সাবেক এমপি জর্জ ফের রিমান্ডে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের অটোরিকশাচালক রনি হত্যা মামলায় কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী-খোকসা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সেলিম আলতাফ জর্জকে ফের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক আলতাফ হোসেন তাকে ফের পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরফাতুল রাকিবের আদালত তার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে, গত ১৮ সেপ্টেম্বর এই মামলায় আদালত তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে রাজধানীর লালমাটিয়া এলাকা থেকে সেলিম আলতাফ জর্জকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি দল।
আরটিভি/আইএম-টি
মন্তব্য করুন
প্রয়োজনে ভারতে ত্রাণ পাঠানো হবে: উপদেষ্টা নাহিদ
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, প্রয়োজন হলে বাংলাদেশ থেকে ভারতের সিকিম-ত্রিপুরায় ত্রাণ সহায়তা পাঠানো হবে।
শুক্রবার (২৩ আগস্ট) বিকেলে নিজের ফেসবুক আইডি থেকে এক পোস্টে এ কথা বলেন তিনি।
ওই পোস্টে নাহিদ ইসলাম লিখেছেন, বাংলাদেশ জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের স্পিরিট ও দেশ রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ এবং যেকোনো সংকট মোকাবিলায় প্রস্তুত। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, সংগ্রামী ছাত্র-জনতা এবং সশস্ত্র বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরলসভাবে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম করে যাচ্ছে বন্যাকবলিত এলাকায়। বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, প্রবাসী বাংলাদেশি ও দেশপ্রেমিক ব্যবসায়ীরাও সহযোগিতা করছে। ইনশাআল্লাহ আমরা দ্রুত দুর্যোগকাল কাটিয়ে উঠতে পারব। প্রয়োজন হলে বাংলাদেশ থেকে সিকিম-ত্রিপুরায় ত্রাণ সহায়তা পাঠানো হবে।
এর আগে নাহিদ ইসলাম বলেছিলেন, আগাম সতর্কতা ছাড়া বাঁধ খুলে দিয়ে ভারত অমানবিকতার পরিচয় দিয়েছে।
তিনি উল্লেখ করেন, সতর্কতা না দিয়ে বাঁধ খুলে ভারত অমানবিকতার পরিচয় দিলেও আমরা ভারতের বন্যাকবলিত জনগণের প্রতি সমব্যাথী। বাংলাদেশের জনগণ ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ভারতের বন্যাকবলিত জনগণের পাশে থাকবে।
তবে নাহিদের এমন বিবৃতির জবাবে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, আমরা ডম্বুরের গেট খুলে দিয়েছি, সেটা যে সঠিক তথ্য নয়, তা দেখার জন্য তারা যদি সীমান্ত পেরিয়ে ত্রিপুরায় আসেন, আমি নিজে গাড়ি করে তাদের নিয়ে যাব ডম্বুর দেখাতে।
দুই দফা দাবি বাস্তবায়নে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আল্টিমেটাম
পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে একীভূত করে অভিন্ন সার্ভিস কোড বাস্তবায়ন এবং চুক্তিভিত্তিক ও অনিয়মিতদের চাকরি নিয়মিত করায় দুই দফা দাবি বাস্তবায়ন এবং মন্ত্রণালয়ের দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে আন্দোলনরত ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা কর্মচারীরা।
শনিবার (২৪ আগস্ট) বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ব্যানারে এ ঘোষণা দেয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৪৫ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী সপ্তাহে সাত দিন দিনে ২৪ ঘণ্টা রোদ, ঝড়, বৃষ্টি উপেক্ষা করে দেশের ৮০ ভাগ অঞ্চলের প্রায় ১৪ কোটি মানুষকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করেন। পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের দ্বৈতশাসন, বৈষম্য ও নিপীড়ন থেকে মুক্তির জন্য আরইবি-পবিস একীভূতকরণসহ অভিন্ন চাকুরি বিধি বাস্তবায়ন এবং সকল অনিয়মিত বা চুক্তিভিত্তিক কর্মচারীদের নিয়মিতকরণের ২ দফা দাবিতে আন্দোলন করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে।
