওঠেন মাটি প্রপার্টিজ নামে একটি অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিংয়ে। এরপর গত ১ জুন তাদের ভাড়া করা অ্যাপার্টমেন্ট থেকে উদ্ধার হয় আরিফের অর্ধগলিত মরদেহ। সঙ্গে মেলে একটি চিরকুট। তারপরই বের হয়ে আসে, আরিফকে খুন করে ফের কানাডায় চলে গেছেন পারভীন। কানাডায় গিয়ে হত্যাকাণ্ডের কথা নিজেও স্বীকার করেন ওই নারী।
বুধবার (৬ জুন) গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপচারিতায় কানাডা থেকে পারভীন বলেন, ‘আমার সংসার তছনছ করে দিয়েছিল আরিফুল। দিনের পর দিন শারীরিক-মানসিক নির্যাতন ও ধর্ষণ করেছে। গোপন ভিডিও করে তা আমার স্বামী ও পরিবারের সদস্যদের কাছে পাঠানোর হুমকি দিয়ে মাসে মাসে টাকা নিত সে। আমাকে এটিএম বুথের মতো ব্যবহার করেছে সে। দফায় দফায় ১০–১২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে আমার কাছ থেকে। আত্মহত্যা করার পরিকল্পনা করে যখন কানাডা থেকে প্লেনে উঠছিলাম, তখনও জানতাম না– আরিফুল জাপান থেকে ফিরে আসবে। দেশে ফেরার পরপরই আমাকে ফোন করে সে। তখন সে জানতে পারে, আমি দেশে এসেছি। নিজেকে শেষ করার জন্য যে ছুরি কানাডা থেকে নিয়ে এসেছিলাম, সেটা দিয়ে ওকে শেষ করেছি।’
পারভীন জানান, ১৮ মে আরিফকে হত্যার পর কানাডায় উড়াল দেন তিনি। বাংলাদেশে পরিবারের সদস্যদের না জানিয়ে ১৬ মে ঢাকায় এসেছিলেন কানাডাপ্রবাসী এ নারী।
গত ১ জুন দিবাগত রাতে আরিফের মরদেহটি উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায় ভাটারা থানা পুলিশ।
নিহত আরিফ ও পারভীন দুজনেরই পৈত্রিক বাড়ি নরসিংদীতে। জাপানি এক তরুণীকে বিয়ে করে বছরখানেক ধরে সেখানেই বাস করছিলেন আরিফ। আর স্বামীর সঙ্গে সংসার করতে এ বছরের ২ এপ্রিল কানাডায় যান পারভীন। পারভীনের দাবি, পাঁচ বছর ধরে আরিফ তাকে অত্যাচার করছিল। সবশেষ গত ১৭ মে তারিখেও বসুন্ধরার ভাড়া ফ্ল্যাটে ওঠার পরপরই জোর করে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করে আরিফ।
পুলিশ জানায়, গত ১৭ মে আরিফুল ইসলাম ও পারভীন আক্তার স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে মাটি প্রপার্টিজ নামে ওই অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিংয়ের দ্বিতীয় তলায় একটি অ্যাপার্টমেন্ট অনলাইনের মাধ্যমে ভাড়া নেন। ৭ দিনের পেমেন্ট অগ্রিম করেছিলেন তারা। শনিবার (১ জুন) রাতে মরদেহের খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক বাড্ডা জোন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং সিআইডির ক্রাইমসিন ঘটনাস্থলে গিয়ে আলামত সংগ্রহ করে। পরে, সিআইডির ক্রাইমসিন জানায়, নিহতের বুকে ও গলায় ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
ওই অ্যাপার্টমেন্টের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, ১৮ মে ভোর ৬টা ৩১ মিনিটে বাসা থেকে একা বেরিয়ে যাচ্ছেন পারভীন আক্তার।
যেসব পণ্যের দাম বাড়তে ও কমতে পারে
দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম বাজেট পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বিকাল ৩টায় জাতীয় সংসদে তিনি নতুন অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট উত্থাপন করা শুরু করেন।
প্রতি বছর নতুন বাজেট ঘোষণার পর বেশ কিছু পণ্যের দামের পরিবর্তন ঘটে। কিছু পণ্যে শুল্ক ও কর প্রত্যাহার করে সরকার, এতে কিছু পণ্যের দাম কমতে দেখা যায়। আবার কিছু পণ্যে নতুন করে কর আরোপ করার ফলে অনেক পণ্যেরই দাম বেড়ে যায়।
বাজেটে নিম্নোক্ত পণ্যের দাম বাড়ানো ও কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
যেসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে–
সিগারেট
