রাজধানীতে শেখ হাসিনা-রেহানাসহ ১৬৫ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনতাকে দমনে নির্বিচারে গুলি করে হত্যা ও গুমের ঘটনায় রাজধানীতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানাসহ ১৬৫ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে আদাবর থানায় মো. সাহিদ নামে একজন বাদী হয়ে হত্যা মামলাটি দায়ের করেন।
এ মামলায় শেখ সেলিম, ফজলে নূর তাপস, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানককেও আসামি করা হয়েছে।
আদাবর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহফুজ ইমতিয়াজ ভূঁইয়া আরটিভিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, আদাবর থানায় শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানাসহ ১৬৫ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে।
আরটিভি/একে
মন্তব্য করুন
দেশের মানুষের প্রতি শেখ হাসিনার ক্ষোভ ছিল, জিজ্ঞাসাবাদে মেনন
রাজধানীর আদাবর থানায় করা পোশাকশ্রমিক রুবেল হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রিমান্ডে আছেন ১৪ দলের শরিক বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন।
বুধবার (২৮ আগস্ট) ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) সূত্রে জানা গেছে, রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে দেশের মানুষের প্রতি শেখ হাসিনার চরম ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন মেনন।
জিজ্ঞাসাবাদে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি বলেন, ‘১৯৭৫ সালে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার কারণে এ দেশের মানুষের প্রতি চরম ক্ষোভ ছিল শেখ হাসিনার। তাই তার আচার-আচরণ এমন ছিল যে, দেশের মানুষ মরুক বা বাঁচুক এ নিয়ে কোনো মাথাব্যথা নেই। তিনি চেয়েছিলেন শুধু ক্ষমতা। আজীবন ক্ষমতায় থাকার লোভ তাকে পেয়ে বসেছিল। এই মানসিকতাই তার জন্য কাল হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলন কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আগে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমরা অনেক পরামর্শ দিয়েছিলাম। তিনি আমাদের কোনো কথাই শোনেননি।
রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে আমরা বারবার দেশের অর্থনৈতিক দুরবস্থার কথা মনে করিয়ে দিয়েছি। ছাত্র-জনতার দাবি মেনে নিতে বলেছি। তিনি আমাদের কোনো কথায় কর্ণপাত করেননি। পুলিশ, আনসার, বিজিবি এবং সেনাবাহিনীর ওপর নির্ভর করে তিনি ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিলেন।’
কমছে হজের খরচ
আসন্ন হজ প্যাকেজের মূল্য কমিয়ে যৌক্তিক পর্যায়ে আনতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় কাজ শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন ও প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় যমুনায় অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আমাদের হজ একটা বড় ব্যাপার মুসলমানদের জন্য। কিন্তু হজের মতো পবিত্র কাজেও একটি সিন্ডিকেট দেখতে পাই। তারা কারসাজি করে হজের প্যাকেজ মূল্য বাড়িয়ে তোলে। হজের যে খরচ, সেটি যৌক্তিক পর্যায়ে কমিয়ে আনা যায়, সে জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় কাজ শুরু করেছে। কত হতে পারে, কত কমানো যেতে পারে সেই আলোচনা হয়। বর্তমান প্যাকেজ যে অনেক বেশি, সেটি কমিয়ে আনা সম্ভব, সে বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে।
এর আগে, গত বছর সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজের দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছিল আওয়ামী লীগ সরকার। সরকারি প্যাকেজে সর্বনিম্ন ৫ লাখ ৭৯ হাজার টাকা এবং বেসরকারি প্যাকেজে সর্বনিম্ন প্রায় ৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়।
এ বছর এখনও হজের প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়নি। এখন প্রাক নিবন্ধন চলছে। আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে চূড়ান্ত নিবন্ধন শুরু হয়ে চলবে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। প্রাথমিক নিবন্ধনের সময়ের পর আর সময় বাড়ানো হবে না।
গত ২৬ আগস্ট ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এ বছর এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন বাংলাদেশি পবিত্র হজ পালন করতে পারবেন। সৌদি সরকার আরও আগেই বাংলাদেশের জন্য এই কোটা ঘোষণা করেছে।
‘ডিবির হারুন আছে’ সন্দেহে বাড়ি ঘেরাও, অতঃপর...
আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা ডিএমপির সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন্স) হারুন অর রশীদ অবস্থান করছেন এমন সংবাদের ভিত্তিতে উত্তরার একটি বাসা ঘিরে রেখে সেনাবাহিনীকে খবর দেন স্থানীয়রা। বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) রাত ১০টায় উত্তরা সেক্টর ১০ এর ১২ নম্বর রোডের ৪ নম্বর বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ‘ডিবি হারুন’ (সাবেক ডিবি প্রধান) এই ভবনে আছেন বলে গুঞ্জন উঠে। এরপর ফেসবুকে অনেকে লাইভ শুরু করে। লাইভ দেখেই সবাই বাড়ির সামনে এসে জড়ো হন। বাড়িটিতে অনেকগুলো পরিবার থাকে। হারুন কোন ফ্লোরে আছেন তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি, তবে বাড়ির চারপাশে এমনভাবে ঘিরে রাখা হয়েছে তার পক্ষে পালানো সম্ভব নয়।
রাত ১০ টার পর থেকে হারুনের উপস্থিতির গুঞ্জন থাকলে সেখানে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা আসে। তবে তারা বাড়িটিতে তল্লাশি চালিয়ে হারুনকে পাননি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাত ১২টায় উত্তরা পশ্চিম থানার এক কর্মকর্তা জানান, ভবনের ভেতরে কোনো আসামি পাওয়া যায়নি। পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থল থেকে চলে গেছে।
এর আগে গত ৬ আগস্টও হারুণ অর রশীদের আটক হওয়ার গুঞ্জন উঠে। কিন্তু পরদিন তিনি নিজেই আটক হওয়ার খবরটি নাকচ করেন। এরপর থেকে তার আর খোঁজ পাওয়া যায়নি।
সবশেষ ১৬ আগস্ট রাজধানীর খিলক্ষেতে ‘লেকসিটি কনকর্ড’ এলাকায় একটি অভিযান চালিয়েছিল যৌথবাহিনী। অভিযানে লেকসিটির 'বর্ণালী' ভবন থেকে হারুনের গাড়ি সন্দেহে মালিকবিহীন পড়ে থাকা একটি সাদা মাইক্রোবাস জব্দ করা হয়।
পলাতক বায়তুল মোকাররমের খতিব, জুমার নামাজের দায়িত্বে যিনি
জনরোষে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পলাতক রয়েছেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব হাফেজ মুফতি মাওলানা মোহাম্মদ রুহুল আমিন। তার অনুপস্থিতিতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গবেষণা বিভাগের মুহাদ্দিস ড. ওয়ালীয়ুর রহমান খানকে জুমার নামাজ পড়ানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দার।
তিনি বলেন, ‘খতিব আসতেছে না। তাই সাময়িকভাবে জুমার নামাজ পড়ানোর জন্য ওয়ালীয়ুর রহমান খানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। খতিব পালিয়ে আছে আমরা কী করব? সে কেন পালিয়েছে আমরা জানি না? আমরা তাকে শোকজও দিয়ে রেখেছি। আমরা তো নামাজ বন্ধ রাখতে পারবো না। তাই একজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’
জানা গেছে, ২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর এক মাহফিলে’ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘কওমি জননী’ উপাধিতে দিয়েছিলেন হাফেজ মুফতি মাওলানা মোহাম্মদ রুহুল আমিন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন তিনি। তবে দল থেকে তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি।
বিএনপির সঙ্গে দ্বন্দ্ব মেটাতে চান জয়, যা বললেন ফখরুল
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশে পাল্টে যায় রাজনৈতিক দৃশ্যপট। এরপর নোবেলজয়ী ড. ইউনূসকে প্রধান করে গঠিত হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
