গণহত্যায় ইন্ধনের অভিযোগে ইউজিসি চেয়ারম্যানের শাস্তি দাবি
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান (রুটিন দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীরের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যে গণহত্যা সংগঠিত হয়েছে, তাতে ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। একই সঙ্গে ইউজিসির দায়িত্বে থেকে অনিয়ম ও দুর্নীতি করায় তাকে পদ থেকে অপসারণ করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বুয়েটসহ দেশের বিভিন্ন প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি জানানো হয়। ‘বৈষম্যবিরোধী প্রকৌশলী সমাজ’ ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ড. সাব্বির মোস্তফা খান।
অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট), রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট), ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ডুয়েট) এবং খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ (কুয়েট) বিভিন্ন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীরা।
সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক আলমগীরের বিরুদ্ধে ইউজিসির সদস্যের দায়িত্বে থাকাকালে অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা, নিয়োগ, পদোন্নতি, তদারকি, পরিদর্শন, তদন্তকাজ পরিচালনা, পরীক্ষার ফলাফলে অস্বচ্ছতা, সার্টিফিকেট ব্যবস্থাপনা, পরীক্ষার মান নিয়ন্ত্রণ, উন্নয়ন প্রকল্পের তহবিল ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম, অস্বচ্ছতা, পক্ষপাতিত্ব ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরা হয়।
অধ্যাপক আলমগীরকে ছাত্রলীগের অপরাজনীতির প্রবর্তক দাবি করেন তারা। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলনের বিরোধিতা করার অভিযোগ আনেন প্রকৌশলীরা।
সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, অধ্যাপক আলমগীর প্রতিনিয়ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলনের বিরোধিতা করেছেন। আন্দোলন দমনের ষড়যন্ত্রেও লিপ্ত ছিলেন তিনি। তার ইন্ধন ও ষড়যন্ত্রের নীলনকশায় খুলনায় বহু আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতা ছাত্রলীগ, যুবলীগের সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হয়েছেন। আহত হয়েছেন অনেকে।
বৈষম্যবিরোধী প্রকৌশলী সমাজের সদস্যরা বলেন, ড. আলমগীর খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) থাকাকালে হলের সিট বাণিজ্য, ডাইনিংয়ের খাবার বাণিজ্য, টর্চার সেল গঠন, র্যাগিং, টেন্ডার ও কমিশন বাণিজ্য, শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ বাণিজ্য করতেন। সাধারণ ছাত্র, এমনকি শিক্ষক-কর্মচারীদের বহিরাগত ও ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন ও মারধরে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। তার ইন্ধনে ছাত্রদের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়ে দুজন শিক্ষকের মৃত্যু হয় বলেও অভিযোগ আনা হয়।
এছাড়া কুয়েটে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগে বাণিজ্য, মেধার পরিবর্তে আর্থিক লেনদেন ও ছাত্রলীগের সনদপত্র দেখে নিয়োগ, নিয়োগে নানা অনিয়ম এবং নিয়োগে ছাত্রলীগের সহযোগিতার কথাও তুলে ধরেন বৈষম্যবিরোধী প্রকৌশলী সমাজ। এজন্য ইউজিসির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব, সদস্য পদ এবং কুয়েটের শিক্ষক পদসহ সব কার্যক্রম থেকে অধ্যাপক আলমগীরকে অপসারণ এবং সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তারা।
মন্তব্য করুন