৬ সমন্বয়ককে ছাড়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি: ডিবির হারুন
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত আসেনি বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) দুপুরে তিনি এ তথ্য জানান।
ডিবি প্রধানের দাবি, কোটা সংস্কার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ক ডিবি হেফাজতে রয়েছে ‘নিরাপত্তার স্বার্থে’। তারা হলেন, মো. নাহিদ ইসলাম, মো. সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহ, মো. আবু বাকের মজুমদার, আসিফ মাহমুদ ও নুসরাত তাবাসসুম।
এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়কসহ যাদের ডিবি হেফাজতে রাখা হয়েছে, তাদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়ার আলটিমেটাম দিয়েছে বিক্ষুব্ধ নাগরিক সমাজ।
মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) দুপুর ১২টায় ডিআরইউ সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত ‘হত্যা, অবৈধ আটক ও নির্যাতনের বিচার চাই’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে এই আলটিমেটাম দেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবির) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।
তিনি বলেন, আমরা এই অনুষ্ঠান শেষ করে ডিবি কার্যালয়ে যাব। আমরা ২৪ ঘণ্টা সময় দিচ্ছি। এই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যাদের আটক করে আনা হয়েছে, ধরে নেওয়া হয়েছে, সেটি বন্ধ করা ও তাদের যদি নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়া না হয়, তাহলে আমরা বিক্ষুব্ধ নাগরিক সমাজ ডিবি কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেওয়াসহ কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।
এদিকে ডিবি হেফাজতে থাকা কোটা সংস্কার আন্দোলনের ৬ সমন্বয়ক নিরাপত্তার কথা তোলেননি, এরপরও তাদের আটকে রাখা হয়েছে কেন— এমন প্রশ্ন তুলেছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) আন্দোলনকারীদের ওপর সরাসরি লাইভ রাউন্ড (তাজা গুলি) ব্যবহার না করা এবং নিরাপত্তার নামে হেফাজতে নেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৬ সমন্বয়কদের দ্রুত মুক্তির নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের শুনানিকালে রাষ্ট্রপক্ষের কাছে এ প্রশ্ন রাখেন বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
হাইকোর্ট বলেন, কোটা আন্দোলনের ৬ সমন্বয়কারী তো নিরাপত্তার কথা তোলেননি, তাদের আটকে রাখা হয়েছে কেন? এটা তো প্রসেস হতে পারে না। হয় তাদের গ্রেপ্তার করতে হবে, না হয় ছেড়ে দিতে হবে।
পুলিশ সংবিধান ও আইন অনুযায়ী আচরণ করছে না ইঙ্গিত করে আদালত এরপর বলেন, গত কয়েক দিনের মৃত্যুর ঘটনা দুঃখজনক। কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতা ও মানুষের মৃত্যুর ঘটনায় আমরা লজ্জিত। সংবিধান ও আইনে সব বিষয় লেখা আছে। কিন্তু আমরা কেউই সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করছিনা। পুলিশ কি আচরণ করবে তাতো সিআরপিসিতে পরিস্কার বলা আছে।
এর আগে শুক্রবার (২৬ জুলাই) বিকেলে ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে সেখানে চিকিৎসাধীন নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদের সঙ্গে আবু বাকেরকে তুলে নিয়ে আসেন সাদাপোশাকের একদল ব্যক্তি। পরে ডিবির পক্ষ থেকে বলা হয়, তিন সমন্বয়কের নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়েছে। এরপর রবিবার (২৮ জুলাই) সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহকে নিজেদের কার্যালয়ে নিয়ে আসে ডিবি। এর পরেরদিন সোমবার সকালে আনা হয় নুসরাত তাবাসসুম ও আরিফ সোহেলকে।
মন্তব্য করুন