এদিকে শেখ হাসিনার পতনের পর থেকেই বিএনপির সঙ্গে পুরনো সব দ্বন্দ্ব মেটাতে প্রস্তাব করেছেন শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। জয়ের এমন প্রস্তাব নিয়ে সম্প্রতি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মির্জা ফখরুল বলেছেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল সব সময় গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। সরকার পতনের পর চেয়ারপারসনও বলেছেন- আমরা প্রতিশোধ, প্রতিহিংসার রাজনীতি করতে চাই না। আমরা সৌহার্দ্য, ভালোবাসা এবং সুসম্পর্কের রাজনীতি করতে চাই। কিন্তু একই সময়ে জনগণের কাছে জবাবদিহি একটা বড় বিষয়। আমরা যে কাজগুলো করেছি জনগণ তো তার জন্য আমাদের বিচার করবে। আজকে আওয়ামী লীগকে তার গত ১৫ বছরের কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহি করতে হবে। দেশের রাজনীতি, অর্থনীতিকে কিভাবে তারা ধ্বংস করেছে, তার জন্য তাকে তো জবাবদিহি করতে হবে। তারা জবাবদিহি করে গণতান্ত্রিকভাবে রাজনীতি করলে আমাদের তো কোনো আপত্তি নেই। আমরা বিশ্বাস করি- যেকোনো দলের যেকোনো ব্যক্তির রাজনীতি করার অধিকার আছে, সেভাবে করবে।
বিএনপির সঙ্গে দ্বন্দ্ব মিটিয়ে ফেলতে আগ্রহ প্রকাশ করে গত ৮ আগস্ট জয় রয়টার্সকে বলেন, খালেদা জিয়া তার বক্তব্যে বলেছেন, যা হওয়ার হয়ে গেছে, সেগুলো মনে রাখার প্রয়োজন নেই। তার এমন বক্তব্যে আমি খুশি। আমরা অতীত ভুলে যাই। আমরা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ না করি। আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে, সেটি ঐকমত্যের সরকার হোক বা না হোক।
গণতান্ত্রিক লড়াইয়ের জন্য বিএনপির সঙ্গে কাজ করতে ইচ্ছুক জানিয়ে জয় আরও বলেন, বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচন আয়োজন ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে আমরা বিএনপির সঙ্গে কাজ করতে চাই। আমরা তাদের সঙ্গে কাজ করতে চাই এটি নিশ্চিত করার জন্য যে বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক পরিবেশ থাকবে, যেখানে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। রাজনীতি ও আলোচনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে আমি মনে করি। আমরা নানা ইস্যুতে তর্ক করতে পারি। আমরা কোনো বিষয়ে একমত না-ও হতে পারি। তবে ভিন্নমত পোষণের অধিকারের প্রতি আমাদের একমত থাকতে হবে। আর আমরা সব সময়ই আপস করার উপায়ও খুঁজে বের করতে পারি।
এসব বিষয় নিয়ে মির্জা ফখরুল আরো বলেন, বিএনপি কখনো মানুষের বিপক্ষে কিছু করেনি। দেশ চালাতে গেলে কিছু ভুল হয়, কিন্তু সেই ভুল দেশ ও মানুষকে ক্ষতি করেনি। মিডিয়ার যে স্বাধীনতা সেটা বিএনপি দিয়েছে, সংসদীয় গণতন্ত্র, মুক্তবাজার অর্থনীতি সেটা বিএনপি দিয়েছে। গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ দেশকে ফোকলা করে দিয়েছে। সেই বিষয়কে গুরুত্ব না দিয়ে তখনকার হাওয়া ভবনের কথা বলে আয়নাঘরের সঙ্গে তাকে তুলনা করা হয়। হাওয়া ভবন একটা ব্যক্তিগত অফিস ছিল, যা দেশের অর্থনীতি, রাজনীতির কোনো ক্ষতি করেনি। এ নিয়ে একটা প্রজেকশন করার চেষ্টা করা হয়। এটা একটা ষড়যন্ত্র। একটা দলকে হেয় করার জন্য, তার অর্জনকে খাটো করার জন্য। নির্বাচন হোক- তাহলে জনগণই বেছে নেবে কোন দলটা ভালো কোন দলটা ভালো না, কোন নেতা খারাপ, নির্বাচনেই প্রমাণ হবে। কিন্তু চাপিয়ে দেওয়া- এটা করলে ভালো হবে, ওটা করলে ভালো হবে- সেটা নির্বাচনের মাধ্যমেই ঠিক হোক।
মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচনে যে আসবে তাকে গ্রহণ করতে হবে। আমাদের আমলে আমরা এমন কোনো আইন করেছি, যে আইন গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে গেছে? পারবেন না দেখাতে। আওয়ামী লীগের করা সব আইনই গণতন্ত্রের বিপক্ষে গেছে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির তুলনা করলে সেটা গ্রস ইনজাস্টিস হবে। আওয়ামী লীগ দেশকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আমাদের স্বাধীনতার চেতনা, অর্থনীতি, রাজনীতি, মূল্যবোধ সব ধ্বংস করেছে। একজন বিচারপতিকে মানুষ মারছে, আদালতের মধ্যে অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় নেতাদের ডিম ছুড়ছে কারণ মানুষের মধ্যে পুঞ্জিভূত ক্ষোভ। বিএনপি আর আওয়ামী লীগকে এক পাল্লায় মাপলে হবে না। বিএনপি দেশে সবচেয়ে ভালোটা করার চেষ্টা করেছে। আওয়ামী লীগ একদলীয় বাকশাল করেছিল, আমরা বহুদলীয় গণতন্ত্র দিয়েছি। আওয়ামী লীগ সব পত্রপত্রিকা বন্ধ করে দিয়েছিল, আমরা সব চ্যানেল-পত্রিকা চালু করেছি। হাওয়া ভবনে কাউকে আটকে রাখা হয়েছে, কাউকে নির্যাতন করা হয়েছে? একটা প্রমাণ দিন। সুতরাং বিএনপিকে আওয়ামী লীগের সঙ্গে তুলনা করাটা ‘ইনজাস্টিস টু আস’।
শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর প্রশ্নে যা বলল ভারত
শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশ অনুরোধ জানালে ভারত কী জবাব দেবে, এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে। তবে এই প্রশ্নের সরাসরি কোনো উত্তর দেননি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল। তিনি শুধু বলেছেন, এই ধরনের প্রশ্ন অনুমাননির্ভর। আর অনুমাননির্ভর কোনো প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার রীতি নেই।
ভারত থেকে শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে দুটি প্রশ্ন করা হয় রণধীর জয়সওয়ালকে। বাংলাদেশ এমন অনুরোধ জানালে কী করা হবে জানতে চাইলে তিনি ওই কথা বলেন।
কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল হয়ে যাওয়ায় শেখ হাসিনা আইনগতভাবেই ৪৫ দিন ভারতে থাকতে পারবেন। এর মধ্যেই তিন সপ্তাহের বেশি সময় দেশটিতে পার করে ফেলেছেন তিনি।
শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পরদিন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকর নয়াদিল্লিতে পার্লামেন্টে যে কথা বলেছিলেন তার পুনরাবৃত্তি করে জয়সওয়াল আজ আবার বলেন, গত ৫ আগস্ট খুব সংক্ষিপ্ত নোটিশে তিনি ভারতে প্রবেশের অনুমতি দিতে অনুরোধ করেছিলেন। তাকে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে যে ধরনের প্রশ্ন করা হচ্ছে তা কল্পনাপ্রসূত।
বাংলাদেশে ভারতের দ্বিপাক্ষিক উন্নয়ন প্রকল্পের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে জয়সওয়াল বলেন, পরিস্থিতি স্থিতিশীল হলেই বাংলাদেশিদের সব শ্রেণির ভিসা দেওয়ার কাজ আবার শুরু হবে।
বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশে চলমান উন্নয়ন প্রকল্পে যুক্ত ভারতীয়রা তাদের দেশে ফিরে গেছেন বলেও জানান জয়সওয়াল।
