দুর্যোগে আগাম সতর্কতা বিষয়ে রেড ক্রিসেন্টের কর্মশালা
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অংশীজনদের একত্রিত করার মধ্য দিয়ে আগাম সতর্কতা বিষয়ে গঠনমূলক আলোচনা ও সহযোগিতা বাড়াতে দুইদিনের কর্মশালার আয়োজন করেছে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (বিডিআরসিএস)।
বুধবার (২ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কর্মশালার উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. রফিকুল ইসলাম।
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন দুর্যোগের ফলে ভয়াবহ ক্ষতির শিকার হচ্ছে বিভিন্ন দেশ। এমন বাস্তবতায় ২০২২ সালে অনুষ্ঠিত ২৭তম জলবায়ু সম্মেলনে স্বাক্ষরকারী দেশগুলো দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে ও প্রস্তুতি গ্রহণে ২০২৭ সালের মধ্যে বিশ্বের সকল দেশকে আগাম সতর্কতার আওতায় আনতে 'আর্লি ওয়ার্নিং ফর অল' উদ্যোগ গ্রহণে ঐক্যমতে পৌঁছায়। দুর্যোগ ঝুঁকি জ্ঞান, পূর্বাভাস পর্যবেক্ষণ, সতর্কবার্তা প্রচার ও যোগাযোগ, এবং প্রস্তুতি ও সাড়াদানের মতো ৪টি স্তম্ভের মাধ্যমে আগাম সতর্কতায় কাজ করছে বাংলাদেশসহ ৩০টি দেশ। এরই ধারাবাহিকতায় ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অফ রেড ক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিজ (আইএফআরসি) এর সহযোগিতায় ২০২৩ সাল থেকে 'আর্লি ওয়ার্নিং ফর অল' উদ্যোগের ৪র্থ স্তম্ভ (প্রস্তুতি এবং সাড়াদান) বাস্তবায়নে কাজ করছে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি। বাংলাদেশে 'আর্লি ওয়ার্নিং ফর অল' উদ্যোগের বর্তমান সামগ্রিক অবস্থা চিহ্নিত করে একটি পূর্ণাঙ্গ কর্মপরিকল্পনা প্রস্তুত করতেই দুইদিনের এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিডিআরসিএস’র চেয়ারম্যান বলেন, ‘দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বের রোল মডেল। সরকারের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কমিউনিটি স্বেচ্ছাসেবকদের সহায়তায় বিডিআরসিএস বন্যা, ঘূর্ণিঝড় এবং তাপপ্রবাহের মতো বিভিন্ন দুর্যোগে প্রত্যন্ত অঞ্চলে আগাম সতর্কতা প্রচার করছে। তবে দিন দিন দুর্যোগের ধরণ পাল্টাচ্ছে। আগাম সতর্কতায় তাই নদী ভাঙ্গনসহ আকস্মিক দুর্যোগের বিষয়গুলো কিভাবে অন্তর্ভূক্ত করা যায় তা নিয়ে আমাদের কার্যক্রর উদ্যোগ গ্রহণ করার এখনই সময়।’
কর্মশালায় সভাপতির বক্তব্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামরুল হাসান বলেন, ‘জাতিসংঘের মহাসচিব কর্তৃক গৃহীত 'আর্লি ওয়ার্নিং ফর অল' বৈশ্বিক উদ্যোগটির মূল লক্ষ্য আগাম সতর্কতা ব্যবস্থায় সকলের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা। এটি শুধুমাত্র তথ্য প্রাপ্তির জন্য নয়, সেই তথ্যকে দ্রুত ও সমন্বিত উপায়ে জীবন রক্ষায় কাজে লাগাতে পারার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মন্ত্রণালয় থেকে ইতিমধ্যেই একটি বিস্তৃত রোডম্যাপ তৈরির জন্য পদক্ষেপ শুরু হয়েছে, এই রোডম্যাপটি পিলার-৪ এর অধীনে কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য একটি গাইড ফ্রেমওয়ার্ক হিসেবে কাজ করবে। যা আমাদের প্রস্তুতি এবং প্রতিক্রিয়ার পদ্ধতিগুলোকে সু-সমন্বিত এবং শক্তিশালী করতে তা নিশ্চিত করবে।”
আইএফআরসি’র সহযোগিতায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং বিডিআরসিএস কর্তৃক আয়োজিত কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিডিআরসিএস’র মহাসচিব ড. কবীর মো. আশরাফ আলম এনডিসি ও আইএফআরসির হেড অব ডেলিগেশন আলবার্তো বোকানেগ্রা। কর্মশালায় আরো উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কে এম আব্দুল ওয়াদুদ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রেজওয়ানুর রহমান, বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ খলিলুর রহমান, সিপিপির পরিচালক আহমাদুল হক, বিডিআরসিএসের ডিসিআরএম বিভাগের পরিচালক ইমাম জাফর সিকদারসহ বিভিন্ন সংস্থার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
আরটিভি/ ডিসিএনই
মন্তব্য করুন