প্রতি বছরই বাজেট ঘোষণার পর সবচেয়ে আলোচনা হয় সিগারেটের দাম বৃদ্ধিকে ঘিরে। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। প্রতিবারের মতো এবারো বাজেটেও সিগারেট উৎপাদন পর্যায়ে সম্পূরক শুল্ক ও মূল্য স্তর বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী ও বর্ষীয়ান কূটনীতিক আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
তিন স্তরের সিগারেটে সম্পূরক শুল্ক ৬৫ দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে বাড়বে সব ধরনের সিগারেটের দাম। বাজেটে প্রতি ১০ গ্রাম জর্দার সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য বাড়িয়ে ৪৮ টাকা এবং একই পরিমাণ গুলের মূল্য ২৫ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে।
শুধু সিগারেট বা জর্দাই নয়, রাজস্ব আয় বাড়াতে বাজেটে নিত্যব্যবহার্য পণ্যের উৎপাদন ও সরবরাহ পর্যায়ে ভ্যাট এবং আমদানি পর্যায়ে শুল্ক ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন তিনি।
ফ্রিজের দাম বাড়বে
বেশ কয়েক বছর ধরে দেশের ইলেকট্রনিক্স পণ্য খাতকে সরকার ভ্যাট অব্যাহতি দিয়ে আসছে। আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত ফ্রিজ উৎপাদনে ভ্যাট অব্যাহতি রয়েছে। যা আর বৃদ্ধি করা হবে না বলে জানা গেছে। ফলে নতুন অর্থবছরে ৫ শতাংশ ভ্যাটের হার বৃদ্ধি করে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। এতে বাজারে ফ্রিজের দাম বেড়ে যেতে পারে।
কম্পিউটার
দেশে এখন যে কোনও আমদানিকারক কোনও শর্ত ছাড়াই ৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক দিয়ে সব ধরনের কম্পিউটার ও প্রিন্টারের যন্ত্রাংশ আমদানি করতে পারেন। এ সুবিধা প্রত্যাহার করার প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। এতে কম্পিউটারের দাম বাড়তে পারে।
এসি
গরমে স্বস্তি পেতে অনেকে এয়ারকন্ডিশন বা এসি কিনছে। বাজেটে এসিকে বিলাসী পণ্য বিবেচনা করে দেশে এসি উৎপাদনে ব্যবহৃত কম্প্রেসার ও সব ধরনের উপকরণের শুল্ক বাড়ানো হচ্ছে। তাই এসির দাম বাড়তে পারে।
কাজুবাদাম
দেশে কাজুবাদাম চাষকে সুরক্ষা দেওয়ার অংশ হিসাবে খোসা ছাড়ানো কাজুবাদাম আমদানিতে শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। এতে কাজুবাদামের দাম বাড়তে পারে।
পানির ফিল্টার
এ ছাড়া বাসাবাড়িতে ব্যবহৃত পানির ফিল্টার আমদানিতে শুল্ক বাড়ানো হচ্ছে। দেশে উৎপাদন হওয়ায় পানির ফিল্টার আমদানিতে শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হচ্ছে। তাই গৃহস্থালিতে ব্যবহৃত পানির ফিল্টারের দাম বাড়তে পারে।
এলইডি বাল্ব
বিদ্যুৎ বিল সাশ্রয়ে অনেকে এলইডি বাল্ব ব্যবহার করেন। নিকট-ভবিষ্যতে এলইডি বাল্বের দাম বাড়তে পারে। কারণ এলইডি বাল্ব এবং এনার্জি সেভিং বাল্ব উৎপাদনের উপকরণ আমদানিতে শুল্ক ১০ শতাংশ বাড়ানো হচ্ছে।
মোবাইল ফোন
বাজেটে হ্যান্ডসেট উৎপাদনে ৫ শতাংশ ভ্যাট বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। এতে প্রতিটি হ্যান্ডসেটে দাম বাড়তে পারে ১ হাজার টাকা।
বর্তমানে হ্যান্ডসেট উৎপাদনে ৩ থেকে সাড়ে ৭ শতাংশ পর্যন্ত ভ্যাট দিতে হয় ১৭টি প্রতিষ্ঠানকে। বিক্রয় পর্যায়ে রয়েছে ৫ শতাংশ ভ্যাট। নতুন বাজেটে এখাতে ভ্যাট আরও ৫ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। এতে ৫০০ কোটি টাকা রাজস্ব পাবে সরকার। তবে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আনা ফোন বিক্রি বন্ধ হলে এ খাত থেকে বছরে রাজস্ব মিলবে প্রায় ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা।
মোবাইল ফোন সিমকার্ড
মোবাইল অপারেটরদের সিমকার্ড বিক্রির ওপর কর ২০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে বাড়তি দামে সিমকার্ড কেনা লাগতে পারে ক্রেতাদের।
গাড়ি
বর্তমানে সংসদ সদস্যরা শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি আমদানি করতে পারেন। বৈষম্য হ্রাসে বাজেটে এই সুবিধা বাতিল করে প্রস্তাবিত বাজেটে গাড়ি আমদানি করতে হলে সংসদ সদস্যদের ২৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক ও ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের প্রস্তাবনা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। অন্যদিকে বিলাসবহুল গাড়িতে শুল্ক ফাঁকি রোধে হাইব্রিড ও নন হাইব্রিড টাইপের গাড়ি ছাড় করতে কিছু সুনির্দিষ্ট শর্ত যোগ করা হয়েছে প্রস্তাবিত বাজেটে। ফলে বিলাসবহুল গাড়ির দাম বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।
জেনারেটর
আবার লোডশেডিং মোকাবিলায় বাসাবাড়ি বা শিল্পে জেনারেটরের ব্যবহার বাড়ছে। সেখানেও নজর দিয়েছে এনবিআর। জেনারেটর সংযোজন ও উৎপাদনে ব্যবহৃত উপকরণ বা যন্ত্রাংশ আমদানিতে এক শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে। তাই দেশের বাজারে জেনারেটরের দাম বাড়তে পারে।
কোমল পানীয় ও এনার্জি ড্রিংকস
কোমল পানীয়, কার্বোনেটেড বেভারেজ, এনার্জি ড্রিংকস, আমসত্ত্বের ওপর ভ্যাট পাঁচ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হতে পারে। এ ছাড়া কার্বোনেটেড বেভারেজের ওপর ন্যূনতম কর আরও ২ শতাংশ বাড়িয়ে ৫ শতাংশ হতে পারে। ফলে বেশি দামে কিনতে হবে এসব পণ্য।
ফলের জুস
এ ছাড়া নতুন বাজেটে আমসত্ত্ব, ফলের জুস, ম্যাঙ্গো বার ও জুস, তেঁতুলের জুস, পেয়ারার জুস, আনারসের জুস ইত্যাদি উৎপাদনে ভ্যাটের হার ৫ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।
হাসপাতালের সরঞ্জাম
কিছু শর্ত প্রতিপালন সাপেক্ষে রেফারেল বা বিশেষায়িত হাসপাতালের শুল্কছাড় সুবিধায় ১ শতাংশ শুল্কে মেডিক্যাল যন্ত্র ও সরঞ্জাম আমদানির সুযোগ রয়েছে। আগামী বাজেটে ২০০টিরও বেশি মেডিক্যাল যন্ত্র ও সরঞ্জাম আমদানির ক্ষেত্রে তা বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী, যা গুরুতর অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসা ব্যয়কে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।
রূপচর্চা সামগ্রী
বাজেটে রূপচর্চা সামগ্রীর ওপরে ভ্যাট বাড়ানো হচ্ছে। হাত, নখ, পায়ের প্রসাধনসামগ্রী, লিপস্টিক, চুল পরিচর্যাসামগ্রী সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হচ্ছে। বিধায় কসমেটিক্স আইটেমের দাম বাড়তে পারে।
গাড়ি কনভার্সন খরচ
জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যক্তিগত সিএনজি-এলপিজিতে কনভার্সন বেড়ে গেছে। গাড়ি সিএনজি-এলপিজিতে কনভার্সনের ব্যবহৃত কিট, সিলিন্ডার ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ আমদানিতে শুল্ক ৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করা হচ্ছে। এ কারণে গাড়ি কনভার্সন খরচ বাড়তে পারে।
মোবাইলে কথা
রাজস্ব আদায়ের আওতা বৃদ্ধি করলে মোবাইলে কথা বলতে আরও বাড়তি অর্থ গুনতে হবে ভোক্তাকে। বর্তমানে একজন ভোক্তা মোবাইলে ১০০ টাকা রিচার্জ করলে ৭৩ টাকার কথা বলতে পারেন। বাকি ২৭ টাকা ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক হিসেবে কেটে নেয় মোবাইল অপারেটরগুলো। প্রস্তাবিত বাজেটে মোবাইল সেবার ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হলে ভোক্তা ৬৮ টাকার কথা বলতে পারবেন।
নিরাপত্তাসেবা
এছাড়া রাজধানী ঢাকাসহ বড় বড় শহরে বাসাবাড়ি, অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন খাতে নিরাপত্তাসেবা প্রায় অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। এখন এ ধরনের নিরাপত্তাসেবা নিলে ১০ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট দিতে হয়। আগামী বাজেটে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী ।
হাটবাজারের ইজারা
কর ব্যতীত প্রাপ্তি (নন-ট্যাক্স রেভিনিউ) বাড়াতে আগামী বাজেটে জেলা, উপজেলা, এমনকি ইউনিয়ন পর্যায়ের হাটবাজারের ইজারামূল্য কিছুটা বাড়বে। সেই সঙ্গে বাড়বে জমির নামজারির মাশুলও (ফি)।
