অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ নিয়ে আলোচনার সময় এখন না: হাসান আরিফ
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদ নিয়ে আলোচনার সময় এখন না বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ। এ প্রসঙ্গে তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের প্রশ্ন করার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) সচিবালয়ে নিজ অফিসকক্ষে সাংবাদিকরা তাকে অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ নিয়ে প্রশ্ন করলে এ উত্তর দেন হাসান আরিফ।
অন্তর্বর্তী সরকারের এ উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদ কতদিন হতে পারে, তা আমি বলতে পারবো না। এটা বলা একেবারে কঠিন। এটা আমার একক ইচ্ছার ওপরে নির্ভর করে না। আমার অসুবিধা হলে আমি রিজাইন করবো এবং চলে যাবো। মেয়াদ নিয়ে আমার মনে হয় আলোচনার সময় এটা না।
তিনি বলেন, তত্ত্ববধায়ক সরকারের সময়ের প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ আলাদা ছিল। আমরা সেভাবে আমাদের টাইম ফ্রেম ঠিক করেছিলাম। তখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্ব ছিল নির্বাচন করা।
এ এফ হাসান আরিফ বলেন, নির্বাচন করবে নির্বাচন কমিশন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার সহায়তা দেবে। এ সহায়তার মধ্যে একটা কাজ ছিল ভোটার আইডি তৈরি করা। আর অরাজকতাপূর্ণ একটা পরিস্থিতি ছিল, সেটাকে স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে আসা। তখন প্রেক্ষাপট ভিন্ন ছিল। আর এখন সারাদেশে কি হয়েছে? আমরা এটাকে কি বলবো- বিপ্লব বলবো, আন্দোলন বলবো, নাকি বলবো গণ-অভ্যুথান কিংবা গণ-আন্দোলন? এটাকে গণবিপ্লবও বলা যেতে পারে। প্রতিটি গ্রামে মানুষ তার বিক্ষোভ জানিয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলায় বিক্ষোভ জানিয়েছে।
স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বলেন, সরকারের সম্পদ নষ্ট করা হয়েছে। যদিও এটা অনুচিত। কিন্তু যখন মানুষ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে, তখন সে সরকারের সঙ্গে স্বৈরাচারকে এক করে ফেলে। সেজন্য দেখা গেছে সরকারি সম্পত্তি বিনষ্ট হয়েছে। ভয়াবহভাবে বিনষ্ট হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটটা মনে রাখতে হবে। সুতরাং এখানে মেয়াদ সম্পর্কে ছাত্র আন্দোলনের যারা সমন্বয়ক ছিল, তাদের কাছে জিজ্ঞাসা করা যেতে পারে।
রাজনৈতিক দলগুলো তো নির্বাচন চাইছে; সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে হাসান আরিফ বলেন, না, না, এ কথা ঠিক না। কারণ, পলিটিক্যাল পার্টির সঙ্গে যে মিটিং হয়েছে, সেখানে তারা বলেছে- নির্বাচনের ব্যাপারে আমাদের তাড়াহুড়ো করার কিছু নেই।
মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনের আইন সংস্কার করা হবে কি না; সাংবাদিকরা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ২০১৮ সালে আইনে ব্যাপক সংস্কার করা হয়েছে। আইন আছে, তারপরও আমরা একটু রিভিউ করে দেখবো। গত ১৫ বছরে যে তিনটি নির্বাচন হলো, তিনটি নির্বাচনে লু ফলগুলো কোথায় ছিল। তিনটি নির্বাচনে ফাঁকফোকরটা কোথায় ছিল। যে ফাঁকফোকর দিয়ে একেবারে একটা হাতি ঢুকে গেল। ওইগুলো রিভিউ করে আমাদের বন্ধ করার ব্যবস্থা নিতে হবে।
ওয়াসার সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খানকে ঘিরে গড়ে ওঠা দুর্নীতির চক্রের বিরুদ্ধে কি ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তার উত্তরে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বলেন, তাকসিম এ খান ১২ বছর ধরে একটার পর একটা চুক্তির মেয়াদ বাড়িয়ে নিয়েছেন। এই তথ্যগুলো, তার ছবিসহ দুর্নীতির চিত্র, তার চেহারাও মানুষের কাছে পরিচিত হয়ে গেছে। তার কন্ট্রাক্ট টার্মিনেট করা হয়েছে এবং সেই প্রজ্ঞাপনও হয়ে গেছে। এটাই হচ্ছে তাসকিমের বিষয়ে লেটেস্ট খবর।
হাসান আরিফ আরও বলেন, দুর্নীতির এই চক্র বিভিন্ন জায়গায় ছড়ানো ছিটানো অবস্থায় আছে। এগুলো একটু যাচাই-বাছাই এবং খোঁজখবর নিয়ে, তারপর আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, তাকে (তাকসিম) ঘিরে যে দুর্নীতির চক্র হয়েছিল, চক্রের যারা সক্রিয় রয়েছে, বা যারা লুকিয়ে আছে তাদের কি ব্যবস্থার মধ্যে আনা যায়। চিন্তাভাবনা করা হবে এবং পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন