বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ৫ দেশের ছাত্রসংগঠনের সংহতি
কোটা সংস্কার নিয়ে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছে ভারতসহ ৫ দেশের ৭ ছাত্রসংগঠন।
বুধবার (১৭ জুলাই) এআইএসএ-এর এক্স হ্যান্ডেল থেকে পোস্ট করা একাধিক বিবৃতিতে এই সংহতির কথা জানানো হয়।
ভারতের অল ইন্ডিয়া ডেমক্র্যাটিক স্টুডেন্টস অর্গ্যানাইজেশন (এআইডিএসও) ছাড়াও সংহতি জানানো অন্য সংগঠনগুলো হলো- অল নেপাল ন্যাশনাল ফ্রি স্টুডেন্ট ইউনিয়ন, ডেমোক্রেটিক স্টুডেন্ট ফেডারেশন (পাকিস্তান), সোশ্যালিস্ট স্টুডেন্ট ইউনিয়ন (শ্রীলঙ্কা), সোশ্যালিস্ট ইয়ুথ ইউনিয়ন (শ্রীলঙ্কা), সোশ্যালিস্ট অ্যালায়েন্স (অস্ট্রেলিয়া), ইয়াং কমিউনিস্ট লিগ অব ব্রিটেন, সোয়াস লিবারেটেড জোন ফর গাজা (যুক্তরাজ্য)।
এক্সে পোস্ট করা ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের হাজার হাজার শিক্ষার্থী সরকারি চাকরিতে কোটার বিরুদ্ধে রাস্তায় এবং তাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ করেছে। তারা ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এবং পুলিশের সহিংস দমন-পীড়নের মুখোমুখি হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন হাজার হাজার শিক্ষার্থী। বিক্ষোভ চলাকালে বিভিন্ন জেলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৬ জন।
এতে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ বহু বছর ধরে উচ্চ হারে বেকারত্ব মোকাবিলা করছে। বিশেষ করে ভালো বেতনের এবং স্থিতিশীল সরকারি চাকরির অভাবের কারণে। বেসরকারি খাতে চাকরির সম্ভাবনা বাড়লেও, সরকারি চাকরির জন্য প্রতিযোগিতা তীব্র হয়েছে। প্রতিবছর প্রায় চার লাখ নতুন স্নাতক মাত্র তিন হাজার শূন্যপদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
সংগঠনগুলো জানিয়েছে, বাংলাদেশের কোটাব্যবস্থায় ১৯৭১ সালের মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান ও নাতি-নাতনিসহ নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর জন্য অর্ধেকেরও বেশি ভালো বেতনের সিভিল সার্ভিস পদ সংরক্ষণ করা হয়। শিক্ষার্থীরা এর যৌক্তিক সংস্কার দাবি করছে। উচ্চ বেতনের সরকারি চাকরিতে সাধারণ বরাদ্দের চেয়ে কোটা বেশি হওয়া অযৌক্তিক। আমরা আন্তর্জাতিক ছাত্রসমাজকে বাংলাদেশের প্রতিবাদী ছাত্র ও যুবকদের মেধার ভিত্তিতে ন্যায্য নিয়োগ এবং সরকারি চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে যেকোনো বৈষম্যমূলক প্রথা দূর করার ন্যায়সংগত দাবিকে সমর্থন করার জন্য আহ্বান জানাই। আমরা বাংলাদেশ সরকারের কাছে ছাত্র ও যুবকদের উত্থাপিত সমস্যার সমাধানের জন্য এবং সবার জন্য সমান ও মর্যাদাপূর্ণ চাকরির সুযোগ নিশ্চিত করার আবেদন করছি।
প্রসঙ্গত, চীন সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কোটা সংস্কার আন্দোলন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন ‘মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধার নাতিপুতিরা কিছুই পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতিপুতিরা সব পাবে?’ প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা বা নাতিপুতি’ বলা হয়েছে অভিযোগ করে রোববার রাত থেকে প্রতিবাদ শুরু করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এরপর আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে রাজধানীজুড়ে। মঙ্গলবার সেই আন্দোলন দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়লে ছয়জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। সারাদেশে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশ ও ছাত্রলীগের ন্যক্কারজনক হামলার প্রতিবাদে আজ সারাদেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
মন্তব্য করুন