বিনোদন খরচ
অবসরে পরিবার নিয়ে সময় কাটানোর জন্য অনেকে অ্যামিউজমেন্ট পার্ক ও থিম পার্কে ঘুরতে যান। রাজস্ব আয় বাড়াতে সেখানেও হাত দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে অ্যামিউজমেন্ট পার্ক ও থিম পার্কে প্রবেশে এবং রাইডে চড়তে সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাট আরোপিত আছে। এটি বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হচ্ছে। এতে পার্কে ঘোরার খরচ বাড়বে।
ধনীদের আবগারি শুল্ক
অবশ্য ধনীদের এবার অতিরিক্ত করারোপ করা হচ্ছে। বর্তমানে ধনিক শ্রেণী ২৫ শতাংশ হারে আয়কর দেয়, আগামীতে ৩০ শতাংশ হারে আয়কর দিতে হবে। বছরে আয় ৩৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা পেরুলে ৩০ শতাংশ হারে আয়কর দিতে হবে। অন্যদিকে ব্যাংকের আবগারি শুল্কও বাড়ানো হচ্ছে। ৫ কোটি টাকার বেশি ব্যাংক হিসাব থেকে বছরে এক লাখ টাকা আবগারি শুল্ক কাটা হবে।
যেসব পণ্যের দাম কমতে পারে–
প্যাকেটজাত গুঁড়া দুধ
দুই ধরনের গুঁড়া দুধ আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক-করের পার্থক্য অনেক বেশি থাকায় আড়াই কেজি পর্যন্ত প্যাকেটজাত গুঁড়া দুধের ওপর বিদ্যমান ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার করার প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। আড়াই কেজি ওজন পর্যন্ত গুঁড়াদুধের ওপর করহার ৮৯.৩২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫৮.৬০ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। বর্তমানে গুঁড়াদুধের বাল্ক আমদানিকারকদের জন্য মোট করহার ৩৭ শতাংশ। এর ফলে বাজারে প্যাকেট গুঁড়া দুধের দাম কমতে পারে।
নির্মাণসামগ্রী
আবাসনসহ বিভিন্ন নির্মাণ খাতে ব্যবহৃত রড, বার ও অ্যাঙ্গেল তৈরির কাঁচামাল হিসেবে ম্যাঙ্গানিজ ব্যবহৃত হয়। বাজেটে এসব পণ্য আমদানিতে শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। এর ফলে নির্মাণ সামগ্রীর দাম কমতে পারে।
কিডনি ডায়ালাইসিসের ফিল্টার
কিডনি রোগীদের কিছুটা স্বস্তি দিতে পারে এবারের বাজেট। ডায়ালাইসিসের প্রধান দুই উপকরণ ফিল্টার ও সার্কিটে থাকা ১০ শতাংশের আমদানি শুল্ক ১ শতাংশে নামিয়ে আনার প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। এ কারণে ডায়ালাইসিস খরচ কমতে পারে।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য
নিত্য প্রয়োজনীয় বাজার স্থিতিশীল রাখা ও উচ্চ মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে অন্তত ৩০ প্রয়োজনীয় পণ্য ও খাদ্যশস্য সরবরাহের ওপর উৎসে কর কমানোর ঘোষণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে এসব পণ্যে উৎসে কর ২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ শতাংশ করা হচ্ছে। পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে— পেঁয়াজ, রসুন, মটর, ছোলা, চাল, গম, আলু, মসুর, ভোজ্যতেল, চিনি, আদা, হলুদ, শুকনা মরিচ, ডাল, ভুট্টা, ময়দা, আটা, লবণ, গোলমরিচ, এলাচ, দারুচিনি, লবঙ্গ, খেজুর, তেজপাতা, পাট, তুলা, সুতা এবং সব ধরনের ফলসহ ৩০ পণ্য। ফলে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যে কিছুটা হলেও দাম কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
ল্যাপটপ
ল্যাপটপ আমদানিতে মোট করভার এখন ৩১ শতাংশ। এতে ল্যাপটপ সাধারণের ক্রয়সীমার বাইরে চলে যাচ্ছে। বাড়ছে নকল ল্যাপটপ আমদানি। এ জন্য আমদানি পর্যায়ে আরোপিত মূসক প্রত্যাহার করে করভার ২০ দশমিক ৫০ শতাংশে নামিয়ে আনার প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। এর ফলে বাজারে ল্যাপটপের দাম কমে আসতে পারে।
কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, সরকার আগে স্থানীয় প্রস্তুতকারকদের সুরক্ষা দিতে ল্যাপটপ আমদানিতে কর বাড়িয়েছিল। তবে এমন পদক্ষেপে শেষ পর্যন্ত গ্রাহকদের খরচ বেড়েছে। কারণ স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ল্যাপটপের মান ও দাম নিয়ে ক্রেতারা সন্তুষ্ট নন। এছাড়া দেশের বাজারে রিফার্বিশড ও নকল পণ্যের প্রবেশ ঠেকাতে এবং স্থানীয় ফ্রিল্যান্সার ও সফটওয়্যার ডেভেলপারদের সহায়তা করতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
বিদেশি চকলেট
প্রস্তাবিত বাজেটে চকলেট আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক ৪৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। এ কারণে বিদেশ থেকে আনা চকলেটের দাম কমতে পারে।
সুইচ-সকেট
বাসাবাড়িতে ব্যবহৃত সুইচ-সকেটের দাম কমতে পারে। কারণ দেশে উৎপাদিত সুইচ-সকেট, হোল্ডার উৎপাদনে ব্যবহৃত কাঁচামালের আমদানি শুল্ক কমানো হচ্ছে।
ইলেকট্রিক মোটর
ইলেকট্রিক মোটর উৎপাদনে ব্যবহৃত যন্ত্রাংশ আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। এ কারণে ইলেকট্রিক মোটরের দাম কমতে পারে।
মোটরসাইকেল
দেশে তৈরি মোটরসাইকেলের সিকেডি ইঞ্জিনের পার্টস আমদানির শুল্ক কমছে। এ কারণে দেশে তৈরি মোটরসাইকেলের দাম কমতে পারে।
কার্পেট
কার্পেট তৈরির প্রধান কাঁচামাল পলিপ্রেপাইলিন ইয়ার্ন আমদানির শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। এতে দেশে তৈরি কার্পেটের দাম কমতে পারে।
ডেঙ্গু কিট
ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় কিট আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। যদিও ডেঙ্গু রোগীদের এনএস-১ অ্যান্টিজেন পরীক্ষার খরচ সরকারি হাসপাতালের জন্য ১০০ টাকা এবং বেসরকারি হাসপাতালের জন্য ৩০০ টাকা নির্ধারণ করা আছে। বাজার নিয়ন্ত্রণের আমদানিতে রেয়াত সুবিধা দেওয়া হবে।
ক্যানসার চিকিৎসা খরচ
ক্যানসার রোগীদের চিকিৎসা সুলভ করতে ক্যান্সার চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধের কাঁচামাল আমদানিতে রেয়াতি সুবিধার আওতায় নতুন কিছু কাঁচামাল যোগ হচ্ছে। ফলে আশা করা যাচ্ছে ক্যানসারের চিকিৎসা খরচ কমে আসবে।
এ ছাড়া ওষুধ, চিকিৎসাসামগ্রী ও স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রী উৎপাদনে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা আগামী অর্থবছরে অব্যাহত থাকছে।
কৃষিযন্ত্র
কৃষিকাজের যন্ত্রের দাম কমতে পারে। কৃষি উপকরণ আমদানিতে শুল্ক সুবিধা অব্যাহত রাখা হবে।
উড়োজাহাজ রক্ষণাবেক্ষণ খরচ
এয়ারক্রাফটের ইঞ্জিন ও প্রপেলার আমদানি পর্যায়ে কমতে পারে মূল্য সংযোজন কর বা মূসক। ফলে উড়োজাহাজ রক্ষণাবেক্ষণে কমতে পারে খরচ।
বিয়ের আয়োজনে যোগ হচ্ছে নতুন খরচ
নিজের প্রথম বাজেট পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বিকেল ৩টায় জাতীয় সংসদে তিনি নতুন অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট উত্থাপন করা শুরু করেন।
সাধারণত বিয়ে, বিবাহবার্ষিকী, জন্মদিন, গায়েহলুদ, সুন্নতে খাতনাসহ বিভিন্ন ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি সভা, সেমিনার, পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান করতে কমিউনিটি সেন্টার ও মিলনায়তন ভাড়া করা হয়। এখন থেকে বার্ষিক আয়কর রিটার্ন জমার রসিদ ছাড়া মিলনায়তন ভাড়া করা যাবে না।
বর্তমানে ৪৩ ধরনের সেবা পেতে রিটার্ন জমার কপি লাগে। এই তালিকায় মিলনায়তন ভাড়া নিতে রিটার্ন জমার এই বাধ্যবাধকতা যুক্ত হচ্ছে।
