আত্মগোপনে পুলিশের ১০ উর্ধ্বতন কর্মকর্তা
দেশব্যাপী পুলিশের কার্যক্রম প্রায় স্বাভাবিক হয়ে এলেও এখন পর্যন্ত খবর নেই আলোচিত ১০ পুলিশ কর্মকর্তার। কর্মস্থলে ফেরার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের বেঁধে দেওয়া সময় শেষ হলেও কাজে যোগ দেননি তারা। কয়েকজনের কক্ষের দরজায় ঝুলছে তালা। আবার কারও কারও কক্ষ খোলা পাওয়া গেলেও নেই চেয়ার-টেবিল। এ অবস্থায় স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে-সেই পুলিশ কর্মকর্তারা এখন কোথায়? এ কর্মকর্তারা বাদেও বাধ্যতামূলক অবসরে যাওয়া বেশ কয়েকজনেরও খোঁজ মিলছে না।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়িয়ে শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর সরকারঘেঁষা হিসেবে পরিচিত অনেকেই আত্মগোপনে রয়েছেন। এদের অধিকাংশকেই বিভিন্ন মামলায় আসামি করা হয়েছে।
এদিকে কোন কর্মকর্তারা এখনো কাজে যোগ দেননি তার প্রকৃত হিসাব এ মুহূর্তে নেই উল্লেখ করে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলাম বলেন, ‘বেশিরভাগই কাজে যোগ দিয়েছেন। কোনো কারণ ছাড়াই যারা অনুপস্থিত আছেন, তাদের কাছে অবশ্যই কৈফিয়ত তলব করা হবে।’
ডিএমপিসূত্র বলছে, যে পুলিশ কর্মকর্তারা এখনো কাজে যোগ দেননি তাদের মধ্যে আলোচিতরা হলেন অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) হারুন অর রশীদ, অতিরিক্ত কমিশনার (কাউন্টার টেররিজম) মো. আসাদুজ্জামান, যুগ্মকমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার, সনজিত কুমার রায়, যুগ্মকমিশনার (ট্রাফিক দক্ষিণ) মেহেদি হাসান, যুগ্মকমিশনার (লজিস্টিক) জায়েদুল আলম, যুগ্মকমিশনার (সাইবার সিকিউরিটি ও সাপোর্ট সেন্টার-উত্তর) আশরাফ হোসেন, যুগ্মকমিশনার (সাইবার সিকিউরিটি ও সাপোর্ট সেন্টার-দক্ষিণ) মো. শহিদুল্লাহ, উপকমিশনার (উত্তরা) কাজী আশরাফুল আজীম এবং পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত ডিআইজি প্রলয় কুমার সাহা। এদের বেশিরভাগের কক্ষেই তালা ঝুলছে। অনেকের ফোনও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ডিএমপি সদর দপ্তরের ক্রাইম বিভাগ, প্রশাসন বিভাগসহ দু-একটি ইউনিটের সদস্যরা পুরোদমে অফিস করছেন। এছাড়া থানাগুলোয় ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত পুলিশ সদস্য কাজে যোগ দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, কর্মস্থলে অনুপস্থিত পুলিশ সদস্যদের ১৫ আগস্টের মধ্যে কাজে ফেরার নির্দেশ দিয়েছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের সদ্য সাবেক স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। কিন্তু তার আলটিমেটাম শেষ হলেও ক্ষমতাচ্যুত সরকারঘেঁষা হিসেবে পরিচিত ঢাকা মহানগর পুলিশের ওই ১৫ কর্মকর্তা এখন পর্যন্ত কাজে যোগ দেননি বলে জানা গেছে।
সদ্য সাবেক স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন বলেছিলেন, বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে কাজে যোগ না দিলে অনুপস্থিতরা আর ‘চাকরি করতে চাইছেন না’ বলে ধরে নেওয়া হবে। সে হিসেবে পরবর্তী ব্যবস্থাও নেওয়া হবে। ১৫ আগস্টের মধ্যে কাজে যোগ না দিলে চাকরি থাকবে না পুলিশের।
মন্তব্য করুন