আবু সাঈদ হত্যার তদন্ত করবে পিবিআই
কোটা সংস্কারের দাবিতে করা আন্দোলনের শুরুতে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন আবু সাঈদ। ১৬ জুলাইয় হত্যাকাণ্ডের ঘটনার দিন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় পুলিশ ও ছাত্রলীগ-যুবলীগও।
পরে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশের ওপর দায় আসে সব মহল থেকে। যদিও পুলিশই এই মামলার তদন্ত করার দায়িত্ব পায়। রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন) সায়েকুজ্জামান ফারুকীকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এরই মধ্যে পটপরিবর্তন হয়। শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে চলে যান ভারতে।
প্রায় একমাস পর শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যা মামলা তদন্ত করতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পুলিশ হেডকোয়ার্টারের নির্দেশে সোমবার ১২ আগস্ট মামলাটি পিবিআইয়ে হস্তান্তর করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে রংপুর জেলা পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার এ বি এম জাকির হোসেন জানান, পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে মামলাটি তাজহাট থানা থেকে পিবিআইয়ে স্থানান্তর করা হয়েছে।
মামলার সংক্ষিপ্ত এজাহারে পুলিশ উল্লেখ করে, দুপুর ২টা ১৫ মিনিটের দিকে ছাত্র নামধারী সুবিধাভোগী রাষ্ট্রবিরোধী আন্দোলনরত দুর্বৃত্তরা বিভিন্ন দিক থেকে বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল ও তাদের নিকটে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র হতে এলোপাতাড়ি গুলি শুরু করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার লক্ষ্যে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশও এপিসি গাড়ির ভেতর থেকে সরকারি ইস্যুকৃত শটগান হইতে ১৬৯ রাউন্ড রাবার বুলেট ফায়ার করে। পুরো বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
সাঈদের মৃত্যুর বিষয়ে বলা হয়, বিভিন্ন দিক থেকে আন্দোলনকারীদের ছোড়া গোলাগুলি ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের একপর্যায়ে একজন শিক্ষার্থীকে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। সহপাঠীরা ধরাধরি করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা দুই থেকে তিন হাজার ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।
পুলিশের প্রাথমিক তথ্য বিবরণীতে (এফআইআর) উল্লেখ করা হয়, সাঈদ পুলিশের গুলিতে নিহত হননি।
এফআইআরে বলা হয়েছে, বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন দিক থেকে গুলি ছুড়তে থাকে এবং ইটের টুকরো নিক্ষেপ করতে থাকে। একপর্যায়ে এক শিক্ষার্থীকে মাটিতে পড়ে যেতে দেখা যায়।
ক্যাম্পাস পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) বিভূতি ভূষণ রায় বিবরণীটি লিখেছেন।
তবে এই এজাহার পরিবর্তন হবে কি না, তা এখনও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
মন্তব্য করুন