আগামী অর্থবছরে করমুক্ত আয়সীমা বাড়ছে না। এখনকার মতো বার্ষিক করমুক্ত সীমা সাড়ে তিন লাখ টাকাই থাকছে। তবে করহার পুনর্বিন্যাস হচ্ছে। এখন ৫, ১০, ১৫, ২০ ও ২৫ শতাংশ করহারের সঙ্গে ৩০ শতাংশের আরেকটি স্তর আসছে। বছরে আয় সাড়ে ৩৮ লাখ টাকার বেশি হলে করদাতাকে বাকি অর্থের ওপর ৩০ শতাংশ হারে কর দিতে হবে।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) জাতীয় সংসদে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রস্তাবিত এ বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, এ বাজেট মন্ত্রিসভায় অনুমোদন হয়, পরে ওই প্রস্তাবে সই করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
বাংলাদেশিদের তথ্য বিক্রি করে দিয়েছেন দুই পুলিশ কর্মকর্তা
অনলাইন মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামের বিভিন্ন গ্রুপ ও চ্যানেলের মাধ্যমে বাংলাদেশি নাগরিকদের ‘ক্লাসিফায়েড’ তথ্য বিক্রি করে দিয়েছেন পুলিশের দুই কর্মকর্তা। দেশের নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র ও ফোন কলসহ ব্যক্তিগত গোপনীয় তথ্য অর্থের বিনিময়ে বিক্রি করেছেন তারা। বিষয়টি নজরে এলে ওই দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি)।
শুক্রবার (৭ জুন) এনটিএমসি ডিজি মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এনটিএমসি’র সূত্রে জানা গেছে, ৪২টি সরকারি সংস্থার প্রায় পাঁচ শতাধিক কর্মকর্তা এনআইপি’তে প্রবেশাধিকার পান। বিভিন্ন সরকারি সেবা এবং তদন্ত সংশ্লিষ্ট কাজে প্রবেশাধিকার প্রয়োজন হয় তাদের। এনআইপি’তে নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য এবং কল ডিটেইল রেকর্ড (সিডিআর) থাকে। প্রবেশাধিকার প্রাপ্ত কর্মকর্তারা নিজেদের ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে এই পোর্টালে প্রবেশ করেন।
লগ সার্ভার বিশ্লেষণ করে অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের (এটিইউ) পুলিশ সুপার ফারহানা ইয়াসমিন ও র্যাব-৬ এর এএসপি তারেক আমান বান্নার ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে অস্বাভাবিক লগ-ইন দেখতে পায় এনটিএমসি। সেখান থেকেই তথ্য চুরির ঘটনাটি জানতে পারে এনটিএমসি।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে লেখা চিঠিতে এনটিএমসি জানিয়েছে, হাজার হাজার সদস্য আছে ৪৮টি টেলিগ্রাম গ্রুপ ও চ্যানেল এসব ব্যক্তিগত তথ্য বিক্রিতে জড়িত। এসব গ্রুপের সদস্যদের সংবেদনশীল তথ্যে প্রবেশাধিকার পেতে দুই কর্মকর্তার লগইন আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা হয়। সোশ্যাল মিডিয়া গ্রুপ ও মেসেজিং অ্যাপে বিক্রি হওয়া কল ডেটা রেকর্ড এনটিএমসির সার্ভার থেকে নেওয়া হয়েছে।
সংবেদনশীল তথ্যের অননুমোদিত ব্যবহার এবং অবৈধভাবে হস্তান্তরের যথাযথ তদন্ত শেষে দায়ী ব্যক্তিদের শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছে এনটিএমসি।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ২৫ এপ্রিল রাত ৮টা ৫৭ মিনিট থেকে ৯টা ২৭ মিনিটের মধ্যে লগইন রিপোর্টে প্রথম এটি নজরে আসে। ২৫ মার্চ থেকে ২৫ এপ্রিলের মধ্যে এই দুই পুলিশ ও র্যাব কর্মকর্তার আইডি অন্য যে কোনো ব্যবহারকারীর চেয়ে অনেক বেশি তথ্য সংগ্রহ করে।
গত ২ মে এনটিএমসিকে লেখা চিঠিতে এটিইউ বলেছে, প্রাথমিক তদন্তে এটিইউ জানতে পেরেছে, সাইবার ক্রাইম উইংয়ের কনস্টেবল মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র রায় ও অপারেশন উইংয়ের খায়রুল ইসলাম টাকার বিনিময়ে কল ডিটেল রেকর্ডসহ স্পর্শকাতর তথ্য বিক্রির সঙ্গে জড়িত। কনস্টেবলরা জিজ্ঞাসাবাদে তা স্বীকার করেছেন।
গত ২৯ এপ্রিল সাইবার ক্রাইম উইং এর দুই কনস্টেবল মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী এবং অপারেশন্স উইং এর খায়রুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় জানিয়ে চিঠিতে বলা হয়, এসপি ফারহানার লগইন ক্রেডেনশিয়ালের মাধ্যমে অননুমোদিত তথ্য স্থানান্তরের প্রমাণ তাদের কাছে রয়েছে।
র্যাব জানিয়েছে, র্যাব-৬ এর ওই কর্মকর্তাকে ক্লোজড করা হয়েছে এবং এই বিষয়ে তদন্ত চলছে।