তিনি বলেন, যখনই সে দেশের পরিস্থিতি স্থিতিশীল হবে এবং স্বাভাবিকতা ফিরে আসবে, তখন আমরা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে (উন্নয়ন) প্রকল্পগুলো এগিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে আলোচনা করব।
ঢাকার ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টারে হামলার ব্যাপারে তিনি বলেন, বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে তাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে। অস্থিরতা শেষে উন্নয়ন সহযোগিতা আবার শুরু হওয়ার ব্যাপারে আমরা আশাবাদী।
তিনি বলেন, এই মুহূর্তে বাংলাদেশিদের শুধুমাত্র মেডিকেল ভিসার মতো জরুরি ক্ষেত্রে ভিসা দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে অন্যান্য ক্যাটাগরিতে ভিসা দেওয়া আবার শুরু হবে।
ভ্যানে লাশের স্তূপের ভাইরাল ভিডিওটি আশুলিয়ার
ভ্যানে লাশের স্তূপের একটি ভিডিও সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। লোমহর্ষক এ ভিডিও ছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়ে নিহত কয়েকজন ব্যক্তির। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর ঘটনাটি কোথায় ঘটেছে, তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়। পরে ফ্যাক্ট চেক প্রতিষ্ঠান রিউমার স্ক্যান জানায়, ভ্যানে নিথর দেহের স্তূপের ঘটনাটি আশুলিয়া থানা সংলগ্ন এলাকার। তবে, তাদের নাম পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
শুক্রবার (২৯ আগস্ট) রাতে প্রতিষ্ঠানটি বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, অনেকগুলো মরদেহ স্তূপ করে রাখা হয়েছে একটি ভ্যানে। পাশাপাশি আরেকটি মরদেহ ভ্যানে তুলে দিচ্ছে পুলিশ। পরে একটি পোস্টার দিয়ে লাশগুলো ঢেকে ফেলা হয়। এ সময় আরও কয়েকজন পুলিশকে আশপাশে হাঁটাহাঁটি করতেও দেখা যায়। যদিও পুলিশের জ্যাকেট পরে যারা ছিলেন তারা আসলে পুলিশ ছিলেন কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে অনেকের।
রিউমার স্ক্যান জানায়, নিথর দেহের স্তূপের বহুল আলোচিত ভিডিওটি আশুলিয়া থানা সংলগ্ন এলাকার ঘটনা। ৫ আগস্ট বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। এছাড়া ঘটনাস্থলের আশপাশে থাকেন এমন দুইজন দাবি করেন, ভিডিওর দেয়ালে যার পোস্টার দেখা যায় তিনি আশুলিয়ার ধামসোনা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার পদপ্রার্থী আবুল হোসেন ভূঁইয়া।
জানা গেছে, দেয়ালের এই পোস্টার এখন আর নেই। ৫ অগাস্টের পরপরই সব দেয়ালে নতুন রং করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গত ১৫ জুলাই রাজধানী ঢাকাসহ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর দফায় দফায় হামলা চালায় ছাত্রলীগ। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দমাতে গুলি চালায় পুলিশ।
পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক দফা কর্মসূচি ঘিরে গত ৪ আগস্ট ঢাকাসহ সারাদেশে সরকার সমর্থিত নেতাকর্মী ও পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে কয়েক শতাধিক নিহতের খবর পাওয়া যায়। এ অবস্থায় গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে দেশ ত্যাগ করে ভারত চলে যান। এমপি মন্ত্রীদের কেউ বিদেশ পালিয়ে গেছেন, কেউ দেশের আত্মগোপনে রয়েছেন আবার কেউ গ্রেপ্তার হয়ে রিমান্ডে আছেন।