দাবি আদায়ে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সচল ও গ্রাহক সেবা চালু রেখে সারাদেশে একযোগে গত ৫ মে থেকে টানা পাঁচ দিন কর্মবিরতির ফলশ্রুতিতে বিদ্যুৎ বিভাগের মধ্যস্থতায় একটি সমঝোতা সভা অনুষ্ঠিত হয় এবং কর্মবিরতি স্থগিত করা হয়। অতঃপর বিদ্যুৎ বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী ৩৮ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর স্বাক্ষরসহ যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিতভাবে দাবি পেশ করা হয়। সন্তোষজনক ফলাফল না আসায় পুনরায় ১ জুলাই থেকে টানা ১০ দিন কর্মবিরতির ফলে বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব, তিনজন অতিরিক্ত সচিব, আরইবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতিতে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয় এবং আরইবি-পবিস একীভূতকরণ বা রিফর্মের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
বিদ্যুৎ বিভাগ কর্তৃক আরইবি-পবিস একীভূতকরণ বা রিফর্ম এখন সময়ের দাবি হিসেবে উল্লেখ করা হয় এবং চলতি মাসের ১ তারিখে আরইবি, সমিতি এবং মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে ৯ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। একই তারিখে আন্দোলনে সম্পৃক্ত থাকায় সমিতির ২ জন জিএম এবং ৪ জন ডিজিএম-কে শাস্তি বা হয়রানিমূলক বদলির দপ্তরাদেশ করে আরইবি (ইতিপূর্বে আন্দোলনের কারণে ১০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সংযুক্ত বা বরখাস্ত করা হয়)।
উক্ত আদেশ স্থগিত করার জন্য সমিতির কর্মকর্তা কর্মচারীদের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়, এমনকি বিদ্যুৎ বিভাগ কর্তৃক মৌখিক নির্দেশনা সত্ত্বেও আরইবি কর্তৃক তা বাতিল/স্থগিত করা হয়নি।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পুনরায় আন্দোলনের প্রস্তুতি গ্রহণের খবর পেয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ কর্তৃক তারিখে পূর্বগঠিত কমিটির সভা আয়োজন করা হয়। উক্ত সভায় পূর্ব নোটিশ ছাড়াই আরইবির সকল প্রতিনিধি অনুপস্থিত থাকেন। এ বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। ফলে সমিতির কর্মকর্তা কর্মচারীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজমান থাকায় আরইবির প্রতি অনাস্থা জানিয়ে সমিতি থেকে সকল প্রকার তথ্য সরবরাহ তথা আরইবির সাথে সকল ধরনের যোগাযোগ বন্ধ রাখা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পেশাজীবী হিসেবে নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের প্রতি শতভাগ জনবলের ঘৃণা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। চলতি বছরের প্রথম থেকে উৎপত্তি হওয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির চলমান আন্দোলন কোন বেতন-ভাতা কিংবা আর্থিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট নয়; আরইবির দ্বৈতনীতি বা দ্বৈতশাসন থেকে মুক্তি, বিদ্যুৎ খাতের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত এবং একটি টেকসই, আধুনিক ও গ্রাহক বান্ধব বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা গড়ার আন্দোলন। দীর্ঘদিন ধরে সুশৃঙ্খলভাবে গ্রাহক সেবা চালু রেখে নানান কর্মসূচি পালন করলেও সংশ্লিষ্ট মহল কার্যকর সমাধানের বিষয়ে পুরোপুরি উদাসীন বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।