আইনগতভাবে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়, বিটিআরসি, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে সমস্ত ইলেকট্রনিক যোগাযোগ পর্যবেক্ষণ করার অধিকারী এনটিএমসি।
প্রযুক্তিবিষয়ক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম টেকক্রাঞ্চে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল বাকের বলেন, ‘বিডি সাইবার গাং’ নামক টেলিগ্রাম চ্যানেলসহ একাধিক টেলিগ্রাম চ্যানেল, ফেসবুক গ্রুপ এবং হোয়াটস অ্যাপে সংগৃহীত তথ্য বিক্রি করা হয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তারা এসব গ্রুপের এডমিনদের তথ্য সরবরাহ করতেন। ইন্টারনেটের বিক্রির বিষয়টি সেসব এডমিনরা দেখভাল করতেন। তবে ঠিক কত সংখ্যক নাগরিকের কী পরিমাণ তথ্য এভাবে অনলাইনে বিক্রি হয়েছে সে বিষয়ে নিশ্চিত করতে পারেননি জেনারেল বাকের।
এ বিষয়ে তদন্ত করতে গিয়ে তথ্য বিক্রির প্রমাণ পায় এনটিএমসি। এর প্রেক্ষিতে দায়ী পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি এনআইপি’তে পুলিশের এটিইউ এবং র্যাব-৬ এর প্রবেশাধিকার বন্ধ রেখেছে এনটিএমসি।
এনটিএমসি’র ডিজি মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান বলেন, ‘বিষয়টি সঠিক। আমাদের নজরে এলে এ বিষয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের আগ পর্যন্ত ওই দুই সংস্থার প্রবেশাধিকার (সাময়িকভাবে) বন্ধ রাখা হয়েছে। দায়ী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পুলিশ এবং র্যাবকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানি।’
চাঁদ দেখা গেছে, ঈদ ১৭ জুন
বাংলাদেশের আকাশে পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে। আগামী ১৭ জুন পবিত্র ঈদুল আজহা পালিত হবে।
শুক্রবার (৭ জুন) রাতে ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় রংপুর বিভাগের পীরগাছায় জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে। আগামী ১৭ জুন বাংলাদেশে পবিত্র ঈদুল আজহা পালিত হবে।
এর আগে, জিলহজ মাসের চাঁদ দেখতে ধর্মমন্ত্রীর সভাপতিত্বে শুক্রবার সন্ধ্যায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে বৈঠকে বসে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি।
এদিকে, সৌদি আরবে বৃহস্পতিবার (৬ জুন) জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা যাওয়ায় আগামী ১৬ জুন দেশটিতে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে।
উল্লেখ্য, জিলহজ আত্মত্যাগের মাস। মুসলিম জাতির পিতা ইব্রাহিম (আ.) এ মাসেই নিজের প্রিয় সন্তান ইসমাইলকে (আ.)-কোরবানির মাধ্যমে প্রভুপ্রেমের অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন। যদিও আল্লাহর বিশেষ রহমতে ইসমাইল (আ.) এর পরিবর্তে একটি পশু কোরবানি হয়েছে।
সেই থেকেই বিশ্বের সামর্থ্যবান মুসলিমরা প্রতি বছর ঈদুল আজহায় গরু, ছাগল, ভেড়া, দুম্বা, উট প্রভৃতি কোরবানি করে থাকেন।
‘আখেরি খাবার খেয়ে নে'
রাজধানীর ওয়ারী এলাকায় বুটিক ব্যবসায়ী শাহনাজ স্বামী ও দুই মেয়েকে নিয়ে বসবাস করতেন। কলেজপড়ুয়া মেয়েকে নিয়ে বাসায় ফেরার সময় সজীব হাসান নামের এক যুবককে প্রায়ই কলেজের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখতেন তিনি। এরপর একদিন কথা হলে দুজনের মধ্যে মোবাইল নম্বর বিনিময় ও কথা বলা শুরু হয়। ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এর কিছুদিন পর শাহনাজের স্বামী ও মেয়েদের সব বলে দেবে, এমন ভয় দেখিয়ে সজীব তার কাছ থেকে টাকা নেওয়া শুরু করে। একপর্যায়ে সজীব তার জন্য কাছাকাছি এলাকায় একটি বাসা ঠিক করে দিতে চাপ দেয়। পরে দুজনে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ওয়ারীতে একটি বাসা ভাড়া নেন। পুলিশে চাকরি করেন এবং সাদিয়া আক্তার মৌ নামে ভুয়া পরিচয় দিয়ে বাসা নেন শাহনাজ। ওই বাসায় সপ্তাহে দু-তিন দিন যাতায়াত করতেন তিনি। শাহনাজ বাসার ভাড়া পরিশোধ করলেও বাসায় নিয়মিত থাকতেন সজীব।
