আন্দোলনে নিহতদের পরিবারের সদস্যদের পর্যটনে সম্পৃক্তের আশ্বাস
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দিয়ে প্রাণ হারানো ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিয়ে পর্যটন শিল্পে সম্পৃক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসরীন জাহান।
বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে ‘বিশ্ব পর্যটন দিবস-২০২৪’ উপলক্ষে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ আশ্বাস দেন পর্যটন সচিব।
তিনি বলেন, প্রতি বছরের মতো বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশেও বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) যথাযথভাবে ‘বিশ্ব পর্যটন দিবস ২০২৪’ উদযাপিত হতে যাচ্ছে। জাতিসংঘ বিশ্ব পর্যটন সংস্থার নির্ধারিত এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘ট্যুরিজম অ্যান্ড পিস’।
বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি এবং পর্যটন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত প্রধান উপদেষ্টা এরই মধ্যে বাণী দিয়েছেন জানিয়ে সচিব বলেন, এ উপলক্ষে গণমাধ্যমে বিভিন্ন নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে এবং দিবসটিতে সংবাদপত্রে ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হবে। ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় দিবসটির গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন অব্যাহত আছে। মোবাইল ফোনেও দিবসটি নিয়ে ম্যাসেজ পাঠানো হবে।
নাসরীন জাহান বলেন, ‘বাংলাদেশ পর্যটনে বিপুল সম্ভাবনাময় একটি দেশ। নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সমৃদ্ধ ইতিহাস, বৈচিত্র্যপূর্ণ সংস্কৃতি আমাদের দেশকে পরিণত করেছে একটি অনন্য আকর্ষণীয় পর্যটন গন্তব্যে। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন, পৃথিবীর দীর্ঘতম অবিচ্ছেদ্য সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার, পার্বত্য চট্টগ্রামের অকৃত্রিম সৌন্দর্য, সিলেটের চা-বাগানসহ আরও অনেক প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি আমাদের এ প্রিয় দেশ।’
তিনি বলেন, ‘পর্যটন শিল্প বিকাশের সব সম্ভাবনা এ দেশে বিরাজমান। একে কাজে লাগিয়ে আমরা বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে কাজ করছি। এ ব্যাপারে সবার সুচিন্তিত মতামত গ্রহণ করা হবে।’
সচিব আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে পর্যটন শিল্পের বিশাল সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে তরুণ ও যুবকদের এ সেক্টরে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেয়ার মাধ্যমে বেকারত্ব দূর করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। এর মাধ্যমে নবীনরা দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতিতে অবদান রাখার সুযোগ পাবে। জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের অকুতোভয় বীর শহিদদের গৌরবগাথাকে অমলিন করার লক্ষ্যে শহীদ পরিবারের সদস্যদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিয়ে পর্যটন শিল্পে সম্পৃক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। এর মাধ্যমে এ বিপ্লবকে এক ভিন্ন মহিমায় উদ্ভাসিত করা হবে।
এদিকে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে বিশ্ব পর্যটন দিবস উদযাপনের জন্য বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, এর অধীন দফতর-সংস্থাগুলো, ট্যুরিস্ট পুলিশ এবং অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
কর্মসূচির অংশ হিসেবে শুক্রবার সকাল ৮টায় রাজধানীর আগারগাঁও পর্যটন ভবন থেকে বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হবে; সকাল ৯টায় পর্যটন ভবনের ‘শৈলপ্রপাত হলে’ দিবসের প্রতিপাদ্য নিয়ে সেমিনার হবে। এছাড়া দিবসটি ঘিরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস তাদের টিকিটে বিশেষ মূল্যছাড় ঘোষণা করেছে।
সেইসঙ্গে প্রতিটি জেলায় শিশুদের নিয়ে পর্যটনকেন্দ্রিক চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। জেলা পর্যায়েও উৎসবমুখর পরিবেশে বিশ্ব পর্যটন দিবস উদযাপনের আয়োজন করা হয়েছে।
আরটিভি/এসএইচএম-টি
মন্তব্য করুন