যেসব শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে প্রশিক্ষণরত ২৫২ এসআইকে অব্যাহতি
রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে প্রশিক্ষণরত ২৫২ জন উপ-পরিদর্শককে (এসআই)। গত ১৭ অক্টোবর তাদের ছুটিতে পাঠানো হয়েছিল।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) সকালে তাদের অব্যাহতির খবর প্রকাশের পর থেকে বেশ কৌতুহলের সৃষ্টি হয় জনমনে। সাংবাদিকরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর কাছে প্রশ্ন রাখেন, ওই ক্যাডেটদের অব্যাহতি দেওয়ার পেছনে রাজনৈতিক কিংবা অন্য কোনও কারণ আছে কিনা। জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাও স্পষ্টভাবে সাংবাদিকদের জানান, এর পেছনে কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই, বরং একাডেমির শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়েই তাদের শাস্তি হয়েছে। তবে, ওই ২৫২ ক্যাডেট কী ধরনের শৃঙ্খলাভঙ্গের সঙ্গে জড়িত তাৎক্ষণিকভাবে তা বলতে পারেননি লে. জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেছে, এর সঠিক উত্তর পুলিশ একাডেমিই দিতে পারবে।
এবার সে উত্তর মিলেছে শাস্তিপ্রাপ্ত ওই ২৫২ জন প্রশিক্ষণার্থীকে দেওয়া অব্যাহতির চিঠি থেকে। ওই চিঠি থেকে জানা যায়, গত ১ অক্টোবর ৪০তম বিসিএস (পুলিশ) প্রবেশনারস ব্যাচ–২০২৩ এর সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুশীলন প্যারেডের বিরতিতে সরবরাহকৃত সকালের নাশতা নিয়ে হইচই করে প্যারেড মাঠের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির সঙ্গে জড়িত ছিলেন ওই ২৫২ ক্যাডেট।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি প্যারেড মাঠে ১ অক্টোবর সকাল ৭টা ২৫ মিনিট থেকে ৪০তম বিসিএস (পুলিশ) প্রবেশনারস ব্যাচ–২০২৩ এর সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুশীলন প্যারেড কার্যক্রম চলমান ছিল। এ সময়ে বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি সারদা, রাজশাহী কর্তৃক পূর্ব নির্ধারিত মেন্যু অনুযায়ী প্যারেডে অংশগ্রহণকারী সব প্রশিক্ষণার্থীর প্যারেড বিরতিতে সকালের নাশতা পরিবেশন করা হয়।
কিন্তু আপনি উক্ত সরবরাহকৃত নাশতা না খেয়ে হইচই করে মাঠের মধ্যে চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন। আপনি অন্যান্য প্রশিক্ষণরত ক্যাডেট এসআইদের পরস্পর সংগঠিত করে একাডেমি কর্তৃপক্ষকে হেয়প্রতিপন্ন করে চরম বিশৃঙ্খলা ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করতে থাকেন।
এছাড়া আপনি অন্যদের সঙ্গে হইচই করতে করতে নিজের খেয়াল-খুশিমতো প্রশিক্ষণ মাঠ থেকে বের হয়ে নিজ ব্যারাকে চলে যান। একজন প্রশিক্ষণরত ক্যাডেট এসআই হিসেবে এরূপ আচরণ এবং বিনা অনুমতিতে প্যারেড মাঠ থেকে বের হয়ে নিজ ব্যারাকে চলে যাওয়া সম্পূর্ণভাবে শৃঙ্খলাপরিপন্থী। আপনার এরূপ আচরণ মাঠের সার্বিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রমকে চরমভাবে ব্যহত করেছে এবং অন্য প্রশিক্ষণার্থীদের শৃঙ্খলা ভঙ্গে উৎসাহিত করেছে মর্মে আপনার বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে পুলিশ পরিদর্শক মহসিন আলী পুলিশ একাডেমির অধ্যক্ষ (অতিরিক্ত আইজিপি) বরাবর লিখিত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন।’
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ‘ওই অভিযোগের কারণে একাডেমির অধ্যক্ষের পক্ষে পুলিশ সুপার (অ্যাডমিন অ্যান্ড লজিস্টিকস) তিনদিনের মধ্যে কৈফিয়তের জবাব দাখিল করার জন্য নির্দেশনা দেন। আপনি নির্ধারিত তিনদিন সময়ের মধ্যে কৈফিয়তের জবাব দাখিল করেন। আপনার দাখিলকৃত কৈফিয়তের জবাব পর্যালোচনান্তে সন্তোষজনক নয় মর্মে প্রতীয়মান হয়। আপনার উপরিউক্ত শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ড বাংলাদেশ পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ ও দায়িত্বশীল পদ হিসেবে বিবেচিত সাব ইন্সপেক্টর পদে কাজ করার পথে বড় ধরনের অন্তরায় ও অযোগ্যতার শামিল।’
আরটিভি/এসএইচএম/এআর
মন্তব্য করুন