এ সপ্তাহেই রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ ও ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের আল্টিমেটাম
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ ও ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বঙ্গভবনের সামনে বিক্ষোভ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। কর্মসূচি থেকে এ সপ্তাহের মধ্যেই রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ ও ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার আল্টিমেটাম দিয়েছেন সমন্বয়করা।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) বিকেলে বঙ্গভবনের সামনে থেকে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।
আন্দোলনকারীরা বলেন, বর্তমান রাষ্ট্রপতি আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার দোসর। আমরা চাই না তিনি রাষ্ট্রপতি পদে থাকুন। তাই আমরা তাকে এ সপ্তাহের আল্টিমেটাম দিয়েছি তিনি যেন রাষ্ট্রপতির পথ থেকে পদত্যাগ করেন। তিনি যদি এ সপ্তাহের মধ্যে পদত্যাগ না করেন তাহলে আমরা জানি তাকে কীভাবে পথ থেকে সরাতে হয়। এ আল্টিমেটামে কাজ না হলে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলব। একই সঙ্গে তারা ছাত্রলীগ নিষিদ্ধেরও দাবি জানান।
এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, রাষ্ট্রপতিকে এই সপ্তাহের মধ্যেই পদত্যাগ করতে হবে। ছাত্রলীগ-যুবলীগ, মুজিববাদী মিডিয়া-সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সকল সংগঠনকে নিষিদ্ধ করতে হবে।
আরেক সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, কার কথা শুনে ও কার চক্রান্তে রাষ্ট্রপতি উচ্চারণ করছেন যে, তার কাছে পদত্যাগপত্র নাই। আমরা ফ্যাসিস্ট চুপ্পুসহ সব ফ্যাসিস্ট দোসরদের বলে দিতে চাই, আমরা যদি বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট ও খুনিদের কোনো উৎপাত লক্ষ্য করি ছাত্র-জনতা ৫ আগস্টের মতো ঐক্যবদ্ধভাবে তা প্রতিহত করবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীদেরও দেশব্যাপী ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, জীবন দিয়ে হলেও ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগ নামধারী ফ্যাসিস্টদের প্রতিহত করতে আমরা আমৃত্যু লড়াই করবো।
সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বৃহস্পতিবারের মধ্যে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার আল্টিমেটাম দিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, যে ছাত্রলীগের হাতে মানুষের মৃত্যু হয়েছে তাদের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই।
রাষ্ট্রপতিকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনার সময় শেষ হয়ে গেছে। ছাত্র-জনতা আর আপনাকে রাষ্ট্রপতি পদে দেখতে চায় না। হয় আপনি পদত্যাগ করুন না হলে ছাত্র-জনতা বঙ্গভবন ঘেরাও করে হাসিনার মতো পালাতে বাধ্য করাবে। ছাত্র-জনতার এই স্পিরিট নতুন বাংলাদেশ গঠনের আগ পর্যন্ত থাকবে। ৭২ এর ফ্যাসিবাদী সংবিধান বাতিল করে সংবিধান নতুন সংবিধান প্রণয়নের আগ পর্যন্ত আমরা রাজপথে থাকব।
প্রসঙ্গত, ছাত্র-জনতার তোপের মুখে গত ৫ আগস্ট দেশত্যাগ করেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার দেশত্যাগের পর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন এবং আমি তা গ্রহণ করেছি।
সম্প্রতি একটি পত্রিকার সম্পাদকের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রপতি জানান, তিনি শুনেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন, কিন্তু তার কাছে এ সংক্রান্ত কোনো দালিলিক প্রমাণ বা নথিপত্র নেই। রাষ্ট্রপতি বলেন, (পদত্যাগপত্র সংগ্রহ করার) বহু চেষ্টা করেও আমি ব্যর্থ হয়েছি। তিনি হয়তো সময় পাননি।
এরপর নতুন করে রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন সরকার পতনে নেতৃত্বদানকারীরা।
আরটিভি/একে/ডিসিএনই
মন্তব্য করুন