ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা থেকে খালাস পেলেন তারেক রহমান
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে ‘বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের জাতির পিতা’ ঘোষণা দেওয়ার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে এই মামলা করা হয়।
রোববার (২৮ জুলাই) ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াতের আদালতে তারেকের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণের জন্য দিন ধার্য ছিল। এদিন চার্জশিটটি গ্রহণের জন্য উপযুক্ত উপাদান না থানায় তা খারিজ করে তারেককে অব্যাহতি দেন আদালত।
রাজধানীর শাহবাগ থানায় তারেক রহমানের বিরুদ্ধে এ মামলা করেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল শাখা ছাত্রলীগের উপ-ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম।
জিয়াউর রহমানকে ‘বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের জাতির পিতা’ বলে ঘোষণা দেওয়ার অভিযোগে ২০২১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর শাহবাগ থানায় এ মামলা করা হয়।
এর আগে গত ২ ডিসেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের (সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম) উপ-পরিদর্শক হাসানুজ্জামান ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২১/২৫/২৯/৩১ ধারায় অপরাধ প্রাথমিকভাবে সত্য প্রমাণিত মর্মে সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেন। তারেক রহমান পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ও ক্রোকি পরোয়ানা জারির আবেদন করা হয়েছে।
মামলার সম্পূরক চার্জশিটে তদন্তকারী কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, ২০২১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি মামলার বাদী ও তার বন্ধুরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি চত্বরে বসে মোবাইল ফোনে ইউটিউবে ভিডিও দেখছিলেন। এসময় ‘জিয়াউর রহমানকে জাতির পিতা ঘোষণা দিলেন তারেক রহমান’ শিরোনামে একটি ভিডিও তাদের নজরে আসে।
ভিডিওতে দেখা যায়, বিএনপির ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে লন্ডনে আয়োজিত এক কর্মিসভায় দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তার বক্তব্যের একপর্যায়ে বলেন, ‘তাহলে নেত্রীবৃন্দ, আজ এই সভায় যারা উপস্থিত আছেন, আজ এই সভায় ক্যামেরার মাধ্যমে, প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে কি আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারি, আমাদের নেতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের জাতির পিতা।
‘আমাদের নেতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান শুধু বাঙালি জাতি না, বাঙালিসহ ৫৫ হাজার ১২৬ বর্গমাইলের মধ্যে যতগুলো জাতি বাস করে- যারা বাংলাদেশি জাতির পরিচয় বহন করে, যারা নিজেদের বাংলাদেশি হিসেবে পরিচয় দেয়, সেই বৃহৎ জনগোষ্ঠীর জাতির পিতা, বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের জাতির পিতা। আমরা কি আজ সবাই মিলে এই প্রস্তাব গ্রহণ করতে পারি? তাহলে আজকে থেকে সিদ্ধান্ত হলো- শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের জাতির পিতা।’
চার্জশিটে আরও উল্লেখ করা হয়, ওই কর্মিসভায় তারেক রহমান বাংলাদেশের চলমান স্থিতিশীল পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করার উদ্দেশ্যে এমন মনগড়া মিথ্যা তথ্য সংবলিত উদ্ভট যুক্তি দেন। তিনি জাতিকে নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করে ইতিহাস বিকৃতির চেষ্টা করেছেন। তার ইচ্ছাকৃত ইতিহাস বিকৃতির এ বক্তব্য জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলার অবনতির উদ্দেশ্যে দেওয়া হয়েছে।
সেখানে আরও বলা হয়, আসামি তারেক রহমান তার আলোচনায় ভিত্তিহীন আক্রমণাত্মক তথ্য দিয়ে বাংলাদেশের বাঙালির জাতির পিতাকে নিয়ে অপপ্রচার চালিয়েছেন। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২১/২৫/২৯/৩১ ধারায় অপরাধ প্রাথমিকভাবে সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে।
মন্তব্য করুন