এমতাবস্থায়, আরইবি এবং পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বিদ্যমান বৈষম্য নিরসনে আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে পূর্ব ঘোষিত ২ দফা দাবি বাস্তবায়ন এবং পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ন্যায্য দাবি প্রতিহত করে কর্মপরিবেশ বিনষ্টের অপচেষ্টায় লিপ্ত আরইবির কতিপয় উশৃঙ্খল, দুষ্কৃতিকারী ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার শাস্তি নিশ্চিত পূর্বক সঠিক ও সুষ্ঠু সমাধানের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সদয় হস্তক্ষেপ এবং ছাত্র-জনতার সহযোগিতা কামনা করছি।
অন্যথায়, সারাদেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৪৫ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী একযোগে স্টেশন ত্যাগপূর্বক অনির্দিষ্টকালের জন্য গণছুটি প্রয়োজনে গণপদত্যাগ কর্মসূচি ঘোষণা করা ছাড়া গত্যন্তর থাকবে না। ফলে দেশের সর্ববৃহৎ বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে জরুরি বিজ্ঞপ্তি
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে অপপ্রচার নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে জরুরি বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে।
রোববার (২৫ আগস্ট) দুপুরে গণমাধ্যমকে পাঠানো সেই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নাম ব্যবহার করে কোনো একটি স্বার্থান্বেষী মহল দেশের মূল ধারার গণমাধ্যমগুলোসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। বলা হচ্ছে এসব গণমাধ্যম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে সমর্থন করে নাই বা সহযোগিতা করে নাই, তাই তাদের সহযোগিতা না করতে। সহযোগিতা করলে অপমান-অপদস্থ, চাকরিচ্যুত করা হবে।
এতে আরও বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়কে জানিয়েছে, এ ধরনের অপপ্রচারমূলক চিঠি বা তালিকা ভুয়া। তাই এ বিষয়ে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে অনুরোধ করা হয়েছে।
এর আগে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নাম ব্যাবহার করে গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের একটি প্রেস রিলিজ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ফেসবুকে ওই ভুয়া প্রেস রিলিজ শেয়ার করে বলেন, এই প্রেস রিলিজ ভুয়া। এর সাথে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো সম্পর্ক নেই।
খালেদা জিয়াকে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি জায়েদ-জয়-সাজুসহ ৫০ জন
২০১৫ সালের ২০ এপ্রিল বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলা করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে চিত্রনায়ক জায়েদ খান, অভিনেতা শাহরিয়ার নাজিম জয়, সাজু খাদেমসহ ৫০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
রোববার (২৫ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকী আল ফারাবীর আদালতে ব্যান্ড শিল্পী আসিফ ইমাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে অভিযোগটি মতিঝিল থানা পুলিশকে এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার উল্লেখযোগ্য অপর আসামিরা হলেন, শেখ সেলিম, শেখ হেলাল, কর্নেল ফারুক খান, ফজলে নূর তাপস, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, সাবের হোসেন চৌধুরী, মজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরী, সাইদ খোকন, বাফুফের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন, সাংবাদিক শাবান মাহমুদ, আবু আহম্মেদ মন্নাফী, মতিঝিল জোনের তৎকালীন এডিসি মেহেদী, একে এম মমিনুল হক সাঈদ, মোস্তফা জামান পপি।
