সাগর-রুনি হত্যার বিচারের বাধা কেটে গেছে: স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ. এফ. হাসান আরিফ জানিয়েছেন, নৃশংস হত্যার শিকার সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচারের সকল বাধা কেটে গেছে। তিনি বলেন, আমার প্রত্যাশা সাগর-রুনি হত্যার বিচার এবার আমরা পাবো।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) মিলনায়তনে বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড ও ক্র্যাব নাইট ২০২৪ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
উপদেষ্টা এ. এফ. হাসান আরিফ বলেন, দ্রুতই আমরা এই ঘটনায় জড়িত ঘাতকদের শনাক্ত ও বিচার দেখতে পারবো।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে এ. এফ. হাসান আরিফ বলেন, সাগর-রুনি হত্যার বিচারে যে বাধা ছিল, আমার বিশ্বাস সেই বাধা দূর হয়ে গেছে। আপনারা যদি সোচ্চার হন আমরা সাগর-রুনি হত্যার বিচার পাবো। যেমন বিগত ১৭ বছরে যে নির্যাতন ও অপরাধ হয়েছে সেই অপরাধীদের বিচারও আমরা দেখতে পারবো। আপনাদের ক্যামেরা, লেখনীর মাধ্যমে সকল নির্যাতনের কথা উঠে আসবে।
তিনি বলেন, আগে গণঅভ্যুত্থান ও বিপ্লব হত ঢাকা কেন্দ্র। কিন্তু এবারের গণঅভ্যুত্থানে প্রকৃত অর্থে গণজোয়ার। শুধু ঢাকা শহর নয় মাঠে-ঘাটে এবং গ্রাম অঞ্চলেও গণজোয়ার এসেছে। অনেকে মনে করেন গণঅভ্যুত্থানের বিপ্লব ফুরিয়ে গেলো নাতো। আমি বলতে চাই, বিপ্লব এখনো ফুরিয়ে যায়নি। মানুষ সংস্কার চায়, সেগুলো চলতে থাকবে।
তিনি আরও বলেন, গত ২৩ জুলাই আপনাদের এই অনুষ্ঠানটি হওয়ার কথা ছিলো বলে শুনলাম। কিন্তু আজকে যে কথা বলতে পারবেন, ২৩ জুলাই বলতে পারতেন না। কারণ টেলিভিশন পর্দায় ও আপনাদের মুখে এক অদৃশ্য কসটেপ দেওয়া থাকতো। এখন আর সেই কসটেপ নেই।
উপদেষ্টা বলেন, এবারের গণঅভ্যুত্থানের বিশেষত হচ্ছে, গ্রামেও গণজোয়ার এসেছে। এর ফলস্বরূপ ইউনিয়ন পর্যায়ের মেম্বাররাও পলাতক। কারণ তাদের নির্যাতনের কারণে গ্রামের মানুষ অতিষ্ঠ ছিলো। এই মানুষদের সামনে দাঁড়ানোর সাহস তাদের নেই। স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বলেন, ১৬ বছরের নির্যাতন অত্যাচারের পর যখন দরজা খুলে যায়, গণজোয়ার আসে তখন অনেক দুর্ঘটনা ঘটে। তবে সেরকম কিছু ঘটেনি, আল্লাহর রহমত।
অনুষ্ঠানে ডিএমপি কমিশনার মাইনুল হাসান বলেন, ৪১ বছরের পথচলায় ক্র্যাবের পরিধি অনেক বেড়েছে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভিনন্দন।
তিনি বলেন, সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে ক্র্যাব সদস্যদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আমরা কাজ করছি। অনেকসময় অপরাধ দমন করতে গিয়ে ভুল-বোঝাবুঝির কারণে পুলিশ সদস্যদের সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। আমরা প্রত্যাশা করবো, সাংবাদিকরা বস্তুনিষ্ঠ খবর প্রকাশ করবে। আমরা সবসময় পারস্পরিক আস্থা ও সহযোগিতার মাধ্যমে বন্ধন দৃঢ় করতে চাই।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলওয়াত করেন ক্র্যাব সদস্য আবু হেনা রাসেল।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ক্র্যাব সভাপতি কামরুজ্জামান খান ও অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ক্র্যাব সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডিএমপি কমিশনার মাইনুল ও র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌসসহ আরও অনেকে।
এর আগে, কেক কেটে ক্র্যাবের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করা হয়। অতিথিদের বক্তব্য শেষে ‘ক্র্যাব বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড ২০২৪’ বিজয়ী ৩ সাংবাদিককে ক্রেস্ট তুলে দেন প্রধান অতিথি। অ্যাওয়ার্ড বিজয়ীরা হলেন- প্রথম আলোর মাহমুদুল হাসান নয়ন, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের নাজমুল সাঈদ ও ঢাকা পোস্টের জসীম উদ্দীন। ৩টি পৃথক ক্যাটাগরিতে তারা বিজয়ী হন।
আরটিভি/এমএ/এআর
মন্তব্য করুন