সজীব হাসান শাহনাজকে তার স্ত্রী পরিচয়ে ঝিনাইদহের গ্রামের বাড়িতে দু-তিনবার নিয়ে যান। তবে তাদের বয়সের ব্যবধান বেশি হওয়ায় সজিবের পরিবারের সদস্যরা এ সম্পর্ক মেনে নেননি। এদিকে ব্যবসার (বুটিক) কথা বলে শাহনাজের ঘরের বাইরে যাওয়ার বিষয়টি ভালোভাবে দেখতেন না তার স্বামী। বিষয়টি নিয়ে তাদের মধ্যে দূরত্ব বাড়তে থাকে। এরপর ২০২১ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া করে। পরদিন ভোরে শাহনাজ তার স্বর্ণালংকার ও টাকা নিয়ে স্বামীর বাসা থেকে বেরিয়ে সজীবের সঙ্গে সেই ভাড়া বাসায় ওঠেন। পরে সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে রাজধানীর ওয়ারী থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তার স্বামী।
২০২১ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি বাসা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার তিন দিন পর শাহনাজ তার স্বামীর হোয়াটসঅ্যাপে ফোন করে জানান তিনি খুব বিপদে আছেন। পরে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে স্ত্রীর খোঁজে ঘটনাস্থলে গিয়ে শুনতে পান, ওই বাসায় খুন হয়েছে। পুলিশ গিয়ে দেখতে পায় শাহনাজ খাটের ওপরে বসে আছেন। নিচে সজীব হাসান (৩২) মরদেহ পড়ে আছে।
এ হত্যার ঘটনায় ওয়ারী থানায় মামলায় শাহনাজকে অভিযুক্ত করে ২০২১ সালের ৩১ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। এ মামলায় চার বছর ধরে শাহনাজ কারাভোগ করছেন। মামলাটি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭–এ বিচারাধীন।
গ্রেপ্তারের পর শাহনাজ আদালতকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। সেখানে শাহনাজ বলেন, ‘২০২১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি আমি সজীবের বাসায় চলে আসি। ওই দিন সেখানে আমি থাকি। পরদিন সজীব আমার গয়না ও টাকা চায়। আমাকে বলেছিল, গয়না বিক্রি করে সিএনজি কিনবে। আমি গয়না ও টাকা দিতে চাইনি। তাই আমাকে গালিগালাজ করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘১১ ফেব্রুয়ারি ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে ভাত রান্না করি। সজীব সকালের নাশতা করে। আমার শরীর খারাপ থাকায় আমি শুয়ে থাকি। সজীব আমাকে নাশতা করতে বললে আমি তাকে বলি, ‘আমি ইনসুলিন নিয়েছি। পরে নাশতা করব। তখন সজীব বলে, আখেরি খাবার খেয়ে নে। হঠাৎ সজীব আমার মাথায় বাড়ি মারে। এরপর বাঁ হাতে বাড়ি দিয়ে আঙুলগুলো উল্টে ধরে হাতটা তার পায়ের নিচে চেপে ধরে এবং বুকের ওপর চেপে বসে। একপর্যায়ে সে ছুরি দিয়ে আমার বুকে আঘাত করতে চায়। তখন আমি ছুরিটা কেড়ে নিয়ে সজীবকে ধাক্কা দিতেই সে খাট থেকে নিচে পড়ে যায়। এরপর তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছুরি দিয়ে আঘাত করি। একপর্যায়ে সে (সজীব) নিস্তেজ হয়ে যায়। সে বলে, আমি তোরে শেষ করতে চাইলাম, তুই আমারে শেষ করে দিলি।’
শাহনাজ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে দাবি করেন, ‘সজীব হাসানের আরও কয়েকজন নারীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। এসব তথ্য জানার পর থেকে তিনি ক্ষুব্ধ ছিলেন।’
সজীব হাসানের খালা নাজনীন আক্তার বলেন, ‘সজীব হাসানের সঙ্গে শাহনাজ পারভীন কয়েকবার তার বাসায় এসেছিলেন। দুজনের বয়সের পার্থক্য বেশি বলে তারা সম্পর্কের বিষয়টি মেনে নেননি। তারা সবাই এখন আসামি শাহনাজের সর্বোচ্চ সাজা চান।’
শাহনাজের আইনজীবী ফারুক আহম্মেদ বলেন, ‘মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ পর্যায়ে এসেছে। তিনি আশা করেন, তার মক্কেল আদালতের কাছ থেকে ন্যায়বিচার পাবেন।’