মামলার অভিযোগে বাদী উল্লেখ করেন, ২০১৫ সালের ২০ এপ্রিল নির্বাচনী প্রচারণার সময় বিএনপির কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত পথসভায় বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে হত্যার উদ্দেশ্যে আসামিরা অস্ত্রসহ তার গাড়িবহরে আসামিরা হামলা চালান। এ সময় খালেদা জিয়ার গাড়িবহরের ১২-১৪ টি গাড়ি ভাঙচুর করে, ৪টি মোটরসাইকেলে আগুন দেয় এবং নেতাকর্মীদের মারধর করেন। এ সময় খালেদা জিয়ার নিরাপত্তারক্ষীরা আহত হন। খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে আসামিরা ইট-পাথর নিক্ষেপ করলে সাধারণ পথচারীরা আহত হন।
ফারাক্কা বাঁধ খোলায় বন্যাঝুঁকিতে দেশের যেসব জেলা
ভারতের বিহার ও ঝাড়খণ্ডে বন্যার জেরে ফারাক্কা বাঁধের ১০৯টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (২৬ আগস্ট) গেটগুলো খুলে দেওয়া হয়। এতে একদিনে ১১ লাখ কিউসেক পানি বাংলাদেশে ঢুকবে।
এদিকে ফারাক্কা বাঁধ খুলে দেওয়ায় দেশের রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী ও মানিকগঞ্জসহ আশপাশের জেলাগুলো প্লাবিত আশঙ্কা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নদ-নদীবিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিভারাইন পিপলের পরিচালক এম আনোয়ার হোসেন।
সোমবার (২৬ আগস্ট) ফারাক্কা বাঁধ খুলে দেওয়ার বিষয়ে গণমাধ্যমে এ আশঙ্কার কথা জানান তিনি।
এম আনোয়ার হোসেন, ফারাক্কার গেট খুলে দেওয়ার খবরটি আমাদের জন্য বিপদজনক। এর ফলে দেশের রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী ও মানিকগঞ্জসহ আশপাশের জেলাগুলো প্লাবিত হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে সোমবার ফারাক্কা বাঁধ কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রতিবেশী দুই রাজ্যে বন্যার জেরে পানির চাপ পড়েছে। তবে স্বস্তির বিষয়, এখনো নেপাল থেকে পাহাড়ি ঢল নামেনি। ফারাক্কা বাঁধ এলাকায় পানি বিপৎসীমার ৭৭ দশমিক ৩৪ মিটার উপর দিয়ে বইতে থাকায় বাধ্য হয়ে গেট খুলতে হচ্ছে। সেক্ষেত্রে ফিডার ক্যানেলেও পানির পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে।
ফারাক্কা বাঁধের জেনারেল ম্যানেজার আর দেশ পাণ্ডে জানিয়েছেন, ফারাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ সবসময় এলার্ট রয়েছে। প্রতিমুহূর্তে নজর রাখা হচ্ছে। খুব কম সময়ের মধ্যে যেভাবে পানির চাপ তৈরি হয়েছে, তাতে ১০৯ গেটের সবকটি খুলে না দিল ব্যারাজের ওপর বড় চাপ তৈরি হচ্ছিল। এর ফলে বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারত। আপাতত ফিডার ক্যানেলে ৪০ হাজার কিউসেক ও ডাউন স্ট্রিমে ১১ লাখ কিউসেক পানি ছাড়া হয়েছে।
এদিকে ভারি বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা ঢলে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় ১১ জেলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩ জনে। এসব জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৫৭ লাখেরও বেশি মানুষ। সোমবার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের বন্যা পরিস্থিতির সর্বশেষ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বন্যা আক্রান্ত ১১টি জেলা ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, লক্ষ্মীপুর ও কক্সবাজারের মোট ৭৪টি উপজেলার প্রায় ১২ লাখ ৩৮ হাজার ৪৮টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত লোকসংখ্যা ৫৭ লাখ ১ হাজার ২০৪ জন।
আগে থেকেই খোলা ছিল ফারাক্কার সব গেট, বন্যার আশঙ্কা নেই
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-রাজশাহীসহ ফারাক্কার ভাটি এলাকায় আগামী দু-তিন দিনের মধ্যে আকস্মিক বন্যার আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছে রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ড। এমনকি ফারাক্কার ১০৯টি গেট আগে থেকেই খোলা ছিল বলে জানানো হয়েছে।
সোমবার (২৬ আগস্ট) সন্ধ্যায় এসব তথ্য নিশ্চিত করেন রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুর রহমান অঙ্কুর।
তিনি জানান, যে হারে পানি বাড়ছে, এতে আগামি দু-তিন দিনে অঞ্চলে বন্যার আশঙ্কা নেই। এখনও পদ্মা নদীর পানি বিপৎসীমার অনেক নিচে রয়েছে।
প্রকৌশলী আরিফুর রহমান অঙ্কুর আরও বলেন, বর্ষার শুরু থেকেই ফারাক্কার গেটগুলো খোলা ছিল। এখন পদ্মায় পানির যে স্তর, গত ১৫ দিন আগে যা ছিল, তার চেয়ে কম। কাজেই বড় ধরনের প্লাবনের কোনো শঙ্কা নেই।
একাধিক বিশেষজ্ঞ জানান, বর্ষা মৌসুমে ফারাক্কা বাঁধের প্রতিটি গেট খোলা থাকে। তবে তার পরিমান ৬ ইঞ্চির মতো। বাঁধ খোলা থাকলেও উজানে আর ভাটি এলাকায় (নদীতে) পানির উচ্চতার তারতম্য থাকে। যখন উজানে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পায় এবং ফিডার ক্যানেলে পানি পরিপূর্ণ হয়, বন্যার অবস্থা তৈরি হয় তখন ফারাক্কার গোটগুলো ৬ ইঞ্চির থেকে বাড়িয়ে পুরোটা খোলা হয়। এতে ভাটিতে বিপদের শঙ্কা বাড়ে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জে পদ্মা নদীতে গত ২৪ ঘণ্টায় পদ্মার পাংখা পয়েন্টে পানি বেড়েছে ৩ সেন্টিমিটার। পদ্মায় বিপৎসীমা ২২ দশমিক ৫ মিটার। বর্তমানে পানির স্তর রয়েছে ২০ দশমিক ৪৮ মিটার। পদ্মা নদী ছাড়াও চাঁপাইনবাবগঞ্জে অন্য দুই নদী মহানন্দা ও পুর্নভবায় পানি বৃদ্ধির হার একই।
মহানন্দায় বিপৎসীমা ২০ দশমিক ৫৫ মিটার। বর্তমানে মহানন্দা নদীতে পানির স্তর রয়েছে ১৮ দশমিক ৪৯ মিটার। পুর্নভবায় বিপৎসীমা ২১ দশমিক ৫৫ মিটার। বর্তমানে এই নদীতে পানির স্তর রয়েছে ১৮ দশমিক ৫৫ মিটার।
দেশের মানুষের প্রতি শেখ হাসিনার ক্ষোভ ছিল, জিজ্ঞাসাবাদে মেনন
রাজধানীর আদাবর থানায় করা পোশাকশ্রমিক রুবেল হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রিমান্ডে আছেন ১৪ দলের শরিক বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন।
বুধবার (২৮ আগস্ট) ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) সূত্রে জানা গেছে, রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে দেশের মানুষের প্রতি শেখ হাসিনার চরম ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন মেনন।
জিজ্ঞাসাবাদে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি বলেন, ‘১৯৭৫ সালে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার কারণে এ দেশের মানুষের প্রতি চরম ক্ষোভ ছিল শেখ হাসিনার। তাই তার আচার-আচরণ এমন ছিল যে, দেশের মানুষ মরুক বা বাঁচুক এ নিয়ে কোনো মাথাব্যথা নেই। তিনি চেয়েছিলেন শুধু ক্ষমতা। আজীবন ক্ষমতায় থাকার লোভ তাকে পেয়ে বসেছিল। এই মানসিকতাই তার জন্য কাল হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলন কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আগে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমরা অনেক পরামর্শ দিয়েছিলাম। তিনি আমাদের কোনো কথাই শোনেননি।
রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে আমরা বারবার দেশের অর্থনৈতিক দুরবস্থার কথা মনে করিয়ে দিয়েছি। ছাত্র-জনতার দাবি মেনে নিতে বলেছি। তিনি আমাদের কোনো কথায় কর্ণপাত করেননি। পুলিশ, আনসার, বিজিবি এবং সেনাবাহিনীর ওপর নির্ভর করে তিনি ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিলেন।’